মনোলগ
মারুফ হোসেন মাহাবুব
এ্যাভাটার সিনেমার সেই বৃক্ষটার কথা
মনে আছে তো!
বৃক্ষটির ছায়াতল ছিলো
সমস্ত প্রার্থনা-আরাধনার তীর্থালয়-
সেই বিশাল বৃক্ষের করুণ নিদারুণ
পতনের দৃশ্য মনে পড়ে-
পতন এভাবেই ঘটে- পতন এভাবেই ঘটানো হয়।
তবু কত সাধ ও স্বপ্নেরা সূর্যের সাথে পরিক্রম করে সারাটা জীবন
তবু অনেক শহর-নগর,পাহাড়-মরু-সাগর
দেখার বাকী রয়ে গেছে,
অনেক আরোপিত যুদ্ধের
এখনো রয়েছে ফয়সালা করবার,
অনেক পথ হাঁটবার আছে- পৃথিবীর পথে পড়ে,
অনেক রাতজাগা কথা বলবার আছে বাকী
অনেক গান বেঁধে রাখা আছে বুকে- এখনো হয় নি গাওয়া।
অনেক কথা গিলে খেয়েছি চৈত্রের মঙ্গায়
অনেক কান্নাজল উড়িয়ে নিয়েছে হাওয়া,
সেসব খুঁজে পেতে হবে বিগত যুগ থেকে।
কোমরে যে তরবারীর খাপ,
বাম হাতে যে অদৃশ্য ঢাল
ডান হাতে আমার যে উদ্যত তলোয়ার-
তার হীরন্ময় ধার এখনো কেমন ঝিকিয়ে ওঠে
এ পূর্বাহ্ণ প্রহরে- সূর্যের তীর্যক আলোয়-
অনেক যুদ্ধ এখনো রয়েছে বাকী-
চোখে এ্যাভাটার সিনেমার বৃক্ষপতন আলোড়ন।
মনে পড়ে সিরাজদ্দৌলার সাথে বিশ্বাসঘাতকদের
কাঁচ-কাঁটা-পেরেকের সিংহাসন প্রহসন!
মনে পড়ে, পনেরো আগষ্টের আগে
৩২ নম্বর বাড়িতে মোশতাকের পাঠানো রান্না করা হাঁসের মাংস সমাচার।
কখনো হ্যামলেটের মনোলগ করি দ্ব্যার্থ
উচ্চারণ-
‘টু বি অর নট টু বি- দ্যাটস দ্যা কোয়েশ্চেন’
কখনো দ্রোহী আমি
জীবনবিষের পেয়ালা হাতে
প্রক্ষেপণ করি সংলাপ সক্রেটিসের মত-
‘আই টু ডাই এন্ড ইউ টু লিভ-
হুইচ ইজ বেটার গড ওনলি নৌজ’।
তবু এ হাতে যে অদৃশ্য তরবারি-
শাঁ শাঁ বাতাসে চালাই-
যেন যাত্রা পালার নিপুন এক রাজকীয় নট,
কখনো আলোকিত মঞ্চের মাঝখানে
হঠাৎ তরবারি চালানো থামিয়ে
জীবনানন্দের মত বলে উঠি- ‘চমৎকার! ধরা যাক দু একটা ইঁদুর এবার’।
কখনো এই জীবনারণ্যের ধারে থেমে গিয়ে
আমিও স্বগতোক্তি করি ওয়ার্ডসওয়ার্থ হয়ে-
‘মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ,
এন্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ।’
Leave a Reply