রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ১২:৫৮ অপরাহ্ন

রেজাউল ইসলাম হাসুর ছড়াগুচ্ছ

রেজাউল ইসলাম হাসুর ছড়াগুচ্ছ

রেজাউল ইসলাম হাসুর ছড়াগুচ্ছ

একদিন
খুঁজে নেবো

তির তির
ঝির ঝির
হাওয়ার ভেতর
একদিন
খুঁজে নেবো
আবিরের ভোর।
লাল নীল
আঁকিবুঁকি
মাঠ অবুঝের,
থোকা থোকা
ঝিলমিল
হাসি সবুজের।
বিরিশিরি
বিকেলের
চঞ্চল গানা,
দুপুরের
ঝিঁমঝিঁম
নির্ঝুম ডানা।
দুধশাদা
আধখানা
বাঁকা চাঁদখান,
জোনাকির
নীল নীল
নিভু রাতখান।
রোগহীন
শোকহীন
মায়ার ভেতর
একদিন
খুঁজে নেবো
মায়ের আদর।

নিন্দুক

সেইটাই হয়েছিলো
এইটাতো হয়নি,
ঘরে থাকো আরও আগে
কেনো তারা কয়নি।
এই আছে সেই আছে
আর কিছু হইলে,
কষ্টটা ঘুচে যেতো
কতো আগে নইলে।
এই ভালো সেই ভালো
সব ভালো নয়তো,
আরেকটু ভালো হলে
ভালো হতো হয়তো।
এই চাই সেই চাই
ফের কিছু চাই না,
পাইলেও বকবক
কই কিছু পাই না।
লোকটার কাজ নেই
সঞ্চিত সিন্দুক
ভেঙে ভেঙে খায়দায়
আসলে সে নিন্দুক।

ম্যাড

ডানে ঘুরলে বায়ে চলে বায়ে ঘুরলে ডানে,
জানে না সে এমন কিছু নেই তো অভিধানে।
ঠিকটাকে সে ভুল বলে, ভুলটাকে কয় ঠিক,
রেগে গেলেই পাঠিয়ে দেবে দূর আটলান্টিক।
হেসে দিলে কেঁদে ওঠে, কেঁদে দিলে হাসে,
তার সে হাসির হাঁফরে কেউ ঘেঁসে না আশপাশে।
চিনিকে সে লবণ বলে, লবনকে কয় চিনি,
লকডাউনটা খুললে যাবে পাপুয়া নিউগিনি।
টকটাকে সে ঝাল বলে, ঝালটাকে কয় টক,
ভাব ও বিষয়-আশয় ছাড়া যায় করে বকবক।
নোটকে দেখে পয়সা বলে, পয়সাকে কয় নোট,
চুলগুলো তার উশকো খুশকো, ময়লাটে গার কোট।
সেভিং ছাটিং নেই তো মুখে লম্বাটে তার দাড়ি,
দেখলে যেন মনে হবে কোভিড মহামারি।
দিনকে বলে রজনী আর রজনীকে দিন,
বাচ্চারা তার থাকে নাকি সুদূর ফিলিস্তিন।
চাঁদকে ডাকে সূর্য বলে, সূর্যকে কয় চাঁদ,
পায়ে ছেঁড়া জাপানি সু, হলদেটে সব দাঁত।
ব্যাডকে ডাকে গুড বলে আর গুডকে ভাবে ব্যাড,
পাগলা গারোদ পালিয়ে আসা লোকটা হলো ম্যাড।

মাধ্যাকর্ষণ বল

ঘুরছে গ্রহ ঘুরছে তারা
কিসের বলে বল,
ছড়িয়ে থাকা মহাজগত
থাকছে অবিচল।
উপরে না যেয়ে কেনো
নিচে হলো ফেল
বিশ্বকে তাক করে দেয়া
নিউটনের আপেল!
জোয়ার ভাটা কতো যে সব
ঘটছে অবাক ক্রিয়ে,
কিসের বলে কোন সে মায়া
কোন সে জাদু দিয়ে।
জাদু-মায়া মিথ্যে এসব
বিষয়টা আসল
মাধ্যাকর্ষণ বল।

প্রকৃতির প্রতিশোধে

পাহাড়কে দেখে উচুঁ হতে কভু শিখোনি লোভীর দল,
বুক কেটে তার ডাকাতি করেছো সম্পদ সম্বল।
আকাশকে দেখে হওনি উদার পাঠিয়েছো নভোচারী
নাম না জানা কতো যে গ্রহ গ্রহাণু দিয়েছো পাড়ি।
ফুসফুস খ্যাত আমাজন পুড়ে সবুজ করেছো খুন,
হৃদয়ের পলি ধোয়ায় উড়িয়ে বিজয় করেছো মুন।
সমুদ্র দেখে হওনি স্ফীত ছুড়েছা মিসাইল-বোমা,
দূষণ করেছো কার্বনে বায়ু পাবে কি সেসব ক্ষমা?
রাষ্ট্রের নামে, ধর্মের নামে বানিয়েছো মতবাদ,
কাঁটাতারে তারে জখম করেছো মানবিকতার চাঁদ।
খোদাকেও ভয় পাওনি কখনো শুনে শোক-আহাজারি,
প্রকৃতির সাথে তামাশা করেছো, করেছো খবরদারি।
ফুলকে দেখেও নরোম হওনি, হয়েছো কাঁটার ব্যথা,
নদীর পানিকে পৃথক করেছো, কেড়েছো পাখির কথা।
ছিনিয়ে এনেছো বন্যপ্রাণি গহনের বুক ছিঁড়ে,
বানিয়েছো এক চিড়িয়াখানা, নিজেই বাধা সে নীড়ে ।
কোথায় সে গেলো বাহাদুরি আজ কোথায় সে নভোযান,
কোথায় সে গুলি, মিসাইল-বোমা, রসায়ন শয়তান।
কোথায় সে জ্ঞান-বিজ্ঞান আর গবেষণাগার বল,
কোনো এক অণুজীবে আজ যেন সব অকেজো অচল।
মানুষের মাঝে অমানুষটাকে ফেরাও হারানো বোধে,
নইলে মানুষ হারাবে তোমাকে প্রকৃতির প্রতিশোধে।

শেয়ার করুন ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge