বর্ষ শেষের প্রহরে
রোজী নাথ
করোনার করাল গ্রাসে যে সংসার আজ কর্মহীন একফসলের মাঠ , তার কাছে নববর্ষ আর বিগতবর্ষ তো সমার্থক।
এমনও শিশুর পদভারে পৃথিবী নুয়ে পড়ছে, যার কাছে সামান্য একটা চকলেটও বিলাসিতা , তাই সে স্কুলছুট।
এদিকে রাতের অন্ধকারে নিজের সর্বস্ব দিয়ে যারা রজনীগন্ধা বাসর সাজায় , তাদের কাছে তো প্রতিদিনই নতুনের পুজো হয়—- প্রতিদিনই তো ওদের যন্ত্রণার নববর্ষ।
পৃথিবীর আনাচে কানাচে অনেক স্বপ্নের চাষ হলেও যেসব পরিবারে কোনো আলোর প্রবেশাধিকার নেই , তাদের আবার নববর্ষ? পুরো জীবনটাই তো তাদের দুখবর্ষ।
অশ্রু শুকিয়ে গেলেও দুখীরাম বছরের প্রথম সকালে উঠে বৃদ্ধ মা-বাবার দিকে অপলক দৃষ্টিতে শুকনো চোখেই তাকিয়ে ভাবে– আজ তো কোথাও কাজ পাওয়া যাবে না, আজ বাবুদের নববর্ষ।
যেসব সংসারে নববর্ষ মানে খোলা আকাশের দিকেই আরো কয়েক বছর হা করে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ নীরবে ওপারে চলে যাওয়া, ওদের জন্য একটা কবিতা লিখো কবি।
অনেক তো লিখেছ আমার কথা , অনেক লিখেছ শ্রাবণ-বসন্তের গান। এবার একটু ফিরে এসো নির্জলা উপবাসের মাটিতে।
দিন আনা দিন খাওয়া মজুরের চোখে নববর্ষ মানেই তো ঝলসানো রুটি।
বর্ষশেষের এই সন্ধ্যায় এটুকুই চাওয়া —- মাঠ ও মাটি হোক সকলের, বাঁচা হোক সর্বজনীন এক উৎসব।
Leave a Reply