নূর হোসেন এর ৪টি কবিতা
১. যোগফল
কথার ফাঁকে মুখ ফসকে কিছুটা অশোভন একটি
শব্দ বেড়িয়ে যায়-
আপনজনের কাছে
সে কথাকে কি আর ফিরাতে পারি?
আনমনে গতিবিধি লক্ষ্য করি-
ঈষৎ কর্দমাক্ত দেখি সে চাহুনীতে।
সম্বিত ফিরে আসে আমার
ভাবতে থাকি। ভাবতে থাকি সেকাল একাল- কতজনকে দেয়া কত প্রতিশ্রুতি,প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন-
হিসেব মেলে না। হিসেব মেলে না আমাকে দেয়া পরস্পরের ভালোবাসাটুকুর-
ভালোবাসা যে নেই তা নয়।
তবে তার পুরোটুকু বিনিময়ে-
বিনিময় ছিলো না একজনের ভালোবাসায়-
আজ তিনি নেই। আমার কিছুই নেই ওনাকে ছাড়া। আজ যা পাচ্ছি,পাবো সবই প্রতিদান হিসেবে।
সেজন্য প্রতিদান দেবারও তাড়া নেই।
সবকিছু তো বিনিময়েই আসছে প্রতিদানের আর
প্রশ্ন আসে না-
পৃথিবীর মায়া আর কতদিন আমাকে আকৃষ্ট করবে জানি না-
তবে হিসেবের খাতার যোগফল টানার সময় এসেছে বোধহয়-
২. প্রেয়সী
প্রেয়সী নামটা তুমিই দিয়েছিলে
প্রথমবার ভুল করে উচ্চারণ করেছিলে প্রিয়সী-
আমি বললাম না,নাহ্ শব্দটা প্রেয়সী হবে-
মুচকি হেসে তুমি তখন বললে, ঐ একই কথা,একটা হলেই হলো
আমিও তাতে সায় দিলাম
সায় দিলাম তোমার আদর মাখা ভালবাসায়-
তুমি যে আমাকে অনেক ভালবাসো প্রিয়তমা-
আমি যে তোমার ভালোবাসার কাছে ঋৃণী হয়ে গেলাম-
তোমার ভালোবাসা আমাকে আশা জাগিয়েছে, আমাকে পথ দেখিয়েছে ভালোবাসার-
এখন আমি ভালোবাসতে পারি, আমি ভালোবাসতে শিখেছি-
বসন্তের পাতাঝরা মগডালে
বসে থাকা কোকিলের সুরে সুরে বলবো ভালোবাসি প্রিয়তমা-
আমি তোমাকে ভালোবাসিইইইই…
৩. কর্মফল
অবাক হচ্ছো কেনো??
এই যে মহাপ্রলয় দেখছো এটা তোমাদেরই সৃষ্ট-
পৃথিবীর এ আমুল পরিবর্তনে তোমার যৎসামান্য ভূমিকা অগ্রাহ্য করো কী করে!!
বুকে হাত দাও, ভেবে দেখো-
ভেবে দেখো একবার, তুমি কী করেছো আর কী করা তোমার জন্য বৈধ ছিলো-
এরপরেও যা ঘটবে সেটাকে তুমি অনাকাঙ্খিত বলবে,
তাই তো?
তবে শোনো, কিছু সময়ে কিছু অনাকাঙ্খিত প্রাপ্তি গ্রহণেও নিজেকে প্রস্তুত রেখো-
৪. তুমি এলে
তুমি এলে,
তুমি এলে যখন আমরা আর মানুষ ছিলাম না-
আমরা যখন একে অন্যের রক্ত চোষায় ব্যস্ত-
অনৈতিকতা যখন অনেকটা অপেন সিক্রেটের মতো সমাজের সকল ক্ষেত্রে বিরাজমান,
এমনকি দু’একজন এর বাইরে থাকলেও প্রতিবাদ করেনি, প্রতিবাদের শক্তি ছিলো না বলে-
রাতের অন্ধকারে বাইজি নাচিয়ে দিনে জনতার মঞ্চে সন্নাসী সেজে বক্তৃতা দিতো নেতা-
চড়া সুদে ঋৃণদানকারী লুটেরা ছিলো মহানুভবতার কথা প্রচারে ব্যস্ত,
বিবেকধারীরাও টাকায় উড়ায়েছে সম্মানের পদক-
অথচ, তুমি শেখালে-
তুমিই শেখালে, এর কোনো কিছুই আপনার এখতিয়ারে নয়-
তবে এবারের মতো রক্ষা করো-
আমরা এখন আপনজনকে হারাবার ভয়ে বিষন্নতায় ভুগছি-
আমরা দিশেহারা হচ্ছি দিনকে দিন। আমাদের রক্ষা করো-
Leave a Reply