শিশু বয়সের চঞ্চল দুষ্টু, নিষ্পাপ মেয়েটি আমি
জীবনে অনেক অপরাধ করেছি।
তবে, সব কিছু থেকে আমি পার পেয়ে যেতাম
শুধুমাত্র নির্দোষ বয়সের কারণে।
দুষ্টুমির ছলে একদিন বিছানায় লাফাতে গিয়ে,
বাবার মুখের উপর পড়লাম
তাঁর চোখের চশমাটি ভেঙে গেল
একটি কাচের টুকরো পড়ে গেল তাঁর চোখে
সেই সময় থেকে বাবার কোনও দৃষ্টিশক্তি ছিল না।
তবে, আমি সেদিন পার পেয়ে গেলাম
আমার নির্দোষ বয়সের কারণে।
তখন আমার বয়স ছিল চার।
একবার আমি মায়ের দামি কাপড়গুলো চুরি করেছিলাম
সেগুলি এক বৃদ্ধ অসহায় মহিলাকে দিয়েছিলাম
কিন্তু মা কিছুই বললেন না সেদিন;
আমার নিষ্পাপ বয়সের কারণে!
তখন আমার বয়স ছিল সাত।
আরেকবার, আমি মায়ের উপর রেগে গিয়ে
দু’দিন ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখেছিলাম।
দুইদিন কিছুই খাইনি
মা অনেক কেঁদেছিলেন, কিন্তু আমি দরজা খুলিনি
খাবার হাতে মা বার বার,
উঠোনের জ্বানালা দিয়ে উকি দিচ্ছিলেন
সেদিনের অসহায় মুখটি আমি বুঝতে পারিনি
চঞ্চল দুষ্টু, নির্দোষ ছিলাম বলে।
রাগ করার কারণটা ছিল,
স্কুল থেকে ফিরার পর মা আমাকে দেরিতে খাবার দিয়েছিলেন।
সেদিন কী ভয়াবহ কাজটাই না করেছিলাম
অথচ আমি এটি থেকেও পার পেয়েছিলাম
আমার নির্দোষ বয়সের কারণে
তখন আমার বয়স দশ।
আজ, তাদের কেউই বেঁচে নেই।
আমার বাবা-মাকে কখনো দুঃখিত বলা হয়নি
নির্দোষ বয়সে সকল প্রকার অন্যায় আমি করেছি;
এবং তারা যত্ন সহকারে সেগুলো লুকিয়েছিলেন।
মূলত, আমি সেদিন নির্দোষ ছিলাম না;
আমি অপরাধী ছিলাম।
কিন্তু ক্ষমা চাওনা হয়নি কোনদিন।
মৃত কারো কাছে কি ক্ষমা চাওয়া যায়?
আমার জানা নেই।
Leave a Reply