শুক্রবার, ০৯ Jun ২০২৩, ০৬:২৭ অপরাহ্ন

চোখের দেখায় ভুল-এস এম সাথী বেগম

চোখের দেখায় ভুল-এস এম সাথী বেগম

চোখের দেখায় ভুল
এস এম সাথী বেগম

বিকেল ৫টা ৩০ মিনিট রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর মুল গেট পার হয়ে ভিতরে হেঁটে যাচ্ছি পিছনের সিঁড়ির দিকে এগুচ্ছি হাঁটছি ফাঁকা কেউ নেই একটা পিন পরার শব্দও নেই। চিরচেনা মেডিকেল কলেজ অচেনা লাগছে, মানুষ গিজগিজ করে করে পায়ে পায়ে পায়ে বাড়ি গায়ে গায়ে ছোঁয়া মানুষে মানুষে ধাক্কাধাক্কি, কিছুই নেই।জনমানব শুণ্য। একদম ফাঁকা। কিছুটা হাঁটার পর কেনো যেনো শরীরটা ঝাঁকুনি দিয়ে গেলো।ভয় ভয় লাগছে। মনে হচ্ছে পিছনে কেউ হাঁটছে সামনে কেউ বড়বড় চোখ দিয়ে দেখছে। ধ্যাৎ আমি ভুতের ভয় পাচ্ছি কেনো? ভুত বলে কিছু নেই। সিঁড়িটা পিছনের দিকে। যাবো মেডিসিন বিভাগে।পুরুষ ওয়ার্ড মানে ২ নং ওয়ার্ড এ।
দিনের বেলাতেই এ সিঁড়িটা অন্ধকার মনে হয়। আজ আরও অন্ধকার লাগছে। সন্ধা নামছে আকাশটা মেঘে ঢাকা, যেকোন সময় বৃষ্টি হতে পারে।সিঁড়ির প্রথম ধাপ উঠার সময় একটা তরুণ নেমে গেলো তরুণটাকে দেখে আরও ভয় পেলাম মনে হলো ফাঁকা নিরিবিলি পেয়ে যদি ছিনতাই করে? সাথে অফিসিয়াল আইপ্যাড, মোবাইল তিনটা,টাকাও আছে।প্রচন্ড গরমে ঘেমে পিপিই ভিজে দরদর করে ঘাম পরছে পায়ের জুতা ভিজে গেছে। কোনরকমে দো’তালায় উঠে দেখি অনেক রোগী সাথে রোগীর মানুষরা মনে সাহস ফিরে পেলাম। ভাবছি নিচে একটি মানুষও নেই অথচ উপরে অনেক মানুষ। আচ্ছা আজতো মেডিসিন বিভাগে ভর্তি ডেট নয়। তাহলে এতো রোগী কেনো? আর বিকেলে কেনোইবা রোগীরা ওয়াডের বাইরে? ভাবতে ভাবতে মেডিসিন বিভাগে ঢুকে পরেছি সোজা নার্সেস রুমে ঢুকে ফ্যানের নিচে বসে মাথার পিপিই ক্যাপটা খুলে ফেলেছি পাশেই একজন স্টুডেন্ট নার্স। সে বলছে ম্যাডাম খুব ঘেমে গেছেন ফ্যান বরাবর বসেন।এমন সময় রুমা নার্স এলো আমায় দেখে সালাম দিয়ে ম্যাডাম কেমন আছেন? আমি রুমার উত্তর না দিয়ে বললাম আজতো ভর্তি ডেট নয় তাহলে এতো রোগী কেনো? কোন নিয়ম নেই কারো মুখে মাস্ক নেই। সবাই পাশাপাশি দাড়িঁয়ে। রুমা অবাক হয়ে বলে ম্যাডাম কোথায় রোগী দেখলেন? কেনো? ২ ও ১ নং ওয়ার্ডের সামনে। রুমা ভ্রু কু্চকে বলে কি বলেন ম্যাডাম বাইরে কেনো? পুরো মেডিকেলে কোন জনমানবতো দূরের কথা কাকপক্ষিও নেই এমনকি টিকটিকিও নেই। রুমা আপনি ভুল বললেন নিচ তলায় কেউ নেই কিন্তু এই দ্বিতীয় তলায় রোগীর ভীড়।
না ম্যাডাম আমি এলাম কাউকে দেখিনি,একেবারেই ফাঁকা। আমি ভিতরে ভিতরে রেগে বললাম তাহলে চলেন দেখে আসি রোগী আছে কি না?আমাদের সাথে স্টুডেন্ট নার্সটিও এলো। অবাক হলাম একদম ফাঁকা। এতো তারাতারি সব রোগী কোথায় গেলো? বারান্দার রেলিং দিয়ে নিচের দিকে দেখি পুরো রাস্তাটা ফাঁকা জনমানব শুণ্য। ম্যাডাম ডাক শুনতেই চমকে গেলাম
দেখলেন কেউ নেই। আমি নিজের চোখকেতো অন্ধ বলতে পারি না। কি বলবো? চুপ হয়ে ভিতরে ভিতরে কাঁপতে লাগলাম…।

শেয়ার করুন ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge