বই আলোচনা : ‘৭১ এর উত্তাল মার্চ : রংপুরের দিনগুলো
ড.এস,এ,তালুকদার
বহু গ্রন্থের প্রণেতা লেখক রানা মাসুদ রংপুরের একজন কৃতি সন্তান। কবিতা,উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনী, ইতিহাস সব শাখাতেই যার দৃপ্ত পদচারণা। ছিলেন পত্রিকা সম্পাদক। একজন ভালো সংগঠকও বটে। অত্যন্ত পরিশ্রমী নম্র ভদ্র এ মানুষটি তাঁর জন্মভূমি রংপুরকে ভালোবেসে যেমন প্রণয়ন করেছেন রংপুরের বিখ্যাত মানুষদের কে স্মরণে রাখার এক মতো অনন্য কাজ ” আলোর দীপ” । তেমনি মুক্তিযুদ্ধে রংপুরের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মসহ দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে লিখেছেন “‘৭১ এর উত্তাল মার্চঃ রংপুরের দিনগুলো”। রানা মাসুদ ইতিহাসকে অক্ষত রাখতে তার পিছু পিছু হেঁটেছেন কিন্তু পিছন থেকে ডাক দেননি।যেখানে যা ছিলো তাই সাজিয়েছেন। এজন্য তাকে পরিশ্রম করতে হয়েছে। প্রচুর সময় ব্যয় করতে হয়েছে। ঠিক সে কারণে একটি সফল সমাপ্তি হিসাবে ‘৭১ এর উত্তাল মার্চঃ রংপুরের দিনগুলো” মতো একটি মূল্যবান পুস্তক আমরা হাতে পেয়েছি। এজন্য লেখককে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং তাঁর শারিরীক সুস্হ্যতা কামনা করছি।
পুস্তকের নাম : ‘৭১ এর উত্তাল মার্চ : রংপুরের দিনগুলো
লেখক : রানা মাসুদ
প্রকাশক : মাসুদ রানা সাকিল
আইডিয়া প্রকাশন, রংপুর।
প্রকাশকাল : মার্চ ২০২১
মূল্য : ৩০০/-
ইতিহাস আমাদের অতীতকে তুলে ধরে। ইতিহাসের ভুল শুদ্ধ আমাদেরকে শিক্ষা দেয়। দেশ ও জাতির জন্য ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। একজন ইতিহাস সচেতন মানুষ ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ইতিহাস রচনার পদ্ধতি কি হবে সেটি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোন গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখতে হলে অবশ্যই তৃণমূলকে গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা মুক্তিযুদ্ধের অনন্য স্রষ্টা কৃষক- সন্তান ও ব্রাত্যজন।
সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে যে বীরত্ব সাহসিকতা দেখিয়েছেন জীবনবাজি রেখেছেন। মাঠ পর্যায়ের বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধান ছাড়া সেটি তুলে ধরা সম্ভব নয়।মুক্তিযুদ্ধের জন্য সেনাবাহিনীর লোক ছাড়া সাধারণ মানুষ বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি না পেলেও মুক্তিযুদ্ধ যে জনযুদ্ধ ছিল তা নিয়ে কোন মতভেদ নাই। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনায় বহুমুখী দৃষ্টিকোণ এবং বহুমাত্রিক “অন্তর্দৃষ্টি ” থাকতে হবে।
“‘৭১ এর উত্তাল মার্চঃরংপুরের দিনগুলো” রচনায় লেখক রানা মাসুদ ঐতিহ্যগত ভাবে স্বীকৃত ” কথোপকথন”পদ্ধতিটি বেছে নেওয়ায় একাত্তরে ঘটে যাওয়া রংপুরের অনেক অজানা তথ্য বের করে আনা সম্ভব হয়েছে।
একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ফারজানা তার বাবার ব্যক্তিগত ডায়েরি থেকে পাওয়া মুক্তিযুদ্ধে রংপুরের কিছু অসম্পূর্ণ তথ্যকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সে এটি নিয়ে বিস্তারিত লিখবে। সে উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে ফারজানা দাদার বাড়ি রংপুরে চলে আসে।রংপুরে ইতিহাসের এ মহৎ রচনা তৈরীতে তাকে সাহায্য করে- রংপুরের প্রগতিশীল নেতা,ইতিহাস সচেতন, সুলেখক, সুপুরুষ ” রিয়াদ আনোয়ার শুভ”। রংপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে যার রয়েছে অগাধ ধারণা। এমন একজন ভালো বন্ধু কে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আকতারের কন্যা ফারজানা তার বাবার ডায়েরির পাতা থেকে প্রতিদিনের ঘটনাপঞ্জী শুভ’ র সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে উপন্যাসের প্রিয় চরিত্রগুলোর মতো ধারাবাহিক ভাবে নানা তথ্য উপাত্ত যোগ করে একনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করেছে। ইতিহাসের ঘটনাগুলোকে প্রাঞ্জল ভাবে উপস্হাপন করতে, পাঠকের মনে গেঁথে দিতে লেখক শুভ- ফারজানা র মিষ্টি মধুর কথামালার দ্বারা নষ্টালজিক পরিবেশও তৈরী করেছেন। যা একটি ভালো মানের উপন্যাস পড়ার স্বাদও এনে দিয়েছে। পাশাপাশি পাঠককে ইতিহাস পাঠের একঘেয়েমি থেকে বইটির পাতায় ধরে রেখেছে।
‘রংপুরের একাত্তরের মার্চ মাসের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো নিয়ে পৃথক কোন গ্রন্থ নেই’- সেদিক থেকে এটি একটি অনবদ্য কাজ হয়েছে। ” পূর্ববর্তীদের লেখাগুলোই আমার মূলভিত্তি”-লেখকের নিজের বলা এ কথাগুলো থেকে তাঁর ইতিহাসের প্রতি বস্তুনিষ্ঠতা,নির্মোহতা ফুটে উঠেছে।
একাত্তরের উত্তাল মার্চে ঘটে যাওয়া রংপুরের ঐতিহাসিক আলোচিত অজানা জানা ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষদর্শী এবং বিভিন্ন রেফারেন্স বই এর মাধ্যমে তারিখ অনুযায়ী লেখক তাঁর এ পুস্তককে সন্নিবেশ করতে পেরেছেন। মুক্তিযুদ্ধকে হৃদয়ে ধারণ করা,ইতিহাসের প্রতি অনুরাগ সর্বোপরি রংপুরকে ভালোবেসে লেখক ” মুক্তিযুদ্ধে রংপুরের মার্চের ইতিহাস” কে বেশ পূর্ণাঙ্গ ভাবেই উপস্থাপন করেছেন।
২৩২ পৃষ্ঠার বইটিতে মোট ৩৭ টি অধ্যায় রয়েছে। যদিও গতানুগতিক সংখ্যাভিত্তিক অধ্যায় না সাজিয়ে রংপুরের সেই ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও এর বীরত্ব গাঁথা দেশীয় অস্ত্রের ছবির প্রতীক কে অধ্যায়ের শুরু হিসেবে চিহ্ন করা হয়েছে।
‘৭১ এ রংপুরের ‘ মার্চ’ এর ইতিহাস এক মলাটের ভিতরে এতো বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ এরপূর্বে অন্য কোন বইয়ে লক্ষ্য করা যায়নি। সেদিক থেকে লেখক একটি অসাধ্য সাধন করেছেন এবং “আমি আমার সন্তানদের আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের গর্বিত ইতিহাস জানানোর চেষ্টা করি”-ভূমিকায় লেখা লেখকের এই অভিব্যক্তি পুস্তক পাঠে মনে হয়েছে সফল হয়েছে।
এবার বইটির মলাটের ভিতর ঢোকা যাক। প্রথম অধ্যায়টি এ পুস্তকের মূল চরিত্র মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন ডালুর কন্যা ফারজানা আকতারের ঢাকা থেকে রংপুরে আগমন। ধাপ সাগর পাড়ায় তার খালার বাসায় উঠা এবং এখানে তাকে সাহায্যকারী হিসাবে রিয়াদ আনোয়ার শুভকে নিয়ে খালাতো বোন শ্যামলীর সাথে আলোচনায় শেষ হয়।
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় টি রংপুরের ইতিহাস লেখার প্রস্তুতি পর্ব। অধ্যায়টিতে শুভ এর সাথে ফারজানার পরিচয় ব্যক্তিগত আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে ফারজানার লেখাটি কিভাবে এগিয়ে নিবে কোন কোন ব্যক্তির সাথে কথা বলতে হবে এবং কি কি রেফারেন্স বই ব্যবহার হবে। সেগুলো নিয়ে শুভ র সাথে কথা বলে। এ অধ্যায়ে রংপুর শহিদ মিনার এবং প্রেস ক্লাবের ইতিহাসও উঠে এসেছে।
৩য় অধ্যায়ঃ এ অধ্যায় থেকে ফারজানা তার লেখা শুরু করে। ‘৭১ এর উত্তাল মার্চঃ রংপুরের দিনগুলো – তার বাবার ডায়েরির লেখাকে বিস্তারিত করতে যেয়ে ১ মার্চ নিয়ে কোন লেখা না পাওয়ায় সে সিদ্ধান্ত নেয় ১৯৬৮ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবে লিখবে। ঠিক সেভাবে বিভিন্ন বই থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো লিখে ফেলে। এ অধ্যায় শেষে ৬-দফাগুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
৪র্থ অধ্যায়ঃ এ অধ্যায় থেকে মার্চের ইতিহাস লেখা শুরু। ১লা মার্চ ১৯৭১ সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন তাঁর ডায়েরিতে কিছু লিখেন নাই। ফারজানা তাই সারাদেশে ঘটে যাওয়া ১লা মার্চের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো বিভিন্ন বই থেকে সংগ্রহ করে এ অধ্যায়টি সাজিয়েছেন।৫ম অধ্যায়ঃ ২রা মার্চ ১৯৭১। আকতার সাহেবের ডায়েরিতে রংপুর সেন্ট্রাল রোডের পাঙ্গা হাউসের ছাদে ১১দফা আন্দোলনের নেতা কর্মীদের সভা করার কথা উল্লেখ আছে। এ সূত্র থেকে বিস্তারিত লেখার আশায় ফারজানা নানা বই ঘেঁটে জেনে নেয় ঐ সভায় কারা কারা উপস্থিত ছিলো। সভায় সংগ্রাম চালিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়। এ দিন রংপুরে রনি রহমানের পতাকা উত্তোলনের কথাও শোনা যায় বলে অধ্যায়ে উল্লেখ আছে। এরপর ২রা মার্চ দেশের অন্য জায়গায় ঘটে যাওয়া ঘটনার কথাও বিবৃত হয়েছে।
৬ষ্ঠ অধ্যায়ঃ এ অধ্যায়ে শুভ- ফারজানার রিকশা ভ্রমণের মধ্য দিয়ে রংপুর শহরের ঐতিহাসিক তিনকানিয়ার মোড় এবং পাঙ্গা হাউজ দেখতে বের হয়। যদিও আধুনিক অবকাঠামো তৈরী হওয়ায় সেগুলোর আর অস্তিত্ব নাই। তবুও জায়গাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখা হয়। এ অধ্যায়ে রংপুরের প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী হিসাবে মুলাটোলের শেখ শাহী সম্পর্কে অনেক তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে।
৭ম অধ্যায়ঃ এ অধ্যায়টিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে রংপুরের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার বর্ণনা রয়েছে।অধ্যায়ে ৩রা মার্চের কথা বলা হয়েছে। এ দিন বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারাদেশে হরতাল ছিলো। হরতাল সফল করতে কাচারিবাজার থেকে অল্প কিছু লোক শহরে একটি মিছিল শুরু করলেও মিছিলটি তেঁতুলতলা পৌঁছাতে পৌঁছাতে বিশাল জঙ্গি মিছিলে রূপ নেয়। মিছিলটি স্টেশন রোডের ঘোড়াপীর মাজারের কাছে যেয়ে এক অবাঙ্গালি বাড়ির ছাদ থেকে উর্দুতে লেখা সাইন বোর্ড নামাতে যেয়ে অবাঙ্গালি সরফরাজের গুলিতে কিশোর শংকু সমজদার নিহত হয়। যা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে রংপুরের প্রথম শহিদ হিসেবে চিহ্নিত হয়। অধ্যায়ে ঐ মিছিলে আরো আহত এবং পরে নিহতদের সম্পর্কে পরিচয়ও তুলে ধরা হয়েছে।
৮ম অধ্যায়ঃ ৩রা মার্চের মিছিলে রংপুরের প্রথম শহিদ শংকু সমজদার সম্পর্কে আরো তথ্য জানার আগ্রহ থেকে ফারজানা রংপুরের বিশিষ্ট সাংবাদিক মানিক সরকারের সাথে শংকুদের বাসায় যায়। যার বর্ণনা এ অধ্যায়ে দেওয়া হয়েছে।
৯ম অধ্যায়ঃ সাংবাদিক মানিক সরকারের সাথে শংকুর বাড়ি ঘুরে দেখে আসার পর ফারজানা ফোনে শুভকে ডেকে নেয়। এ সময় লেখক রোমান্টিক উপন্যাসের মতো শুভ র চোখে ফারজানাকে মেকআপ বিহীন সুন্দরী হিসাবে দেখান এবং চমৎকার একটি বাক্য “শুভ মজা চোখে ফারজানার দিকে তাকায়” এর মাধ্যমে একটি সুন্দর সম্পর্কের ভিত দেখান। এরপর পথচলার সাথে আলাপচারিতায় শুভ র বাবার পরিচয়,তেঁতুলতলা তথা শাপলা এলাকা সম্পর্কে একটুখানি জানা শোনার মাধ্যমে যে বাড়ি থেকে শংকুকে মিছিলে গুলি করা হয়- সেই অবাঙ্গালি সরফরাজ খানের বাড়ির দিকে এগোয়।
১০ম,১১তম এবং ১২তম অধ্যায়ঃএ তিনটি অধ্যায়ে ৪ মার্চ,৫মার্চ এবং ৬ মার্চের দিনগুলোতে রংপুর ছিলো থমথমে, মানুষ ছিলো আতঙ্কিত। মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন তাঁর ব্যক্তিগত ডায়েরিতে এ দিনগুলোতে দৈনন্দিন জীবনাচার তুলে ধরেছেন। যথারীতি লেখক রেফারেন্স বই থেকে ঐ দিনগুলোতে দেশের কোথায় কি ঘটেছে তা তুলে ধরেছেন।
১৩ ও ১৪তম অধ্যায়ঃ এ দুটো অধ্যায়ে ৭ মার্চ ও ৮ মার্চের তথ্যদিয়ে সাজানো হয়েছে। ৭মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল। রেডিওতে তা সরাসরি প্রচার হবে বলে রংপুরের মানুষ কান পেতে ছিল কিন্তু পরে আর তা প্রচারিত হয়নি। এদিন ঢাকার অবস্থা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অবস্থা এবং বঙ্গবন্ধুর পুরো ভাষণ ১৩ তম অধ্যায়ে বিভিন্ন রেফারেন্স বই থেকে উদ্ধৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে। ১৪তম অধ্যায়ে ৭মার্চের ভাষণ নিয়ে রংপুরের মানুষের প্রতিক্রিয়া বর্ণিত হয়েছে। এদিন রেকর্ডকৃত ভাষণ প্রত্যেক পাড়া মহল্লার মানুষ রেডিওতে শুনে শিহরিত হয়। এছাড়াও এ ৮মার্চের জাতীয় ঘটনাগুলোও তুলে ধরা হয়েছে।
১৫ এবং ১৬তম অধ্যায়ঃ ৯ ও ১০ মার্চের কথা বলা হয়েছে এ দুই অধ্যায়ে। ১৫তম অধ্যায়টি কেবল আকতার সাহেবের ডায়েরির লেখা। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকে শহরের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা এবং সংগঠিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কোন জাতীয় ঘটনার বর্ণনা নাই। ১৬তম অধ্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা আকতারের অনুরূপ স্মৃতিচারণে ঢাকায় মওলানা ভাসানীর ভাষণের কথা আসে। যেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুকে সমর্থন করে বলেছেন বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই। এ অধ্যায়ে মোজাম্মেল হক স্যার সম্পর্কে একটি আলোচনা আছে।
১৭তম অধ্যায়ঃ আজ ১৫ মার্চ। মুক্তিযোদ্ধা আকতার তাঁর ডায়েরিতে লিখেছেন- বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার পর থেকেই রংপুরের যুবকরা পাড়ায় পাড়ায় সংগ্রাম কমিটি গঠন করে। গোপনে গোপনে অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে। রংপুরের মানুষ অবাঙালি ও পাকিস্তানি আর্মিদের খাদ্য সরবরাহে অসহযোগিতা করছে। মোট কথা বঙ্গবন্ধুর ভাষণকেই সবাই অনুসরণ করে চলেছে। এরপর অধ্যায়ে রেফারেন্স বই থেকে জাতীয় ঘটনা সমূহ তুলে ধরা হয়েছে।
১৮তম অধ্যায়ঃ এ অধ্যায়টিতে লেখক গল্পের তাগিদে সাদাসিধা সুন্দরী ফারজানার চোখ না ফেরানো সৌন্দর্যের একটুখানি বর্ণনা দিয়েছেন। এরপর বুড়ির হাট রোড থেকে “শাশ্বত বাংলা” যাদুঘরে যাওয়ার রাস্তা এবং দুপাশের প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোরম বর্ণনা রয়েছে। সাংবাদিক আফতাব হোসনের ” সাংবাদিকতার পথে পথে” বইটিতে ‘শাশ্বত বাংলা’ যাদুঘরের একটা চমৎকার বর্ণনা ফারজানার হাতে। এরপর যাদুঘরে রক্ষিত রনি রহমানের ছবি দেখিয়ে শুভ তাঁর সম্পর্কে অনেক ইতিহাস বলেন।রনি রহমানের জন্ম বসবাস,কীর্তি তুলে ধরেছেন। প্রগতিশীল দেশপ্রেমিক রনি রহমান মুক্তিযুদ্ধে বিশাল অবদান রাখলেও তাঁর স্বীকৃতি পাননি। রনি রহমান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হন কুষ্টিয়াতে। যার কবর দেখতে ইতিহাস পিপাসু লেখক কুষ্টিয়া পর্যন্ত গিয়েছেন শুনেছি। এরপর এ অধ্যায়ে রংপুরের আরেক কৃতি সন্তান মুখতার এলাহি সম্পর্কে অনেকটা তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে।
১৯তম অধ্যায়ঃ আজ ১৭ মার্চ। মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন তাঁর ডায়েরিতে লিখেছেন রংপুরে অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত। অফিস আদালত সব বন্ধ। ফারজানা ‘ রংপুর জেলার ইতিহাস ‘গ্রন্হ থেকে জানেন রংপুরে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম গোলাপ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক প্রেরিত স্বাধীন বাংলার জাতীয় পতাকার নমুনাসহ ইশতেহার গ্রহন করেন।জাতীয় ঘটনার মধ্যে আজ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন।২০তম অধ্যায়ঃ এ অধ্যায়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে রংপুরে সাংস্কৃতিক কর্মীদের ভূমিকা এবং তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ পর্যায়ে রংপুরের প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের মতামতও তুলে ধরা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা আকবর ভাই,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বিপ্লব প্রসাদ বলেন ঐ সময় খাদেমুল ইসলাম বসুনিয়ার নেতৃত্বে তখন রংপুরের গ্রামে গন্জে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল। রফিকুল ইসলাম গোলাপের ‘ আন্দোলন সংগ্রাম ‘বইতেও ঐ সময় রংপুরের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখা আছে।
২১ ও ২২তম অধ্যায়ঃ২২ ও ২৩মার্চ।এ দু’দিন রংপুরে উল্লেখযোগ্য কোন ঘটনা ঘটেনি।শহরজুড়ে ইপিআর টহল দিচ্ছে। ক্যান্টনমেন্টে লোকজন স্বেচ্ছায় খাবার বিক্রি বন্ধ রেখেছে।
২২মার্চ শহরের বিভিন্ন ভবনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করতে দেখা যায়। রংপুরে কে কোথায় কিভাবে পতাকা উঠিয়েছে তারও বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়া যথারীতি ২২ ও ২৩ মার্চে সংগঠিত জাতীয় পর্যায়ের ঘটনাবলীও তুলে আনা হয়েছে।
২৩তম অধ্যায়ঃ আজ ২৪ মার্চ।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এ দিন রংপুরে এক বীরত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে।এ দিন রংপুর ক্যান্টনমেন্টের পাঞ্জাবি লেফটেন্যান্ট আব্বাস সহ ৩/৪জন সশস্ত্র সেনাকে নিসবেতগন্জের দামোদরপুরে স্হানীয় শাহেদ (কসাই) সহ আরো কয়েকজন গ্রামবাসী মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর চড়াও হয়। দা কুড়ালের চোটে ঘটনাস্থলে একজন সৈনিক মারা যায়। লেফটেন্যান্ট আব্বাস হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায়। বলা চলে এ দিন থেকেই রংপুরের মানুষ সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করে। পুরো অধ্যায় জুড়ে এ বিষয়ে বিভিন্ন রেফারেন্স বই থেকে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।
২৪তম অধ্যায়ঃআজ ২৫মার্চ। গতকাল পাঞ্জাবি অফিসার ও সৈনিকদের পিটিয়ে মারার নানা প্রতিক্রিয়া এ অধ্যায়ে সন্নিবেশ করা হয়েছে। নিহত অফিসারের জানাজা হয় এদিন রংপুর সেনানিবাসে। জাতীয় ঘটনার মধ্যে এ দিন ইয়াহিয়া ঢাকা ত্যাগ করে এবং রাতে অপারেশন সার্চ লাইট শুরু হয়।
২৫তম অধ্যায়ঃ আজ ২৬ মার্চ।রংপুরের মানুষ ২৫মার্চের কাল রাতে ঢাকায় যে নির্মমভাবে মানুষ মারা হয়েছে রেডিও মারফত তা জানতে পারে।এদিন রংপুরের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকে আলোচনার কথা বলে ক্যান্টনমেন্টে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু কে বন্দী করা হয়েছে কিন্তু কোথায় আছেন কেউ জানেন না। এর প্রতিবাদে সারাদেশের মতো রংপুরের মানুষও বিক্ষোভ দেখায়। বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড দেয়।
২৬তম অধ্যায়ঃ এটি একটি চমৎকার অধ্যায়।এ অধ্যায়টি রংপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য এবং খ্যাতিমান মানুষদের নিয়ে লেখা। অধ্যায়ে রিয়াদ শুভ কে নায়কোচিত ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।তার সাজ-সজ্জা এবং আচার ব্যবহার অনেকটা হুমায়ুন আহমেদের হিমু চরিত্রের মতো লেগেছে। শুভ ফারজানা একসাথে চলতে চলতে শ্যামা সুন্দরী খালের ইতিহাস। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের রংপুরে বসবাসের কথা। হযরত কেরামত আলী জৌনপুরী(রহঃ) এর ইতিহাস এবং মুন্সিপাড়ার গৌরবের কথা বলেন। শুভ ফারজানা কে মুন্সিপাড়ার কাজী পরিবারের কথা বলেন। এ পরিবারে কাজী জুন্নুন রংপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। অন্য ভাইয়েরাও নিজ নিজ কর্মে উজ্জ্বল ছিলেন।
২৭তম অধ্যায়ঃ আজ ২৭মার্চ।রংপুরের মানুষ পাকিস্তানি সৈনিকদের হত্যা, বঙ্গবন্ধুকে বন্দী এবং কাল রাতে ঢাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বেশ আতংকিত। গ্রেফতার আতংকও বেড়ে গিয়েছে। বিভিন্ন রেফারেন্স বই থেকে জানা যায় এদিন মুন্সিপাড়ার বাসা থেকে মাহফুজ আলী জররেজ কে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। রংপুরে ছাত্র যুব সংগঠকরা গ্রামেগঞ্জে মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠিত করতে থাকে।আজ মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে রেডিও তে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
২৮তম অধ্যায়ঃ আজ ২৮ মার্চ।রংপুরে ঘটলো এক অবিস্মরণীয় ঘটনা।আজ রংপুরের সাধারণ মানুষ দা,কুড়াল,বটি,তীর-ধনুক নিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও করে।আধুনিক মারণাস্ত্রে সজ্জিত একটি ক্যান্টনমেন্ট কে ঘেরাও করার সাহস কেবল দেশপ্রেম থেকেই সম্ভব। পাক হানাদার বাহিনী সেদিন এ মানুষগুলো মেশিনগানের গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল। তাৎক্ষণিক ৩০০ এর মতো লোক একসাথে শহিদ হয়। রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও কেন,কিভাবে সংঘটিত হয়েছিল তার বিস্তারিত আছে অত্র অধ্যায়ে।আদিবাসীদের উদ্বুদ্ধ করে হাজার হাজার মানুষ সংগঠিত করেছিল যারা সেই সব নেতৃবৃন্দ সম্পর্কেও অনেক তথ্য দেওয়া আছে এ অধ্যায়ে। একই তথ্য বিভিন্ন রেফারেন্স বই থেকে গ্রহণ করে লেখক ইতিহাস বিকৃতি রোধে সচেষ্ট থেকেছেন।
২৯,৩০ এবং ৩১তম অধ্যায়ঃ ২৮ মার্চের পর রংপুরে থমথমে বিরাজ করলেও উল্লেখযোগ্য কোন ঘটনা ঘটেনি। সেজন্য লেখক এ অধ্যায়গুলোতে যেমন ২৯ তম অধ্যায়ের শুরুতে গল্পের নায়িকা ফারজানাকে ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণের সুযোগ দিয়েছেন। অতপর শুভ ফারজানার সংলাপে রংপুর ক্যান্টনমেন্টের সৌন্দর্য বর্ণনার সাথে রংপুরে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করতে মুক্তিযুদ্ধকে মানুষের কাছে জনপ্রিয় করতে যে সব নেতা অবদান রাখেন তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেছেন এ অধ্যায়ে। ৩০তম অধ্যায়ে শহরের থমথমে অবস্থা ছাত্রনেতাদের গ্রামেগঞ্জে গা ঢাকা দেওয়া এবং শহরে আর্মির গাড়ির টহলের কথা বলা হয়েছে। ৩১তম অধ্যায়টিতে রংপুরে সাংবাদিকতার অগ্রপথিক দাবানল পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ‘ খন্দকার গোলাম মোস্তাফা বাটুল’ এঁর কর্ম ও পরিচিত তুলে ধরা হয়েছে। অত্র অধ্যায়ে ‘ মুক্তিযুদ্ধে রংপুর’ গ্রন্থের লেখক ” বর্ণসজ্জার” মালিক মুকুল মুস্তাফিজ ভাইয়ের কর্ম নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। আলোচ্য অধ্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুরের পত্রিকাসমূহ এবং সাংবাদিকতার কথাও আলোকপাত করা হয়েছে।
৩২তম অধ্যায়ঃ আজ ৩১ মার্চ।এ অধ্যায়টি মুক্তিযোদ্ধা আকতারের ডায়েরির লেখা দিয়েই শেষ করা হয়েছে। ২৮ মার্চ ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও এর প্রতিশোধ নিতে আশেপাশের গ্রামগুলোতে পাক আর্মিরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আতংক গ্রস্ত মানুষ শহর ছেড়ে যাওয়ার দো টানায় পরেছে।৩৩তম অধ্যায়ঃআজ ১লা এপ্রিল। এদিন রংপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হয়ে যাওয়া ক্যাপ্টেন নওয়াজেশ ইপিআর জোয়ান এবং তিস্তা ” এ্যাপেলো ক্লাব” এর সদস্যদের নিয়ে কাউনিয়ায় তিস্তা সেতুর উপর বেরিকেড দেয়।এদিন রংপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে মেজর এজাজ এবং কাউনিয়ার ওসি আব্দুস সাত্তার তিস্তা নদীর পারে রেকি করতে গেলে ক্যাপ্টেন নওয়াজেশ আক্রমণ করে। উভয় পক্ষের যুদ্ধে মেজর এজাজ, ওসি সাত্তার সহ ১৫ জন নিহত হয়।এটা ছিল পাকিস্তান বাহিনীর সাথে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ। বিভিন্ন রেফারেন্স বই থেকে এ ইতিহাসগুলো অত্র অধ্যায়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
৩৪তম অধ্যায়ঃআজ ৩রা এপ্রিল। এ অধ্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা আকতারের ডায়েরি থেকে জানা যায়,২৮ মার্চের পর থেকে পাক সেনারা শহরের আশেপাশের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিলেও ২রা এপ্রিল রাতে শহরের পূর্ব প্রান্তে প্রচুর গুলির শব্দ পাওয়া যায়। ৩রা এপ্রিল সকালে জানা যায় ইতোমধ্যে রংপুরের যে সকল কৃতি সন্তান কে বন্দী করা হয়েছিল তাদের মধ্যে ১১জনকে দখিগন্জ শশ্মানে গুলি করে হত্যা করা হয়।এর মধ্যে জররেজ মিয়ার লাশও ছিলো।গুলিবিদ্ধ লাশের স্তুপ থেকে একজন প্রাণে বেঁচে যান।তিনি হলেন তাজ হাটের দীনেশচন্দ্র ভৌমিক (মন্টু ডাক্তার)। সেই রাতে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল তাদের পরিচয় অধ্যায়ে সন্নিবেশ করা হয়েছে।
৩৫ ও ৩৬তম অধ্যায়ঃ আজ ৪ এপ্রিল।মুক্তিযোদ্ধা আকতারের এটি শেষ ডায়েরি লেখা।রংপুর শহরে পাক আর্মিদের অত্যাচার দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁরা স্বপরিবারে এদিন ভারত চলে যায়। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিয়ে এবং মুক্তিযুদ্ধ শেষে দেশ স্বাধীন হলে আকতার সাহেব আবার ফিরে আসেন। বাবার স্বাভাবিক মৃত্যুর পর ফারজানা তার পিতার ডায়েরি থেকেই “‘৭১এর উত্তাল মার্চঃ রংপুরের দিনগুলো”য় একটি পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস লেখতে পারেন।
৩৬তম অধ্যায়টি এক পৃষ্ঠায়। মূলতঃ লেখাটা শেষ করে তৃপ্তির খুশিটা শুভকে জানায়। যে শুভ র ইতিহাস সমৃদ্ধ মননের সহযোগিতায় তার এ সফলতা।
৩৭তম অধ্যায়ঃ শেষ অধ্যায়। এ অধ্যায়টি উপন্যাসের উপসংহার। নায়িকার বিদায় পর্ব।বাবার ডায়েরি থেকে পাওয়া অসম্পূর্ণ তথ্যগুলো থেকে ১৯৭১ এর মার্চে রংপুরে সংগঠিত ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো নানা তথ্য প্রমাণসহ বিস্তারিত আকারে শেষ করতে পারায় আজ সে ঢাকায় ফিরে যাচ্ছে। বিদায়কালে ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞান সমৃদ্ধ বন্ধু শুভ তাকে রংপুরের ঐতিহ্য শতরঞ্জি উপহার দেয়।
বইটি এক নিঃশ্বাসে পরলে কম মজা পেতাম বলে আস্তে আস্তে পড়ে পুরো স্বাদ নিয়েছি। মুদ্রণজনিত অল্প কয়েকটা বানান ভুল রয়েছে। ১৫তম অধ্যায় পৃঃ ৯১ এ লেখক নিজেই বলেছেন ” কেউ প্রধান রাস্তা বলে না। বলে মেইন রোড “। ঠিক সেভাবেই বলতে হয় ‘ রিচ’ অথেনটিক ‘ ইংরেজি শব্দের পরিবর্তে বাংলা শব্দ ব্যবহার করলে ভালো হতো।পৃষ্ঠা-১৪১ এ ২৪ মার্চকে আবার ” আজ নিসবেতগন্জ দামোদরপুরের দিকে গিয়েছিল” ২৫ তারিখের ডায়েরিতে এটি আসার কথা নয়। ৩৬তম অধ্যায়টি ৩৫ অথবা ৩৭ এ মিলিয়ে নিলে সমস্যা মনে হয় হতো না।
বইটি পাঠক প্রিয়তা পাবে বলে আমার বিশ্বাস।
বইয়ের মুদ্রণ,অলংকরণ এবং সুন্দর বাঁধাইয়ের জন্য সাকিল মাসুদের আইডিয়া প্রকাশন প্রশংসার দাবীদার। অনেক অনেক ধন্যবাদ এ রকম সুন্দর পুস্তক প্রকাশের জন্য।
Leave a Reply