কোনো এক দূরতম দিনের বিভায়
রেজাউল ইসলাম হাসু
কোনদিক তাকাবে—
নিদানের মায়ায় মোড়ানা
অপুরনো অচলায়তন?
যেদিক তাকাও,
দৃশ্যত—ধু—ধু,
অসীম অসাড়,
নক্ষত্রহীন অন্তরিক্ষ!
বস্তুত—প্রান্তরে প্রান্তরে
থোকা থোকা ধোঁয়াশাধুতুরা
গান ও গন্ধহীন—দোদুল্যমান।
যেন ডেভিডের মরুভূমি।
যেন শীতের সমগ্র থেকে
কুয়াশাকুহকের উড়ালড্রামা!
যেন ফ্রয়েডের একরোখা চোখে
তাকিয়ে আছেন
অন্ধ প্রতিপালক—
তার ডান হাতে চক্র
আর বাঁ হাতে পদ্ম!
কালো কার্পেট মুড়ে
দুহাতে ছড়িয়ে দিচ্ছেন
প্রতিশোধপরাণশীল
কদর্য কফ, থুথু
আর সৃষ্টিবিষষয়ক
সমগ্র শ্বাসকষ্ট!
কোনদিক যাবে—
হে রক্তাভ শাল জড়ানো
অসম সমর?
অশ্রুত—
স্পর্শকাল ফেলে
পলায়নরত
সমূহ সিংহযাপন।
কেবল
চকচকে চুমুবিভ্রম,
বিছানায়
বিপুল বিদুৎবিভ্রাট;
বজ্রপাতে ফুট্টুস
বরুনের কান—
জংশনে জংশনে
জন্মান্ধ জলপ্রপাত।
নির্বিকার ঋতুর
চিবুক বেয়ে
ঝরতি অশ্রু,
আনাজের ভেতর ঘূণপোকা
কামড়ে দিচ্ছে
কাম ও কান্তি—
শান ও সৌম!
রঙ বলতেই
কেবল শোক!
বিভা বলতেই
কেবল সোডিয়াম ঝিলিক!
জীবন বলতেই
যেন আলিপুর পশুশালা!
ল্যাম্পোস্টের নিচে
শয্যাময়ী রোগাটে রোড—
কোনদিক যাবে?
পায়ে পায়ে ঘাতক বেড়ি,
ক্রমহ্রাসমান
সাহসের সীসা;
চারদিক—
কণ্টকবৃষ্টি,
গোঁত্তারত সন্দেহঘুড়ি!
লণ্ডভণ্ড নদীনীড়—
ক্লেদাক্ত ড্রয়িংদিন!
কোনদিক যাবে—
হে ভষ্ম মাটির টেডি বিয়ার?
কেবল ব্রেইলি বয়ানে
বুদবুদ সভ্যতা,
সুতা ছাড়া ছাড়া
যেন একেকটি দেহ;
নিস্তন্দ্র—
চোখ ও চুম্বন!
বিচ্ছেদের ঝমর,
সড়সড় সাপ ও
ছোবলতরঙ্গ;
ঝিঁঝির আঁধার,
প্রবল প্রস্থান—
মর্সিয়ায় ধাবমান,
কাঁচ ও কংক্রিটের
জঙ্গল বেয়ে
যেন জগদ্দল পাথরের
বহতা!
পেনডেমিক
পাপ ও প্রায়শ্চিত্যে
পুড়ন্ত শহর ও সক্রেটিস,
জলপাই কারফিউয়ে
ইশারাহীন ইথার,
সব যেন আলিফ লায়লা—
প্রিডেটর হরর মুভি!
হয়তো—
অন্তরীণ ভেঙে
বেড়িয়ে পড়বে সমূহ শহর
নহবতের নির্ঝরে
নতুন শরীর ও শুরা—সমেত।
পাখি ও পালক ছোঁবে
বিরিশিরি বাতাসের ঠোঁট।
স্ফিত বসন্তে ফিরবে
পেন্সিলপ্রেম।
কুরুকুরু গান ও গন্ধ।
মন্দিরামন।
গঙ্গাগহন।
তেলনুন—
টকমিষ্টিঝাল—
বিবিধ রঙে
বিমূর্ত হবে
এইসব কার্বনকাল।
উৎসবের রাবারে
মূর্ছা যাবে
শোকসন্তরীণ।
ক্ষুধাবিজ্ঞান,
ক্রান্তিকাল,
থিওডোরথুথু,
গুজবদর্শন—
যাবতীয় বিভ্রম—বিভ্রাট ভুলে
উছলাবে ঘরদোর
রসুররোদে।
রাইমাঠে
আঁধারের বেড়ি ফুঁড়ে
ফুটবে ঘাসের ভূগোল
ফড়িঙফুলের বাগান।
উড্ডীনশীল কাঙ্ক্ষারা
ঝাঁকে ঝাঁকে ছোঁবে
সোনালি সারসের পালক;
প্রজাপতিপ্রানের
পুনর্জন্মে
উপচাবে উদ্যান,
সবুজসংগ্রামের মগ্নতায়
ডুবে যাবে
প্রবল পাতাপ্রার্থনা।
বিপুল বৈভবের রুরু রিরংসা—
নিভুনিভু জোনাকজঙ্গল…
জাগবে পুনর্বার
প্রহৃত ঝিঁঝির…
কোনো এক দূরতম
দিনের বিভায়
Leave a Reply