বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:১২ পূর্বাহ্ন

আমার কৈফিয়ত, স্টিফেন হকিং-জাহিদ হোসেন

আমার কৈফিয়ত, স্টিফেন হকিং-জাহিদ হোসেন

খুবই সাধারণ মানের হলুদাভ এক নক্ষত্র সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তনশীল ক্ষুদ্র এক গ্রহ পৃথিবীতে বসবাসকারী বানর থেকে উদীর্ণ একটি উন্নততর প্রজাতি মানুষ আমরা। কিন্তু আমরা মহাবিশ্ব বুঝতে পারি। এই নৈপুণ্য আমাদের খুবই বিশেষ করে তোলে। জীবন একটি মজার ব্যাপার, নইলে তা দুঃখজনক হতো। পরিবর্তনশীল বাস্তব দুনিয়ার সাথে খাপ খাইয়ে চলার সক্ষমতাই বুদ্ধিমত্তা।
আমাদের অস্তিত্ব মহাবিশ্ব নিঃস্পৃহ (indifferent) নয় বরং এর উপর নির্ভরশীল। আমার লক্ষ্য সহজ। তাহলো মহাবিশ্ব সম্পর্কে সবিস্তার উপলব্ধি — কীজন্য মহাবিশ্ব এমন হলো আর কেন বিরাজ করা উচিৎ। ভবিষ্যতের মতো অতীতও অনির্দিষ্ট এবং সম্ভাবনার বিস্তার মাত্র। অজ্ঞতা নয়, বিভ্রান্তিই জ্ঞানের সবচেয়ে বড় শত্রু।
আমাদের লোভ ও অজ্ঞতার ফলস্বরূপ ধ্বংসাত্মক ঝুঁকিতে আমরা বাস করি। নিজেদের হাতে গড়া সমস্যা আমরা ভ্রুক্ষেপ করি না। ফলে জনবহুল ছোট্ট এই গ্রহে অবিশ্বাস্যরূপে দূষণ বেড়েই চলছে এবং এখানে আমরা বাস করছি।
একটি দৈত্যাকার মস্তিষ্কস্থিত নিউরন সমতুল্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে একে অপরের সাথে আজকাল আমরা সবাই সংযুক্ত। আমি (হকিং) নড়াচড়া করতে পারি না এবং আমাকে কম্পিউটারের মাধ্যমে কথা বলতে হয়, তথাপি আমি মানসিকভাবে স্বাধীন। সর্বদা রাগ বা অভিযোগ করে লাভ নাই। কেননা কারও ব্যক্তিগত বিষয়দি নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় অন্যদের নেই। বিজ্ঞান শুধুমাত্র যুক্তিনির্ভর বিষয় নয় বরং একটি রোম্যান্স এবং আবেগও বটে।
আমার বিশ্বাসের সরলতম ব্যাখ্যা হলো, প্রচলিত অর্থে এমন কোনও ঈশ্বর নেই, যে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছে অথবা তেমন কেউ আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে। “পূর্ব-কল্পিত” আমাদের এই ধারণা অনুসারে মহাবিশ্ব চলে না। তবু মহাবিশ্বের প্রতিটি ঘটনা আমাদের প্রতিনিয়ত অবাক করে।
জীবনের অর্থ কেবলই অস্তিত্ব নয় বরং চেষ্টা করা, আনুন্ধান চালান, খুঁজে দেখা ও ভালবাসা। আমাদের আসল সমস্যার প্রকৃতি দেখা দরকার। সমাধান খুঁজে বের করা দরকার যে, কীভাবে বুদ্ধিমান প্রাণ এমন এক বাস্তবতা থেকে উন্মেষ লাভ করেছে, যার প্রবোধ আমাদের নাই।
“সবকিছুই পূর্বনির্ধারিত এবং এসব পরিবর্তন করার সাধ্য আমাদের নাই” আমি (হকিং) লোকদের দাবী করতে দেখি। পার না হয়েই তারা পথ দেখে ফেলে মনে হয়। মূলত যারা নিজস্ব আইকিউ নিয়ে গর্ব করে তাদের হার নিশ্চিত। বাস্তবতার কোন অনন্য প্রতিচ্ছবি মেলানো যায় না। আসলে মহাবিশ্ব একটি এনট্রপি তৈরির কারখানা ছাড়া আরকিছু নয়!

শেয়ার করুন ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge