গোলাপ হোসেন রতন এর ১০টি ছড়া
১. ক্ষমা
ঘরে বসে প্রার্থনা
স্রষ্টা দোমার কাছে।
তুমি রাখো তুমি মারো
তোমার সব ক্ষমতা আছে।
নিরুপায় হয়েছি মোরা
উপায় নাইতো আর।
ভালো মন্দ সবি রইলো
তোমার কাছে ভার।
ক্ষমা করে দাওগো মোদের
করেছি যতো ভুল।
দয়া করে তোমার দয়ায়
বাচাও মানব কুল।
তোমার কৃপায় বাচব মোরা
শুধু এই ভরসা বুকে।
দুর করে দাও সকল সংকট
রাখতে মোদের সুখে।
স্রষ্টা তোমার সেরা সৃষ্টি
মানব তোমার প্রিয়।
ভুল করেছি মোরা অশেষ
ক্ষমা করে দিও।
২. ছাড় রে মন
ছাড় রে মন হিংসা বিদ্দেশ,
ছাড় অহংকার।
বিশ্ব জুড়ে মহামারি,
চলছে করোনার।
কিসের টাকা কিসের কড়ি,
সবি হবে মিছে।
অদৃশ্য ঘাতক যেন,
লাগছে লোকের পিছে।
প্রতিদিনেই অকালে,
ঝরছে কত প্রাণ।
হে দয়াময় করোনা হতে,
মানব কেদাও পরিত্রাণ।
৩. ক্ষনিক সময়
ক্ষনিক সময় বাচার জন্য
করছি বারাবারি
ক্ষুদ্র স্বার্থের ব্যাঘাত হলে
করছি মারামারি।
পাশের বাড়ির লোক মরেছে
খুরিতেছে কবর
পরেক নিয়ে ভাবছি সদা
নেইনা নিজের খবর।
দেখা হলো রবিন দাদার
বিকেল বেলা হাটে
সকাল বেলা নিয়ে তারে
যাচ্ছে শ্মশান ঘাটে।
লাটাই সুতা পরের হাতে
মারবে যখন টান
শুন্য খাচা পড়ে রবে
থাকবেনাতো প্রান।
চাওয়া পাওয়ার লোভলালসায়
ডুবে আছে মন
একবারো ভাবিনাতো
আছি কতক্ষন।
৪. নাইতো বেশি দেরি
ধরণীর বুকে, থাকিতে সুখে
বাড়ি করিলাম পাকা।
মৃত্যু আমায় হাতছানী দেয়
হয়না বুঝি থাকা।
নানা রোগে জড়িয়ে ধরেছে
রাত্রে আসে জ্বর।
প্রেসার বাড়ে, প্রেসার কমে
বুক করে ধরপর।
ব্যথায় শরীর জড়াজীর্ণ
হাত পা গেছে বেঁকে।
গায়ের চর্ম কুচিয়ে আছে
চুল গুলো গেছে পেকে।
দন্ত গুলো নড়ছে পরছে
কমছে চোখের আলো,
খানা দানা এসব কিছু
লাগেনা আর ভাল।
সমন যেন ঘুরছে পিছে
হাতে নিয়ে বেড়ি,
সকল ছেরে যেতেই হবে
নাইতো বেশি দেরি।
৫. আহবান
আসোরে মানুষ আসো সবাই,
ধর্মের ছায়াতলে।
ধর্ম শুধু সুপথ দেখায়,
ও কল্যাণের কথা বলে।।
কোরাআন,পুরাণ, বাইবেল,
তোরা দেখরে খুলে দেখ
ধর্ম শুধু নামে ভিন্ন
তবে মুলে সবি এক।।
মসজিদ, মন্দির, গীর্জা
সবি যেন উপাসনালয়
সেথা করলেপ্রার্থনা
তবে আত্ন শুদ্দিত হয়।।
একি স্রষ্টার সৃষ্টি সবাই মোরা
গাইযে শুধু তারি গুনগান
সৎ কাজের মাঝেই হয়তো
পাবো পরপারে পরিত্রাণ।।
আসোরে মানুষ আসো সবাই
মোরা হবো ধর্মপ্রান
ধর্মের মাঝে শান্তি মিলিবে
মিলিবে মানবতার সমাধান।
৬. দিও নাকো ফাকি
পথ তাকিয়ে চেয়ে আছি,
আসবে বলে তুমি।
তুমি ছাড়া এই জগতে,
বড্ড একা আমি।
প্রথম দেখেই তোমায় আমি,
ফুল দিয়েছি হাতে।
সারা জীবন কাটে যেন,
আমার-তোমার সাথে।
ভুল বুঝোনা লক্ষি সোনা,
আমি তোমার আছি।
সারা জীবন থাকে যেন,
ভালো বাসা বাসি।
তোমায় নিয়ে আমার মনে,
সপ্ন শুধু আঁকি।
অবশেষে আমায় তুমি,
দিও নাকো ফাকি।
৭. মনে ছিলো আশা
শিমুল গাছে ফুল ফুটেছে-
কাক বাধলো বাসা।
ফুল হতে ফল হবে-
কাকের মনে আশা।
দিনেদিনে ফুল গুলো-
যাচ্ছে যেন ঝরে।
তা দেখে কাকের মন-
আনন্দে যায় ভরে।
দিন ফুরালো রাত ফুরালো –
বড় হলো ফল।
কাক বললো স্ত্রী কে-
আর কতদিন বল।
শিমুল যখন পেকে –
ভরে যাবে রসে।
মজাকরে খাবো তখন –
তমান ডালে বসে।
অনেক আশায় পাকলো শিমুল –
খাইতে যখন গেলো,
ঠোকর দিতেই খোসা ফেটে-
বাহির হলো তুলো।
পাকবে ফল, খাবে বসে-
মনে ছিলো আশা।
কাক বললো শিমুল গাছে –
বাধবো না আর বাসা।
৮. জীবন তরীর ভেলা
জীবন তরী মোর চলেছে ভাটি
যেন উজান গাঙ ছেরে,
কখনও ভাবীনি তব কোথা
যেন নিয়ে চলে মোরে।
উথাল তরঙ্গে দেখে ছিনু
উদিয়মান সূ্র্যের আলো
কখনও কি ভেবে ছিনু জীবন
নিখিলে ঘিরিবে কালো।
আমি তো নাহী জানি কোথায়
ভিরবে মোর ভাঙ্গা তরী খানি
কোথা হতে এসেছি তবো কোথায়
আবার ভেসে যাব তাও নাহি জানি।
এসেছি ভেসে যাইবো ভেসে
এইতো তাহারী খেলা
মায়ার সাগরে ক্ষনিক ভাসালো
মোর জীবন তরীর ভেলা।
৯. পাপাচারঘুষের টাকায় করছ বাড়ি
বাড়ির কত বাহার।
অন্ধ বিবেক দেখতে পায়না
নিজের পাপের পাহাড়।
সুদ খেয়েছ সারা জীবন
প্রতিবেশির কাছে,
নষ্ট মন দেখতে পায়না,
অন্যায় কত আছে।
দোকানদারী করছ তুমি
কম দিয়েছ মাপ,
লোভী মন দেখতে পায়না
করছ কত পাপ।
ডাঃ হয়ে টাকার লোভে
পরের গর্ভ করছ নষ্ট,
একবারও কি ভেবে দেখেছ
পরকালে পাইতে হবে কষ্ট।
পরের জমি দখল করে
করছ জমিদারী,
ভাবছ কি মন কয়দিন তোমার
থাকবে বাহাদুরী।
পরকীয়া আর পতিতালায়ে
জীবন দিচ্ছ পারি,
দিনে দিনে পাপের বোঝা
হয়ে যাচ্ছে ভারী।
১০. জীবন প্রদীপ
নামাজ পড়ো, রোজা রাখো-
সময় অতি কম।
জীবন প্রদীপ নিভে যাবে-
বন্ধ হলে দম।
দিন যায় ব্যস্ত কাজে-
রাত কাটে ঘুমে।
জীবন থেকে সময় যেনো –
যাচ্ছে শুধু কমে।
আয়ু বেলা পড়ছে ভাটি-
দেখনা মন চেয়ে।
মৃত্যু যেন আমায় নিতে-
আসিতেছে ধেয়ে।
লোভ লালসার মোহ মায়ায়-
ডুবে রইলো মন।
আমি তুমি কেউ ভাবিনা-
আছি কতক্ষন।
হঠাৎ করে আবুল চাচা-
পর্শু গেলো মরে।
কাল মরলো আবু হানিফ-
গাড়ি চাপায় পড়ে।
এইভাবেতে কেউ রবনা-
সবাই যাবো মরে।
কেউবা দুদিন আগে-
কেউবা দুদিন পড়ে।
Leave a Reply