পাতা প্রকাশ ডেস্ক >>
বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২১তম জন্মবার্ষিকী আজ।
তিনি একই সঙ্গে ধারণ করেছেন প্রেম ও দ্রোহ। প্রচার করেছেন সাম্য, মানবতা ও অসাম্প্রদায়িকতার বাণী। কবিতার পঙক্তিমালায় দ্রোহী চেতনা ছড়িয়ে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন প্রশাসনযন্ত্র। ঔপনিবেশিক শাসকদের দ্বারা নিষিদ্ধ হয়েছেন বারবার। তিনি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ, মা জাহেদা খাতুন। দরিদ্র পরিবারে জন্মের পর দুঃখ-দারিদ্র্য ছিল তার নিত্যসঙ্গী। তার ডাকনাম ছিল দুখু মিয়া।
কাজী নজরুল ইসলাম রবীন্দ্র-উত্তর বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার পথিকৃৎ। তিনি কবিতা, গান ও উপন্যাসে সাম্প্রদায়িকতা, সামন্তবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।
অনন্ত প্রেরণার উৎস নজরুল কোমল আর কঠিনে মেশানো এক অপূর্ব ব্যক্তিত্ব। প্রেমে পূর্ণ, বেদনায় নীল। আবার প্রতিবাদে ঊর্মিমাতাল।
নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, ‘বাংলা সাহিত্য-সংগীতে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান অনস্বীকার্য। তার লেখায় অন্যায়, অসত্য, নির্যাতন, পরাধীনতার গ্লানি ও শৃঙ্খলামোচনের দীপ্ত উচ্চারণ যুগ যুগ ধরে মানুষকে সাহসী হওয়ার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কবি নজরুল ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার। যেখানেই অন্যায়-অবিচার, সেখানেই কবির কলম হয়ে উঠেছে খাপছাড়া তলোয়ার।’
নজরুল যে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন, তা বাস্তবায়নে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াস অব্যাহত রাখার আহ্বন জানান রাষ্ট্রপতি।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘অসামান্য ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কবি নজরুলের আজীবন সাধনা ছিল সমাজের শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি এবং মানুষের সামাজিক মর্যাদার স্বীকৃতি অর্জন। তার সাহিত্যকর্মে উচ্চারিত হয়েছে পরাধীনতা, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের বাণী।’
তিনি আরও বলেন, ‘নজরুলের ক্ষুরধার লেখনীর যেমন ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল, তেমনি তার বাণী ও সুরের অমিয় ঝর্ণাধারা সিঞ্চিত করেছে বাঙালির হৃদয়কে।’
কর্মসূচি : নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষ্যে জাতীয় দৈনিকগুলো প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র। সরকারি-বেসরকারি চ্যানেল ও রেডিওস্টেশনগুলো প্রচার করছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। করোনা মহামারির কারণে এ বছরও উন্মুক্ত স্থানে কোনো আয়োজন নেই। সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আজ সকাল সাড়ে ৭টায় নজরুলের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ১ ঘণ্টার একটি ধারণকৃত অনুষ্ঠান প্রচার করা হবে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে।
Leave a Reply