বিশ্বের প্রথম করোনা প্রতিষেধক “স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন” কতটা কার্যকর মানবদেহে!!
ফারুক ফরায়েজি
করোনা’র কথা চিন্তা করলে শরীরের লোম শিউরে ওঠে, ভয় আতঙ্কে দূর্বল হয়ে পড়ে শরীর। ইতিমধ্যে পৃথিবীর ২০৬টি দেশ জেনে গেছে এই করোনার ভাইরাস এর কথা। কোটি ছাড়িয়েছে মৃত্যুর হার আর কত কোটি মরবে কেউ জানেনা। ঘৃণার বীজ বপন করে গেলো গোপনে মানুষের অন্তরে। মানুষ মানুষকে, পরিবার পরিবারকে, সমাজ সমাজকে, রাষ্ট্র রাষ্ট্রকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে। ফলে মানুষের মাঝে দুরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে, যে কোন সম্পর্কে কলহের সৃষ্টি হচ্ছে, সামাজিক ভারসাম্য ক্ষুন্ন হচ্ছে। আর এই মহামারীকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু মানুষ রাতারাতি বড়লোক বা ধনবান হওয়ার চিন্তা করছে, শক্তিমান রাষ্ট্রগুলো আরও শক্তিশালী হওয়ার চিন্তায় মসগুল। শুরু হয় ঐতিহাসিক টিকা তৈরির প্রতিযোগিতা,আর এই প্রতিযোগিতায় কার আগে কে কোন রাষ্ট্রের রক্ত চুষে কংকাল বানাবে তার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। ভয়ংকর চান্ড রূপ নিয়েছে পৃথিবী।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান পেয়ে ১১-ই আগষ্ট বাজারে আনছে করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন “স্পুটনিক ভি”। সোভিয়েত জমানার প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুটনিক এর সম্মানার্থে এই ভ্যাকসিন এর নামকরন করা হয়। এই ভ্যাকসিন এর সম্পূর্ণ ট্রায়াল এর তৃতীয় ধাপ শুরু না করতেই উৎপাদনের অনুমতি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তিনি বিশ্বের কাছে এই ভ্যাকসিন তুলে ধরার জন্য বলেন যে তার দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের শরীরে দেওয়া হয়েছে এই ভ্যাকসিন।
১১ই আগষ্ট এই দিন রুশ মন্ত্রী কিরিল দিমিত্রিয়েভের মন্তব্যে জানা গেছে, এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় ধাপ শুরুই করা হয়নি। অথচ ভ্যাকসিন প্রয়োগ ও বিশ্বের ২০টি দেশে একশো কোটি ডোজ বানিজ্যিক ভাবে বাজারজাত করনের জন্য উৎপাদনের ছাড়পত্র দিয়ে ফেলেছে ভ্লাদিমির পুতিন। অথচ প্রতিষেধক তৈরি করতে মিনিমাম এক বছর সময় লাগে, করোনা মানব দেহে পাওয়া গেছে মাত্র আট মাস আগে। তবে কি ভ্লাদিমির পুতিন প্রতারণার জাল বিছিয়ে দিয়েছে পৃথিবীর মানচিত্রে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা “হু” জানান বিশ্বের যে ৯টি ভ্যাকসিন করোনা প্রতিষেধক হিসেবে ট্রায়াল চলছে তার লিষ্টে নাম নেই স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন এর। যে ভ্যাকসিনে ট্রায়াল এর তৃতীয় ধাপ সম্পূর্ণ হয়নি তার আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট কি করে বলে এই ভ্যাকসিন করোনা প্রতিরোধে সক্ষম। এই নিয়ে গোটা বিশ্বে চলছে তুমুল উত্তেজনা অনেক শক্তিশালী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানী, চীন, কানাডা এই ভ্যাকসিন এর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা “হু” এর ডিরেক্টর জেনারেলের উপদেষ্টা ড. ব্রুস এলিওয়ার্ড বলেন,এই মুহূর্তে রুশ ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়ার মতো কোন তথ্য আমাদের হাতে নেই। তার মানে কি রুশ সরকার রাতারাতি এই ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেছে।
রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি এই ভ্যাকসিন ১৮- ৬০ বছর বয়সী রাশিয়ার মানুষের শরীরে পরিক্ষা করা হয়েছে, তবে বাকি ০-১৭ বয়সী শিশু ও কিশোর এবং ষাটের উর্ধ্বে যাদের বয়স তাতের শরীরে কি এই ভ্যাকসিন কাজ করবে এর জবাব রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেয় নি। তার মানে কি রুশ সরকার ধোঁকা দিতে চাচ্ছে পুরা পৃথিবীকে। সময় সময়কে চিনিয়ে দেয়, চিনিয়ে দেয় রাষ্ট্র
চিনিয়ে রাখে সময় কে কতটা ভ্রষ্ট। তাই কোন কাজ করার আগে সময়ের জ্ঞান থাকা জরুরি না হলে সে কাজের স্বীকৃতি দেয় না পৃথিবী।
Leave a Reply