রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন

ফাঁস-রাজকুমার শেখ

ফাঁস-রাজকুমার শেখ

খবাই আজ খুব ভোরে উঠে নদীতে জাল ফেলতে গেছে। ওর চিরসঙ্গী মিল্লাত দাঁড়ে বসে ওর পোক্ত হাতে সব সামলাচ্ছে। এবারে বর্ষা টা বেশ ভালই। নদীর স্রোতে নৌকো দুলছে। খবাই জাল ফেলতে ফেলতে যাচ্ছে। আর একটু পরেই রুপোর মতো মাছ ফাঁসে পড়তে থাকবে। খবাই বড় বড় চোখ করে একটার পর একটা মাছ নৌকার মধ্যে ছাড়িয়ে রাখবে। এই রুপোর মতো জলজ শস্যই তাদের জীবন চালিয়ে দেয়।
যেবার বর্ষা হয় না তখন জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়ে। শুধুই কি তাই! ওর বড় ছেলে ব্যধিতে ভুগছে। তাই দিনরাত এক করে সে নদীতে মাছ ধরতে যায়। রোজগার তাকে করতেই হবে। ডাক্তার বাবু বলেছেন, টাকা ছাড়া ওকে বাঁচাবে কি ভাবে? অনেক খরচা। খবাই এর চোখের ঘুম চলে যায়।
খবাই জাল ফেলা শেষ করে একটা বিড়ি ধরায়। সুখ টান দিয়ে একটু আমেজ করে বসে। উত্তর আকাশে মেঘ করেছে। বৃষ্টি নামবে। মিল্লাত গুনগুন করে গান ধরেছে। সুরটা কেমন ব্যথা ব্যথা জড়ানো। খবাই বিড়িতে টান দিতে ভুলে যায়। ছেলেটার মুখটা মনে পড়ে। বড়ই মায়াবি মুখ। রোগে কেমম হয়ে গেছে। ছেলেটাকে হয়তো বাঁচাতে পারবেনা সে। ওর বুকের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। এমন সময় হঠাৎ জালে টান লাগে। নৌকো দুলে ওঠে।ওর চমক ভেঙে যায়।মিল্লাত চিৎকার করে, খবাই ভাই,দেখো বড় মাছ বেঁধেছে জাল।
খবাই জাল টানতে থাকে। দেখছে একটা বড় মাছ জালে আটকে গেছে। বাড়ই ছটফট করছে। খবাই সাবটে ধরে তুলে নৌকায়। খবাই চেপে ধরে। ওর হঠাৎ মনে হয় যেন তার ছেলের মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। ওর মুঠো আলগা হয়ে আসে।পরম যত্নে হাত বুলিয়ে দেয় যেন তার সন্তান।

শেয়ার করুন ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge