শুক্রবার, ০৯ Jun ২০২৩, ০৫:৫৮ অপরাহ্ন

কবিতা#ফেলে আসা পথ-ধ্রুবক রাজ

কবিতা#ফেলে আসা পথ-ধ্রুবক রাজ

বীথি কুইনের গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
জানালো সানু। গ্রন্থমেলায় ঠিক বিকেল চারটায়,
আমিতো অপ্রস্তুত।
কি করে সম্ভব?তখন প্রায় চারটা ছুঁই ছুঁই
গাড়ীতে ওঠা বারণ ;ডাক্তারী নিষেধ।
তারপর শুরু ফোনের পর ফোন
একবার সানু তো আরেকবার কুইন।

নিজেকে সামলিয়ে হন্তদন্ত করে চললাম যতখানি পারা যায়,
যখন পৌঁছলাম তখন পাঁচটা ছুঁই ছুঁই,

তোরণে পা দিতেই চোখাচোখি
চোখ নামিয়ে এড়িয়ে যেতেই;
পিছন থেকে চাদর ধরে টানছে

ছলছল চোখ, কান্না ভেঁজা অর্ধভাঙ্গা কন্ঠ,

-সিংহেরা কখনো পালায় না?
-কই পালাচ্ছি নাতো?
-তাহলে?
-মোড়ক উন্মোচন আছে ;
-তো?
-যেতে হবে।
-যাবে,
-এড়িয়ে যাচ্ছো কেন?
-কি লাভ?
-এখন বুঝি সবকিছুতেই লাভ খোঁজো?
-উপায় কি?
-তাই?
-হুম।
-ভালো!
-আমাদের মত নিম্নবৃত্তরা লাভ না খুঁজলেও তোমরা তাই ভাবো।

-খুব স্বার্থপর হয়ে গেছো?

-যখন কেউ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় তখন আর না হয়ে উপায় কি?

-ওসব ছাড়ো।
-কেমন আছ?
-বেশ আছি
-এতদিনে একবারও মনে পড়েনি?
-পড়েছে, পাত্তা দেইনি
-কেন?
-চৌদ্দ বছর আগে যে আমাকে ফেলে যে চলে গেছে তাকে মনে করিয়ে কি হবে?
-পাথর হয়ে গেছো?
-হুম।
-পাথরে ফুল ফোটানো যায় না?
-কি করে সম্ভব?
-কেনো?

-ফুল থেকে আমার দূরত্ব চৌদ্দ বছরের। মরা গাছে ফোটা ফুলের ওজন মরা গাছ নিতে পারে না।মৃত্যু একবারই ভালো।বৃথা চেষ্টায় লাভ নেই।

-যদি পারে?
-জীবনের জটিল সিদ্ধান্তে ইমোশন দেখাতে নেই।

-কিসের ইমোশন?
-কেন মনে নেই?আজ থেকে বিশ বছর আগে পি এইচ ডি ছেড়েছি,
মনবুশো ছেড়েছি, রাজী ছিলে না বলে।ফলাফলটা কি হয়েছিল? শয্যাশায়ী মা, তুমি ডাকলে, মাকে উপেক্ষা করে তোমার দেয়া ঠিকানা মত গেলাম,সন্ধ্যা গড়িয়ে গেল, সম্পূর্ন একা, নতুন জায়গা, গা ছম ছম করছে, অন্ধকার নামছে।হঠাৎ হাফ প্যান্ট পার্টি সব কেড়ে নিলো।অথচ তোমার ফোন সুইচড অফ।ফিরে এলাম, এসে দেখি তোমার মতই আমার মাও নেই।অনেক পরে যখন দেখা হলো তখন তোমার সিঁথির আলপথে সিঁদুর।
ওসব রাখো,
মা ডাকছে, আমি চলি।

শেয়ার করুন ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge