পাকিস্তান ভ্রমণ-৬
মাহাতাব লিটন
১০.
গতকালের দীর্ঘ ভ্রমণের ধকল গত রাত্রির নিদ্রার সহিত চলিয়া গিয়াছে। একই দিনে দুটি প্রদেশ খাইবার পাখতুন হইতে পাঞ্জাব উপরি পাওনা ছিল রাওয়ালপিন্ডি ও মারগিল ভ্রমণ। হোটেল কক্ষ ছাড়িয়া দিবার আগে আর একবার ভালো করিয়া দেখিলাম কিছু প্রসাধনী বিনামূল্যে পাইলাম। ইহার পূর্বেই প্রাতরাশ শেষ করিয়াছি। চেক আউটে পর ✈ বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হইলাম। যথারীতি প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল পাকিস্তানের দুই উপদেশক আমাদের করাচির সহযাত্রী হইলেন। আধা ঘন্টার মধ্যে ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পৌঁছানোর পর নিয়মমাফিক বোর্ডিং কার্ড গ্রহন করিলাম। ইমিগ্রেশন পুলিশের জেরা মোকাবিলা করিয়া বাস ধরিয়া বায়ুযানে আসন গ্রহন করিলাম। আবারও জানালার ধারে আসন গ্রহন। কোমর বন্ধনী আঁটা। তাহাদের নির্দেশনা শ্রবণ করা। ৫০০ কিলোমিটারের যাত্রার কারণে মিনিট দশেকর মধ্যে জলযোগ হইল। জানালা দিয়া মাঝে মাঝে আকাশ হইতে মাটিতে কিছু দেখিবার বৃথাই চেষ্টা করিলাম।
দলে পাঁচজন আভ্যন্তরীণ বায়ু যানে চাপিয়া ৫০ মিনিটের মধ্যে করাচি ✈ বন্দরে অবতরণ করিলাম।
পাহাড় হইতে এইবার আরবসাগর তীরে। তারকা হোটেলের গাড়িতে করিয়া করাচির জ্যাম ঠেলিয়া খানিকক্ষণ বাদে হোটেল পৌঁছাইলাম। করাচি দেখিয়া ঢাকার কথা মনে পড়িল। তবে করাচির রহিয়াছে সমৃদ্ধ ইতিহাস জানিতে গুগল মামার সাহায্যে জানিলাম
“১৮৩৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এইচএমএস ওয়েলেসলি গুলি চালিয়ে এবং মনোরার স্থানীয় কাঁচা দুর্গটি দ্রুত ধ্বংস করার পরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া সংস্থা করাচী দখল করে। শহরটি ১৮৪৩ সালে ব্রিটিশ ভারতে অধিভুক্ত করা হয়। পরে মিয়াণীর যুদ্ধে বিজয়ের পরে সিন্ধু অঞ্চলটি মেজর জেনারেল চার্লস জেমস নেপিয়ার দ্বারা দখল করা হয় এবং শহরটি সদ্য গঠিত সিন্ধ প্রদেশের রাজধানী হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
শহরের কৌশলগত গুরুত্বের কথা স্বীকৃত করে, ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশরা করাচী বন্দর প্রতিষ্ঠা করে। নবনির্মিত বন্দর ও রেল অবকাঠামো এবং সেইসাথে পাঞ্জাব এবং অভ্যন্তরীণ সিন্ধুতে নতুন সেচ জমির উৎপাদনশীল অঞ্চলগুলি থেকে থেকে কৃষি রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে করাচি দ্রুত ব্রিটিশ ভারতের পরিবহনের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে। ব্রিটিশরাও প্রথম অ্যাংলো-আফগান যুদ্ধে ব্রিটিশ যুদ্ধের প্রয়াসকে সহায়তা করার জন্য করাচি সেনানিবাসকে সামরিক গ্যারিসন হিসাবে উন্নিত করে। করাচি শহরের মধ্যে দুটি ছোট ছোট পাহাড়ের সারি রয়েছে: খাসা পাহাড় এবং মুলরি পাহাড়, যা উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এবং উত্তর নাজিমাবাদ শহর এবং ওরাঙ্গি শহর দুটির দেওয়াল হিসেবে কাজ করে।
করাচীর পশ্চিমে সিন্ধু নদীর প্লাবিত সমভূমি রয়েছে। করাচি পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক রাজধানী।পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকে করাচী দেশটির অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু এবং ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকের শেষভাগে আর্থ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনৈতিক স্থবিরতা সত্ত্বেও পাকিস্তানের বৃহত্তম নগরায়ন অর্থনীতি এর ছিল। এ শহরটি করাচি থেকে নিকটবর্তী হায়দরাবাদ এবং থাট্টা পর্যন্ত বিস্তৃত অর্থনৈতিক করিডোরের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে । করাচি পাকিস্তানের সর্বাধিক ভাষাগত, জাতিগত এবং ধর্মীয়ভাবে বৈচিত্র্যময় শহর। শহরটি পাকিস্তানের পাশাপাশি এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল থেকে আসা জাতি ও ভাষাগত অভিবাসীদের একটি মিলনস্থল। এ শহরে বসবাসকারী বাসিন্দাদের করাচিতি বিশেষন দ্বারা অবহিত করা হয়। এখানে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা প্রায় ৯৮% । এদের অধিকাংশ ভারতবর্ষ বিভাজনের সময় ভারত থেকে আগত শরণার্থী। কিছু খ্রিস্টান বসবাস করেন তবে হিন্দু সম্প্রদায় এর মানুষ নেই বললেই চলে।
সিন্ধি ভাষা এখানকার স্থানীয় হলেও উর্দু ভাষা ই এখানে বহুল কথিত ভাষা”
হোটেলে আসিবার পথে সিন্ধ গর্ভনরের অট্টালিকাটি দেখিলাম। ইহা শেরাটন হোটেলের সন্নিকটে। এই প্রথম শেরাটন হোটেল চেক ইন করা। আমরা পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিলাম, আর পাকিস্তানি দুই উপদেশককে দেখিলাম তাঁদের এনআইডি দেখাইয়া চেক ইন করিল। তারকা চিহ্নিত হোটেলের লবিতে প্রবেশ করিয়া অনুভব করিলাম আভিজাত্য কাহাকে বলে। সাত কি নয় তলায় ছিলাম তাহা ঠিক মনে নাই। চেক ইনের পর লবিতে ডাক্তার আপা বলিলেন “আপনারা রুম থেকে ফ্রেস হয়ে পুনরায় লবিতে ফিরে আসুন এরপর বাইরের কোনো একটা হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে যাব।” বলিয়া রাখি ডাক্তার আপার কৈশোর কাটিয়াছে এই করাচিতে বাবার চাকুরীর সুবাদে সম্ভবত তাঁর বাবা পাকিস্তান এয়ারফোর্স জব করতেন। সেটি স্বাধীনতার পূর্বের কথা। অবশেষে মিনিট ত্রিশিকের মধ্যেই মধ্যাহ্নের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সারিয়া লবিতে নামিলাম।
সেইদিন ছিল রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন। আমরা তিনজনে একটা স্কুটারে চাপিয়া সন্নিকটে একটি রেস্তোরাঁয় হাজির হইলাম।খাবারের তালিকা দেখিয়া এবংপছন্দের খাবার গ্রহন তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলিয়া আবারও হোটেলে ফিরিয়া আসিলাম তবে স্কুটারে করিয়া নহে আমরা তিনজনা ফিরিলাম ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়া। ফিরিবার কালে দেখিলাম অসংখ্য দ্বি চক্রযান হোন্ডা গুলি বেশিরভাগই একদিকেই যাইতেছে। পাকিস্তানি জাতীয় পোশাক পরিহিত তাহাদের পিছনে স্ত্রী ও সন্তানেরা। আমার যতদূর দৃষ্টি গোচরে আসিল তাহাদের প্রতিটি মোটরসাইকেরের জ্বালানী তৈল রাখিবার ট্যাকিংগুলি চামরা বা রেক্সিন দিয়া ঢাকিয়া রাখা। নিশ্চয়ই ইহার একটি যৌক্তিক ব্যাখ্যা রহিয়াছে। কিন্তু বুঝিলাম না তাহারা কোথায় যাইতেছে নিশ্চয়ই কোন উৎসব হইবে। তাহার পরে শুনিলাম সকলেই ক্লিনটফ বিচে যাইতেছেন। তাহার মানে আরব সাগরের তীরে।
সপ্তাহের ছুটিরদিন মানে প্রতি রবিবারে তাহারা পরিবারের সবাইকে সাগরতীরে যান বলিয়া রাখি আজ শপিং যাইবার পরিকল্পনাও রহিয়াছে, সেই সাথে আমাদের সফরসঙ্গী প্রকৌশলী ও উপদেশক জনাব ইমরানে নিকট আত্মীয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা সম্ভবত কর্ণেল পদ মর্যদার।তিনি আজ রাত্রিতে আমাদের সম্মানে নিমন্ত্রণ করিয়াছেন। ইহার থাকিয়াও বড় কথা আহারের আয়োজন হইবে করাচির ক্লিনটফ সাগর সৈকতে একটি রেস্তোরাঁয়।
সফরের সময় যত দ্রুত ফুরাইয়া আসিতেছে ততই আমাদের ব্যস্ততা বাড়িতেছে। এখনো আরও দুইটি স্থান পরিদর্শন বাকি রহিয়াছে।
১১.
আজ করাচিতে ক্লিনটফ সাগর সৈকতে যাওয়ার পরিকল্পনা রহিয়াছে। সন্ধ্যা হইতে এখনো ঘন্টা তিনেক হাতে রহিয়াছে। সংগত কারণে বৈকালী সদাই-পাতি করিবার জন্য আবারও স্কুটার ধরিয়া গল্ফ বিপনি বিতানে গিয়া হাজির হইলাম।
বলিতে ভুলিয়া গিয়াছিলাম ইসলামাবাদে থাকা কালীন কোন এক রাত্রিতে একটি বিপনে বিতানে গিয়া সহধর্মিণীর জন্য সুতির কাপড় ক্রয় করিয়া ছিলাম। সতের বছর আগে তিন টুকরো কাপড় ক্রয় করিতে অনেকগুলি পাকি রূপি খরচা হইযাছিল। ভগ্নিদ্বয় যখন নানা রঙের কাপড় নাড়িয়া চাড়িয়া দেখিতেছিলেন সেই ফাঁকে পাশের কাশ্মীরী শালের দোকানে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিলাম। অবশেষে বিক্রেতার কাছে পণ্যের মূল্য শুনিয়া ☺ কৃত্রিম হাসি সহিত প্রস্থান করিলাম কিন্তু ভিতরে অনেকটা নিরাশ হইয়াছিলাম। সংগত
কাল বিলম্ব না করিয়া প্রস্থান করিয়া ছিলাম বিপনী বিতানের হইতে। করাচিতে গলফ্ বিপনী বিতানে আসিয়া সর্তকতার সহিত টুকটাক ক্রয় করিলাম। সহধর্মিণীর জন্য পাদুকা ক্রয় করিলাম।একমাত্র কন্যার জন্য সদাই করিলাম বলিতে পারেন নাম মাত্র। এই সকল ক্রয় কেবলই স্মারকমাত্র। সহকর্মীদের জন্য কিছু কলম কিনিলাম। আমার কেনাকাটা দেখিয়া ভগ্নিদ্বয় বলিয়াছিলেন “লিটন নিজের জন্য কিছু কিনুন” উত্তরে বলিয়া ছিলাম – না ঠিক আছে আমিতো দেখছি ঘুরছি খাচ্ছি এতেই খুশী।
তবে কিছু ফল কিনিবার সাধ হইল। সেই যাই হউক অর্থ থাকিলে ক্রয় হইবে ইহাতে বাধ্যবাকতা নাই। ঘন্টা দুই বিপনী বিতানে ঘুরিয়া ফিরিয়া পুনরায় হোটেলে ফিরিলাম।
আবারও হোটেল কক্ষে ঢুকিয়া একটু ফ্রেস হইলাম। তারপর লবিতে আসিয়া বসিলাম দেখিলাম একজন তরুণ সংগীতশিল্পী আধুনিক গান পরিবেশন করিতেছেন। আমার মতই অতিথিরা কেদারায় বসিয়া শীতল পানীয়জলের সাথে সাথে সংগীত শুনিতে ছিলেন। আমি ভালো শ্রোতা নই কারণ আধুনিক সংগীত ভালো বুঝি না। আমার বরাবরই ভালো লাগে গণসংগীত হেমাঙ্গ, ভূপেন, প্রতূল মুখার্জির কন্ঠে। আরব সাগরের সূর্যাস্ত দেখিবার সাধ মিটিল না। আমাদের তারকা হোটেলই সন্ধ্যা নামিল। খানিকক্ষণ বাদে দুই খানি গাড়ি আসিল আমরা ইহাতে চাপিয়া সাগর সৈকতের পথে চলিলাম। আমাদের চারচক্র যানটি পাকিস্তানি মিলিটারির যানটি পিছনে পিছনে যাইতেছিলাম। রাতের করাচিতে দেখিতেছিলাম সুউচ্চ অট্টালিকা। সড়কের দুইধারে নিয়নের আলোয় সজ্জিত শত বছরের পুরনো শহর। ধীরে ধীরে আমরা আরব সাগরের তীরে আসিয়া পড়িলাম। সুউচ্চ সার্চ বাতিগুলি সাগর তীরে আসা পর্যটকদের আলোকিত করিয়াছে। সন্ধ্যা সাত ঘটিকা হইবে এখনও শিশু- কিশোর,নারী -পুরুষেরা সাগরের নোনা জলের কেহ পা ভিজাইয়া কেহ বা ক্রীড়া কসরত করিয়া চিত্তের আনন্দে প্রকাশ করিতেছে উল্লেখ্য যে সকল আনন্দই শতভাগ পর্দার সহিত ঘটিতেছিল।
তাহাদের আনন্দে আমাদিগকে আন্দোলিত করিল বটে। আর যাহাই বলুন স্বদেশের সমুদ্র সৈকতের নিকট ইহা খুবই সামান্য বটে। পাকিস্তানিদের কিন্তু সেই সময় দেখিয়া ছিলাম সাপ্তাহিক ছুটির শতভাগ ব্যবহার করিতে।
ঘন্টা খানিক কাটিয়া যাবার আমরা সকলেই রাত্রির আহারের জন্য একমাত্র রেস্তোরাঁ যাহা নাকি সাগর সৈকত লাগোয়া। বাহ্ রেস্তোরায় ঢুকিতে চোখে পড়িল লোকজ সংস্কৃতির ও ঐতিহ্যের ছাপ। কৃষকের চাষাবাদের যন্ত্রপাতি, চারপাই। বাহির থাকিয়া রেস্তোরাঁটিকে মনে হইবে একজন কৃষকের ছোট্ট নীড়। সেই কৃত্রিম নীড়ে ভিতরে ঢুকিয়া প্রথমেই দেখিলাম সারি সারি তাজা সামুদ্রিক মাছের পসরা সাজিয়ে রাখা হইয়াছে। খদ্দের মাছ পছন্দ করিয়া তাহাদের জানাইতে হইবে তাজা মাছ আগুনে ঝলসাইয়া নান রুটি বা সুগন্ধি চিকন চালের বিরয়ানীর সহিত পরিবেশন করা হইবে। আমরা সকলেই সংরক্ষিত আসনে গিয়া বসিলাম। খাবার আসিতে বিলম্ব বলিয়া আপনি বিরক্ত হইবেন ইহার সুযোগ নাই।
পাঠক, এইখানেও গান শুনিবার ব্যবস্থা রহিয়াছে। একদম আমাদের নিকটে আসিয়া আমাদেরই পছন্দসই গান শোনাইয়া যাইবেন। প্রশ্নফাঁসের মতই তাহারা জানিয়া গেল আমরা তাহাদের চিরশত্রু 🇧🇩 বাংলাদেশী। পাকি জাতীয় পোশাকের সহিত মাথায় পাকিদের মিনারওয়ালা টুপি আর গায়কের গলায় ঝুলানো হারমোনিয়ামের সুরটি বলিয়া দিল ইহা আমাদের পরিচিত একটি গান রুনা লায়লার কন্ঠে আমরা শুনিয়াছি …..
“দমা দম মাস কালান্দার আলীসা পয়লা নাম্বার “
আরও দুই একটি গান শুনিয়া ছিলাম কিন্তু আমার রুগ্ন স্মরণশক্তির কারণে তাহা মনে করিতে পারিলাম না নতুবা নানা পদের বাহারি খাবারের স্বাদে বেমালুম ভুলিয়া গিয়াছি।
খাবার শেষ করিয়া গায়কের হাতে বকশিস গুজিয়া দিয়া আবারও শেরাটন হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা হইলাম। রাত্রির দশ ঘটিকা হইবে। ধীরে ধীরে সড়কে লোকসমাগম যানবাহন কমিয়া গিয়াছে। কিন্তু তারকা হোটেলে ঢুকিয়া মনে হইল। সবে মাত্র হোটেলে ধনী অতিথিদের আনাগোনা বাড়িতেছে। কি আশ্চর্য সেই তরুণ সংগীতশিল্পী এখনো বিরতিহীন সংগীত পরিবেশন করিতেছেন। কিছু সময় অতিবাহিত করিলাম কিন্তু গানের কথার অর্থ বুঝিলাম না সংগত কারণে দ্রুত নিজ কক্ষে ফিরিয়া আসিলাম।
Leave a Reply