আমার বাবা দক্ষিণারঞ্জন ধর
গোবিন্দ ধর
মমতাবিহীন কালস্রোতে
বাংলার রাষ্ট্রসীমা হোতে
নির্বাসিত তুমি
সুন্দরী শ্রীভূমি…
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশ তখন।সিলেট জেলার মৌলভীবাজার মিঞারপাড়ায় দেবেন্দ্রনাথ ধর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন।বিদ্যালয়ের নাম মিঞারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়।দাদু দেবেন্দ্রনাথ ধর সেই বিদ্যালয়ে পঁয়ত্রিশ বছর প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।সেই সময় সিলেট মৌলভীবাজার ছিলো যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নত। ট্রেনে বাসে ভালো যোগাযোগ করা যেতো।
এরকমই এক সময় ২৯শে মে ১৯৩১ সাল বাংলা ১৫ই জৈষ্ঠ্য বাবা দক্ষিণারঞ্জন ধর জন্ম নিলেন।তখন ভারত পাকিস্তান নয় অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশ। সিলেট মৌলভীবাজার এক জেলা।মৌলভীবাজার মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত। এই সিলেটেই
বাবার জন্মের আগে বাংলা সাহিত্যের চিম্ময়পুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগমন ঘটে।৫-৭ নভেম্বর ১৯১৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেট আসেন।কলকাতা থেকে তিনি ট্রেনে রওনা হোন গৌহাটি হয়ে শিলং পৌঁছেন। সেখান থেকে কবি সিলেট ট্রেনে করে ৫ই নভেম্বর রওনা হোন।অনেকেই পথে থামান।এতে তিনি কুলাউড়া পৌঁছাতেই রাত হয়ে গেলো।সেখানে দর্শনার্থীরা থামিয়ে দেওয়ায় রাত হয়।তিনি সিলেটে তিনদিন থাকেন।
বাবার জন্মের ১২বছর আগে রবীন্দ্রনাথ সিলেটে আসেন।এরকম একটি সময় দেবেন্দ্রনাথ ধর ও সরোজিনী ধরের সংসারে বাবা দক্ষিণারঞ্জন ধরের জন্ম।১৯৩১ সালের ২৯শে মে।বাবার প্রয়াণ ১৯৯০ সালের ৩০শে মে বাংলা ১৬ই জৈষ্ঠ্য।
মৌলভীবাজার
বাবার বাবা তাঁর বাবার হাত ধরে শ্রীমঙ্গল রোড়ে হাঁটতে হাঁটতে সারা শহর দেখতেন বৃটিশ পিরিউড।
তখনও নেতাজী রেঙ্গুন যাননি।
গান্ধীজীর টুপিও তখন জনপ্রিয় নয়।
বঙ্গবন্ধুর জয় বাংলা তেমন টেউ হয়ে আসেনি মনুর মুখ অব্দি।
তখনও শ্রীলেট সিলেট হয়নি কিংবা নাগরীলিপিও ধ্বংস হয়নি।
সুতরাং বাবাও জানতেন না ধীরেন দত্ত সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলাভাষার জন্য আইন পাশ করাতে হবে।
চা গাছের দুপাতায় লেগে থাকা সোনার বাংলা
ধানের সবুজ পাতায় সোনার বাংলা
জলের স্রোতে মাছের সাঁতার সোনার বাংলা।
এমন কী ঘটলো
আমার বাবা তাঁর বাবার হাত ধরে সোনার বাংলা ফেলে
চাতলাপুর বর্ডার ক্রস করে হাঁটতে হাঁটতে
ছিঁড়া মানচিত্র বুকে জড়িয়ে চলে গেলেন রাতাছড়ায়?
পায়ের ছাপ আর ধুলো ঘাম বিন্দু বিন্দু গায়ে শুকালে
সারাদিন আনন্দাশ্রু টুপটাপ পড়বেই তো
প্রিয়ভূমি শ্রীভূমি সিলেটও দুজেলায় ভাগ হয়ে
মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল।পুরো শহর শ্রীমঙ্গল মনে হলেও
বাবার ঘাম
তাঁর বাবার ঘাম
তাঁর বাবার বাবার ঘাম
আমার ঘাম হয়ে ঝরলো এই একই পথের ধুলোয়।
ঘাম আর ধুলো মেখে শীতলপাটির মতো শুয়ে থাকবো
সদর হাসপাতালের পেছনের দুতলায় একরাত।
পূর্ব নিবাস
আমাদের বাড়িও ছিলো মৌলবীবাজার।দাদু দেবেন্দ্রনাথ ধর ছিলেন মিঞারপাড়া প্রাইমারী স্কুলের প্রতিষ্টাতা প্রধান শিক্ষক।কাঁটা তার দেখতে দিলো না সেই স্কুল।এই আক্ষেপ রইলো।হয়তো একদিন যাবো।কিন্তু এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া যায় না যে ভারত বাংলাদেশের কাঁটাতার উঠে যাবে।দাদুর ছেঁড়া মানচিত্র বগলে নিয়ে আমার বাবা দক্ষিণারঞ্জন ধর দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে মোটা ভাত মোটা কাপড় তুলে দিতে চাইছিলেন -সে লড়াই আজো আমার অব্যাহত।
আমার দাদুর দেশ পাকিস্তান।আমার বাবার দেশ ছিলো পাকিস্তান।না পাকিস্তানও নয় অভিবক্ত ভারত ছিলো দাদু আর বাবা কাকা আমার মায়ের দেশ।
তারপর পাকিস্তান ও ভারত।রায়ট।বড় রায়ট।দাদুর বুকের পাঁজর থেকে সাহসের হাঁড়গুলো নড়বড়ে হতে লাগলো।ছেঁড়া মানচিত্র নিয়ে দাদু,বাবা কাকা আর মাকে নিয়ে একরাতে ভারতে চলে আসেন ১৯৫০সালে।বগলে মানচিত্র।সমস্ত গতর দেওয়া শ্রম আর ঘাম ঝরিয়ে তিলতিল গড়া বাড়ি,জমি ছেড়ে ইন্ডিয়ায় চলে আসা।বাবার ১৬বছরের চোখ দিয়ে দেখা পাকিস্তানকে ফেলা আসায় জমি হারানোর ব্যথার চেয়ে স্বপ্ন হারানো,হয়তো কোন গাছতলায় হাতরাখা টগবগে দিন বাক্স তোরঙ্গ ফেলে রেখে আসার চেয়ে নিশ্চিত দামি ছিলো।
একজন যুবকের স্বপ্নগুলো মুছে যায় না।আটকে দেয় কাঁটাতার।বাবাও তাঁর বাবার হাত চেপে, দাঁতে দাঁত চেপে কত চেনা গাছ,প্রাণী রেখে চলে আসতে হলো সে এক ইতিহাস।
আমাদের বারো হাল চাষের বলদ ছিল।এক সাথে চাষ দিতে মাঠে নামতো বারো হাল।
সে সব জমিন, গরু, গৃহ পালিত কুকুর,বেড়াল আর বাবার স্বপ্নগুলো পেছনে রইলো।বাবা তাঁর বাবার হাত ধরে বর্ডার পেরিয়ে রাতাছড়ায় আসেন।রাজ আমলের বর্ধিষ্ণ প্রত্যন্তপ্রদেশ আজকের রাতাছড়া।একসময় এখানে প্রচুর বনমোরগ পাওয়া যেতো।ককবরক রাতা মানে মোরগ।আর ছড়া তো ছোট নদী।ছোট নদীর আশপাশে প্রচুর মোরগ দেখা যেত বলে ককবরক ভাষীরা গ্রামকে রাতাছড়া নাম দেন।আবার রাজধর মাণিক্যের রাজ অভিষেক হয় রাতাছড়ায় তাই রাতাছড়া=রাঝ(ধর)->রাজ(ধর)->রাতাছড়া। কালক্রমে আজকের রাতাছড়া।
বর্তমান করইটিলা যা এমড়াপাশা,ডেমডুম,কাঞ্চনবাড়ি,মশাউলি,তরনীনগর,সায়দারপার, ফটিকরায় সব অঞ্চল থেকে আজকের রাতাছড়া ছিলো লোকবসতি সহ ও উন্নত গ্রাম। আমার দাদুও তাই বসবাসের জন্য রাতাছড়াকে কলম্বাসের আমেরিকা আবিস্কার হিসেবেই দেখছিলেন।আজকে থেকে ৬৮বছর আগে বর্তমান কুমারঘাট যা পাবিয়াছড়া নামে পরিচিত ছিলো না।শুধু একটি ছড়ার চিহ্ন নিয়ে কলকল একটি জলধারা তখন দেওনদীর বুকে মিশতো।সুতরাং দাদুর চিন্তায় রাতাছড়া ছিলো আমেরিকা।আমাদের শেকড় বসলো।একটি জেতাগাছ শেকড় উপড়ে দীর্ঘ জার্নি তারপর আবার মাটিতে বসালে তার একটা ঝলসে যাওয়া থাকেই।দাদু,বাবা,কাকার জীবনে এটা এরকমই ছিলো।
বাবার মুখে শুনতাম তারপরও বারকয়েক বাবা চাতলাপুর চেকপোষ্ট ডিঙ্গিয়ে জন্মগ্রামে গেছেন।তখন গাড়ি ছিলো না।পায়ে হেঁটেই বাবা এ পথ পাড়ি দিতেন।আজকের সময় আমাদের কত মর্নিং ইভেনিং ওয়ার্ক।তবু রোগ অসুখের হাত থেকে আমাদের আর রক্ষা নেই।কিন্ত আমার বাবা কোন অসুখের কুকানি অর্থাৎ উঃ আঃ করতে দেখিনি।সন্যাস কেড়ে নিলো বাবাকে তৃতীয়বারের প্ররোচনায়।সেই রাত ১৯৯০ সাল।৩০ মে।রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে প্রতি রাতে গরমের সময় আমাদের বাড়ির রেয়াজ সবাই বাইরে বেঞ্চে বসে,কেউ কেউ চাটাই নিয়ে গল্প করতেন।সেই অভিশপ্ত রাতেও বাবা গল্পটল্প করে বিছানায় উঠেন রাত ১২টায়।রাত ১:৩০মিনিট।আমার চোখের সামনে কোন কথা বলতে না পেরেই স্ট্রোক করেন বাবা।বাইরে থেকে ঘরে এলেন।মাকে বললেন কি করছে শরীর।শুধু এই শুনলাম।তারপর বাবা নেই।আমরা হাসপাতাল নেওয়ার ব্যবস্থা করছি।রাতে পাড়ার ফার্মেসীর একজন কানে কানে বড়দাকে বললেন নেই।বাবা নেই।মা কিছুতেই রাজি নয়।বাবার নেই মানতে রাজি নয়।আঙ্গুলগুলো টানলে গিঁটগুলো শব্দ করছিলো।শরীর গরম তখনো।মা কিছুতেই মানতে রাজী নয়।বাবা নেই। আমরা ভাই বোনরা কেউ মানতে রাজি নয়।ধীরে ধীরে সকাল হলো।ছুটে এলেন চার গ্রামের মানুষজন।উঠোনে বাবা।সবার চোখে জল।সেদিন প্রথম বুঝলাম বাবা মানুষের মনে কি রকম ছিলেন।
তিরিশ বছরেও ভুলা গেলো না বাবার মৃত্যুদিন।সে সময় কি বলেছিলেন। কি বলতে পারেননি।তখন কী অসহায় একজন সন্তানের অবস্থা হয়।বাবা মারা যাচ্ছেন সন্তান দেখছে এই কষ্টের চেয়ে পৃথিবীতে আর কোন কষ্ট বড় নয়।সুতরাং অন্যরা যখন কষ্ট দিয়ে সুখ পায় তখন আমি বাবার মৃত্যুর কথা স্মরণ করি আর মনে মনে ভাবি কি আর দিচ্ছো তোমরা কষ্ট। আমার জীবনের সবচেয়ে ব্যথা যা হয় তা আমি পেয়ে গেছি। বাবার মৃত্যুর সময় গ্রীষ্মের ছুটিতে বিলথৈ স্কুল থেকে রাতাছড়ায় ছুটি কাটাতে আসেন।কিন্তু ছুটির ২৪ দিনের দিন ৩০শে মে ১৯৯০ সালে রাত ১:৩০ মিনিট সন্যাসরোগ বাবাকে কেড়ে নিলো।রাতের খাবার খেয়ে বাড়ির যৌথ পরিবারের বড় উঠোনে ১১:৩০ মিনিট অব্দি সকলের সাথে নানা গল্প শেষে ঘুমাতে যান।রাত ১১:৩০মি নাগাদ টয়লেটে যান।তারপর ১ টা নাগাদ শ্বাসকষ্ট। শ্লেষা গলায় আটকে পড়ে।তারপর হার্ট অ্যাটাক। ১:৩০ মি সব শেষ। একটি কথা মনে পড়ে খুব।আমাদের কাকা সুভাষচন্দ্রকে বললেন :”সুভাষ তুই দেখে রাখিস “।তা কি আর হয়।কখনও কেউ দেখে টেকে রাখলেন কই।আমরা আমাদের নানা অভাব স্বভাবে তিরিশ বছর চলেছি।কেউ কথা রাখেনি।সব কষ্টকে মনে হয় এর চেয়ে কম।বাবার মৃত্যুর চেয়ে অনেক কম।সুতরাং আমার কোন আঘাতই আর আঘাত মনে হয় না।তেমনি মায়ের মৃত্যুও বাবার অভাবকে আরো শূন্যতায় নামিয়ে তিনিও গত হয়েছেন চব্বিশ বছর।মা মারা যান ১৯৯৬ সালের ৪ঠা মে। সুতরাং মাভৈ। এগিয়ে যেতে চাই। যত ব্যথাই হোক এটাই নিয়তি।আমিও তুমিও একদিন সবাই এরকমই কোন এক পরবে কোন এক উৎসবময় সকালে,রাতে কিংবা অন্য কোন সময় চলে যেতে হবেই।এটা নিয়তি।এটা প্রকৃতি। এটাই সৃষ্টিরহস্য।
বাজারে যেতে যেতে বাবা রাস্তায় একটি কাটা পেলে সরিয়ে দিতেন অন্যের অসুবিধা না হয় তা তার জীবনের ব্রত ছিলো।কারো অনিষ্ট কখনো চাননি।
সিলেটমৌলভীবাজারের আকাশের মতো বাবার মন।তাকে আমি জীবনে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। বাবার সাথে নানা সময় হাঁটতে হাঁটতে মাইলের পর মাইল আমি গেছি।ছোট ছোট নানা প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতে নানান জটিলতার সহজ সমাধান বেরিয়ে আসতো তখন।
অতি সামান্য সামান্য বিষয়কেও যে গুরুত্বপূর্ণ করে জীবনের সাথে মিশিয়ে ভাবতে হয় বাবা সে শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
কাঁটাতার
কিছু স্বপ্ন আমার বাবা ওপারে রেখে গেছেন।
বাবার বাবাও কিছু স্বপ্ন ওপারে দেখতেন।
তাঁর বাবাও কিছু স্বপ্ন বুনতেন ওপারেই।
৫২র ভাষা আন্দোলনের আগে বাবার বাবা
আমাদের সকল স্বপ্নকে পাঁজাকোলা করে
এপারে নিয়ে আসেন।
তখনও কাঁটাতার দুই দেশের সীমানায় বসেনি।
বাবা চাতলা বর্ডার ক্রস করে
তাঁর প্রেমিকাকে ফুল দিতে পারতেন।
আমার কিছু মনের মানুষ ওপারে থাকেন
আমি ফুল নিয়ে কাঁটাতারে আসতেই
পাখির মতো সীমানা ভেদ করতে পারি না।
আমার ফুলগুলো সময় মতো প্রিয়জনের কাছে
দিতে পারি না।
আমার স্বপ্নের মতো ফুলও হেজেমজে যায়।
চাতলাপুর বর্ডার পেরিয়ে আসার সময় আমার যা মনে হলো:০২:০৩:২০১৮
চাতলাপুর
৬৮ বছর আগে এই পথেই বাবা দেশের বাড়ির মায়া বুকে কান্না চেপে পেরিয়ে গেছিলেন।
বাবার পায়ের ছাপ লেপ্টে আছে এই পথের ধুলোকণায়।
ধুলোগুলো উড়ে এসে আমার শ্বাসের ভেতর ঢুকে
অবিকল বাবার শরীরের গন্ধ বহুদিন পর পেলাম।
বাবাই বললেন চল ইন্ডিয়ায় যাই।
ইন্ডিয়া মানে ভারত।ভারতদেশ।
প্রস্থান
আজ ৩০শে মে ২০২০।তিরিশ বছর বাবা নেই। এখনও কি নেই? আমার মনের সেতারে বাবার গান থেমে যায়নি কোনদিন।
৩০ মে১৯৯০।আমার জীবনে একটি ঘূর্ণি ঝড়।কোন বিপদ সংকেত না জানিয়েই এসছিলো।আজ একটি ঝড় মাথার উপর দিয়ে বয়ে গেলো।বুকের উপর দিয়ে শনশন বইছে।শীতল।হিম।হাত বাড়িয়ে খড়কুটোর নাগাল পাওয়া দুষ্কর।ঝড় বইছে সমান্তরাল। কখনো বাবার মৃত্যু। কখনো স্বপ্ন।মৃত্যু তো মৃত্যুই।আশা স্বপ্ন।কিংবা আপনজনের মৃত্যু সব কিছুতেই বিশেষ ক্ষতি।
আমার বাবার মৃত্যুও এরকম তুলপাড় তুলেছিলো হৃদয়ে।মন কিছুতেই মানতে পারছিলো না সে বিয়োগ।আজ থেকে সাতাশ বছর আগের একটি ভয়াবহ রাত ছিলে ৩০মে।কিছুতেই এ দিন আমার জীবন থেকে ভুলার নয়।আজ বাবা আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন তা আমাদের কোন সংকেত হয়ে আসেনি। তবুও এসছিলো।তা বাস্তব হয়ে এলো।আজকের ঝড়ও কি জীবনের পার্ট নয়?আমি তারে মেনে নিই বা না নেই জীবন এমনি।জীবন এক আনন্দ বিষাদের কারখানা।আজ আনন্দ তো কাল নিরানন্দ। কেউ সারা জীবন আনন্দে কাটায় এমন হয় না।আমরাও বাবার মৃত্যু মেনে না নিলেও মৃত্যু তো মৃত্যুই।
বাবার চলে যাওয়ার পর আমার ও আমাদের জীবন হয়ে ওঠে অন্ধকার।যেদিকে তাকাই শুধুই অন্ধকার।
বাবাকে নিয়ে প্রাসঙ্গিক একটি কবিতা
তিনি
তিনি হয়তো রাজধর মানিক্য ছিলেন না।
তিনি হয়তো আধিকারিক ছিলেন না।
তিনি হয়তো রাজনৈতিক ছিলেন না।
তিনি হয়তো বগল বাজাতেন না।
তিনি হয়তো সাতেপাঁচে থাকতেন না।
তিনি হয়তো প্রতিবেশির বেড়া টপকাতেন না।
তিনি হয়তো আলটপকা কিছু বলতেন না।
তিনি হয়তো কর্তাপুরুষ ছিলেন না।
তিনি হয়তো কেউ ছিলেন না।
কিন্তু তিনি মানুষ ছিলেন।
প্রবেশ:১৫জৈষ্ঠ(২৯ মে)। প্রস্থান:১৬জৈষ্ঠ(৩০মে)।
বাবাকে হারিয়ে এতিম আমরা।আজও উদ্বাস্তু জীবনের ঘ্রাণ কাটিয়ে আমরা মূল স্রোতে আসতে পারনি।
Leave a Reply