তাসমিন আফরোজ এর ৩টি কবিতা
১. চলে যাওয়া
বিকেল এলেই ইষৎ পাহাড়ি রাস্তায় চলে যায় মন-
শেকড় ছড়িয়ে ঋজু ভঙ্গিতে যে গাছ দাঁড়িয়ে থাকে,
আর নিরাভরণ রোদে ফাঁকা হয়ে যাওয়া মেঠো পথ –
কানায় কানায় ভরপুর যে দীঘির দেউলিয়া পদ্ম বিলাস-
গুটিয়ে নেয় নিজেকে মাটির অতল তলে!
বিষন্ন স্বরে যাত্রা শুরু করে নাভী থেকে উঠে আসা বংশধর –
আগুনের কোরকে মেখে নেয় জ্যোস্নার পদধ্বনি –
কেউ থাকে না সেখানে
শুধু নিশাচর পাখি
অপার্থিব দৃশ্যে দেখে মানুষ চলে যাচ্ছে বংশধর ফেলে রেখে –
ফেলে রেখে দেহবৈভব বেগুনী মায়াতে…
২. তিলফুল মন
এমন রোদকথা কেনো বলো?
চিবুকে ফোটে তিলফুল-
প্রতিদিন ডুবে যাই
অতল অন্ধকারে,
কিছু ছুঁই নীলাভ হৃদয়-
তিতকুটে সময়ে নেমে আসে ঘ্রাণ
ফণা তুলে আসে বিষও অপ্রতুল!
এমনই তো সব পাখি নির্বোধ
ঝুঁকি নিয়ে উড়ে পথ –
মুঠোতে নিয়ে বহুতল কাজ
স্ফটিক হৃদ-পেয়ালার ঢাল শুধু খনন করে মতামত-
এমন রোদকথা রেখো নিরাপদ আড়ালে!
স্বপ্নের স্রোতও যায় নির্ঘুম
নিজস্ব ষড়জে তুলে রেখে চুম
ভেঙে যেতে যেতে দাঁড়াবে যখন চৌকাঠও আবডালে –
এমন রোদকথা থাকুক থাকুক অন্তহীন বিশুদ্ধ স্বরের পারদ…
৩. বিষাদের স্বরগ্রাম
কতো কথা জমে আছে- রাজবাড়ির কোঠা থেকে চৌদ্দগ্রাম
কতো কথা এখনো খুলেনি ঠোঁট ক্রমশ সাজানো নাম,
গানের স্বরগ্রাম –
সমস্থ শব্দরাও কেমন নির্বিষ হয়ে আছে চিলেকোঠায় –
সমস্থ অক্ষর ভেসে যায় হটাৎ প্লাবিত জ্যোৎস্নায়-
মেঘের আঁচলের শিরশিরানিতে কাহিনীবিলাস রাত বানায়,
অপেক্ষার উপসনালয়-
চোখের কাহারবায় নির্ঘুম ভোর নীরব ধ্বনি তোলে-
মনে হয় মনে হয় বিকেলের নয়নতারায়
ঝিরঝির বৃষ্টিফুল নিয়ে তুমি এলে-
সাথে জলের কোলাহল –
শরীরের বাঁক ঘেঁষে রেখে কথাদের সোরগোল…
Leave a Reply