শুক্রবার, ০৯ Jun ২০২৩, ০৬:০৯ অপরাহ্ন

হুড়াঘর-গোপালচন্দ্র দাস

হুড়াঘর-গোপালচন্দ্র দাস

হুড়াঘর
গোপালচন্দ্র দাস

এক মকর সংক্রান্তিতে ঊনকোটি ত্রিপুরার কুমারঘাটে মনু নদীর চরে পবিত্র,সুবোধ,ভূবন,পরিমল,সুমন পনেরো বিশজন যুবক মিলে আমন ধানের ডাটা ও খরখুটো দিয়ে হুড়াঘর বা মেড়ামেড়ীর ঘর তৈরী করে। সাউন্ড বক্সের ধ্রিম ধ্রিম মিউজিক,মাংস ও বিলাতি মদের নেশায় নেচে গেয়ে বুঁদ হয়ে আছে সবাই।গভীর রাতে সবাই চলে যাওয়ার আগে হুড়াঘরের ভিতর খরখুটো দিয়ে ঠেসে দিয়ে যায়। আজ পবিত্র ও ভূবনের তেমন নেশা হয়নি। তারা স্থানীয় রবিদাস পাড়া থেকে দেশী মদ এনে হুড়াঘরে ঢুকে আকণ্ঠ পান করে খরবেত্তা উপরে চড়িয়ে এখানেই চাদড়মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে।
ভোরে যুবকরা কনকনে শীতে ঠান্ডা জলে স্নান করে আধো অন্ধকারে হুড়াঘরের প্রবেশ পথে কাঁচা বাঁশের টুকরো কটা দিয়ে খরে আগুন ধরিয়ে দিল। বাঁশ বমের মত যতবার ফুটে ততবার ,সবাই মুখে আঙ্গুল বুলিয়ে আদিবাসিদের মত আনন্দে হর্ষধ্বনী করছে।
কিছুক্ষণ পর সুবোধ বলল,পবিত্র আর ভূবনকে দেখছি না যে? ওদের বাড়ির লোক‌ও ওদের খুঁজছে। নব্ব‌ই বছরের ভূবনের দাদামশাই লাঠিভর দিয়ে এসে নাক উঁচিয়ে গন্ধ শূঁকে বুক চাপড়িয়ে বলছেন,আমার নাকে নব্ব‌ই বছরের গন্ধ জমা করা আছেরে।এ গন্ধ সেই গন্ধ,যে বছর কলেরায় পুরা গ্রাম খালি করেছিল আর নদীর পারে জ্বলছিল কাতারে কাতারে শ্মশান।

শেয়ার করুন ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge