আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের পটভূমি ও বাংলাদেশের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র
রেজাউল করিম মুকুল
এবারের সারা পৃথিবীতে ২১০টি দেশে বা অঞ্চলে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রাদুর্ভাবে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস বা বহুল আলোচিত, ব্যাপক সমাদৃত, বিশ্বব্যাপি প্রচারিত মে দিবস পালনে আনুষ্ঠানিকতার কোন সুযোগ নেই। বালাবাহুল্য আজ গোটা পৃথিবীর মানুষ ধণী-গরীব, কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ সবাই বাধ্যতামূলক গৃহবন্দী বা লকডাউন। শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকলে শ্রমিক শ্রেণির পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণ ক্ষতিগ্রস্হ হন এতে কারো কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়, যদিও সাময়িক তবুও এবারের আনুষ্ঠানিকতা বিবর্জিত মে দিবস গোটাটাই উপলব্ধির, অনুধাবনের। আর এরই মধ্য দিয়ে আমরা ফিরে যেতে পারি সেই আদিম সমাজে, সীমিত আকারের ম্যানুয়াল কলকারখানার যুগে, ফরাসি বিপ্লবের সময়ে শ্রমিকদের ন্যায্য মানবিক কয়েকটি দাবী আদায়ের সংগ্রামের পটভূমিতে। সেইদিনগুলোর শ্রমিক, শ্রম, শ্রমের মূল্যের সাথে আজকের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সুপার ডুপার কম্পিউটারাইজড মোবাইল অনলাইন যুগের তুলনা করে এখন নির্ধারিত হোচ্ছে বিজ্ঞান সম্মত জ্ঞান, আধুনিক যুক্তি নির্ভর চিন্তা, চেতনা, মেধা ও মেধার মূল্য। কলকারখানাগুলোতে একসঙ্গে অনেক শ্রমিকের কাজ করে দেয় মাত্র একজন উচ্চশিক্ষিত শ্রমিকের কম্পিউটারাইজড আঙ্গুলের কমান্ড। কৃষি জমিতে এক হাজার শ্রমিকের কাজ করে দেয় একটি মাত্র কমবাইন্ড হাভেসটর। রাতারাতি মাইলকে মাইল রাস্তা নির্মিত হয় শ্রমিক খুঁজে পাওয়া যায় না। সব কাজ করে দেয় বিজ্ঞানের যন্ত্র দানবরা। অল্প কিছুদিন আগেও এদেশের তরুন সমাজ ছিলো কর্মহীন বেকার। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যানে এখন নিত্যনুতন আয়ের পথ। অন লাইনে স্কুল কলেজে ভর্তি, পরীক্ষার ফল পাওয়া , চাকরির দরখাস্ত , পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন , এডমিট কার্ড সংগ্রহসহ হাজারো ডাউনলোড কাজ হয়ে যায় মোবাইলে কিংবা মাত্র কুড়ি টাকায় ফুটপাতের ইন্টারনেট দোকানে। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন স্যারের লেকচার, রেফারেন্স বুক ডাউনলোড করেই পড়তে হয়। বইয়ের প্রয়োজন নাই। পোষ্ট অফিস, টিএন্ডটি, ফটো স্টুডিও, সিনেমা হলে এখন কেউ যায় না, তাই ওসব বন্ধ হয়ে যাবার পথে। বাড়িতে, পাড়ায় মহল্লায় সিনেমার পর্দার মতো বড় টিভিতে এখন ফুটবল, ক্রিকেট সিনেমা সবই দেখা যায়। ছোট্ট একটা পেনড্রাইভে কত কিছু ভরে আনা যায়, পকেটে রাখা যায়। খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে যাবার দরকার নেই। মোবাইল ফোনে মানি ট্রান্সফার, ডিজিটাল মূদ্রায় কেনা বেচা, হোম সার্ভিস, কত যুবককে ব্যস্ত করে রেখেছে। ঘরে বসে কম্পিউটারে কমান্ড দিয়ে রোজগারও করা যায় হাজার হাজার টাকা। খবরের কাগজ এখন অনলাইনে পড়াও যায়, আবার ছাপাও হয় এক সঙ্গে জেলা বা বিভাগীয় শহরে। অর্থাৎ পরিবহন খরচ ও সময় দুইই বাচে। সাংবদিকরা নিজেরাই কম্পোজ করে মূহুর্তেই ছবি, খবর পাঠাতেও পারেন দেশে বিদেশে ইচ্ছে মতো প্রায় বিনা খরচে। যার হাতে এখন একটা ইন্টারনেটযুক্ত মোবাইল আছে সেই মস্তবড় সাংবাদিক। বিদ্যুতের ইউনিট এখন ব্যাংক থেকে ইচ্ছে মতো কিনে এনে বাতি জ্বালাতে হয়। পাড়ায় মহল্লায় এখন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, শপিং কমপ্লেক্স। স্কয়ারের মতো ঔষধ কোম্পানী এখন পাড়ার মুড়িওয়ালীর ভাত মারে। কাজের বুয়াও আর মসল্লা বাটে না। এখন বড় বড় কোম্পানি গুড়া মসল্লা প্যাকেট করে নিজ পরিবহনে পৌঁছে দেয় পাড়া মহল্লার মুদি দোকানে। সেদিনের সেই কলুও নেই তার বলদও নেই। তেল এখন প্লাসটিকের বোতলে। লেজফিতা ফেরিওয়ালা যাদের আশায় ফেরি করতো সেই মেয়েরাই এখন অবসরে ঘরের জিনিষপত্র বিক্রি করে অন লাইনে, বাড়তি আয় করে। একটা দুইটা নয় হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ পরিবর্তন এনে দিয়েছে প্লাসটিক সামগ্রি। কোনটা চাই? ইথেন গ্যাসের বাইপ্রোডাক্ট প্লাসটিক দানা পলি-ইথিলিন(পলিথিন) এখন মেসিনে কি না বানিয়ে দেয় ভাবুনতো একবার।
১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শহিদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে পালিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যা সচরাচর মে দিবস নামে অভিহিত। প্রতি বছর পয়লা মে তারিখে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে পয়লা মে জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারিভাবে পালিত হয়। সেদিন দৈনিক আট ঘণ্টার কাজের দাবিতে শ্রমিকরা হে মার্কেটে জমায়েত হয়েছিল। তাদেরকে ঘিরে থাকা পুলিশের প্রতি এক অজ্ঞাতনামার বোমা নিক্ষেপের পর পুলিশ শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। ফলে প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক ও পুলিশ নিহত হয়। ১ মে এর ঘটণা এতটুকু হলেও এর পটভূমি অনেক গভিরে গ্রোথিত।
রেনেসা আন্দোলনের ঢেউয়ে গোটা ইউরোপ যখন শিল্প, সাহিত্য, ব্যবসা বান্যিজ্য আর বিজ্ঞানের নুতন নুতন আবিষ্কারে মেতে উঠলো, ধর্মীয় কালাকানুন আর স্বর্গের দরজার চাবী বহনকারী চার্চ যখন একটু একটু করে পিছিয়ে যেতে থাকলো ঠিক ঐ সময়টাতে মালিক আর শ্রমিকদের মধ্যে বেশ কিছু সমস্যা দানা বাধতে শুরু করে। মালিক শ্রমিকের দ্বন্দ্ব খুঁজতে গিয়ে কার্ল মার্কস দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের ত্বত্ত নিয়ে এগিয়ে এলেন। “দুনিয়ার মজদুর এক হও ” ডাক দিয়ে তিনি শ্রমের ন্যায্যমূল্য দাবী করলেন এবং সেটি পাওয়ার জন্য তিনি শ্রেণি সংগ্রাম করতে বললেন যার প্রাপ্তী হবে শ্রেণিহীন সমাজব্যবস্হা , শোষনমুক্ত রাষ্ট্র কাঠামো আর শ্রমিক শ্রেণির রাজত্ব। ১৮১৮ খ্রিঃ জার্মানীর রাইনল্যান্ড শহরের ট্রাইয়ার গ্রামে বাবা জার্মান মা ইহুদী এমন একটি পরিবারে জন্ম নেয়া কার্ল মার্কস ১৮৩৫ থেকে ১৮৪১ খ্রিঃ পর্য্ ন্ত বন এবং বার্লিনে আইন পড়তে গিয়ে পড়লেন ইতিহাস আর দর্শন শাস্ত্র । ধর্মের কঠোর সমালোচক মার্কস উচ্চ শ্রেনির জীবনযাপন করেও শ্রমিক শ্রেণির রাজত্বের কথা ভাবলেন আর ফ্রেডেরিক এঙ্গেলস এর সাথে যৌথভাবে লিখলেন “কমিউনিষ্ট মেনিফেস্টো”। তিনি শ্রমিক শ্রেণিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধনিক, বনিক আর মালিক শ্রেণিকে উৎখাতের মধ্যদিয়ে ক্ষমতা দখলের আহ্বান জানালেন। সে আহ্বানে ইউরোপের কোথাও কোথাও শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলেও ১৮৪৮ খ্রিঃ বিশেষ করে অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনার রাস্তায় সীমাবদ্ধ থাকলো এবং এক পর্যায়ে স্তিমিত হয়ে গেলো। এরপরে তিনি লন্ডনে চলে আসেন এবং ১৮৬৪ খ্রিঃ শ্রমজীবী মানুষের প্রথম সম্মেলনটি করতেও ব্যর্থ হলেন। ১৮৮৩ খ্রিঃ অত্যন্ত ভগ্নস্বাস্হের কার্ল মার্কস লন্ডনেই মারা গেলেন আজকের এই দিনে। তারও আগে ১৮৬৭ খ্রিঃ তার জীবদ্দশায় ধনিক শ্রেণির গতিসূত্র “দাস ক্যাপিটাল” গ্রন্হটির প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয় এবং মৃত্যুর পরে এঙ্গেলস দ্বিতীয় ও তৃতীয় খন্ড প্রকাশ করেন। কার্ল মার্কসের সাম্যবাদের প্রয়োগ ইংল্যান্ড বা শিল্পোন্নত কোন দেশে যেখানে শ্রমিক শ্রেণি বেশী সেখানে হয়নি, হয়েছে ৩০০ বছর ধরে পৈত্রিক সূত্রে রাশিয়ার মালিক দূর্বল জার সম্রাট নিকোলাস ( দ্বিতীয়) এর সম্রাজ্যে।
১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের শতবার্ষিকীতে প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে থেকে শিকাগোতে আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশে ১ মে পালনের প্রস্তাব উত্থাপিত এবং ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে আন্তর্জাতিক দ্বিতীয় কংগ্রেসে এই প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়। এর পরপরই ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে মে দিবসের দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। পরে, ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে আমস্টারডাম শহরে অনুষ্ঠিত সমাজতন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দৈনিক আটঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবি আদায়ের জন্য এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বজুড়ে পয়লা মে তারিখে মিছিল ও শোভাযাত্রা আয়োজন করতে সকল সমাজবাদী গণতান্ত্রিক দল এবং শ্রমিক সংঘের (ট্রেড ইউনিয়ন) প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সেই সম্মেলনে বিশ্বজুড়ে সকল শ্রমিক সংগঠন মে মাসের ১ তারিখে ‘বাধ্যতামূলকভাবে কাজ না-করার’ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অনেক দেশে মে মাসের ১ তারিখকে সরকারি ছুটির দিন কার্যকর করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সমাজতান্ত্রিক, কমিউনিস্ট এবং কিছু কট্টর সংগঠন তাদের দাবি জানানোর জন্য মে দিবসকে মুখ্য দিন হিসাবে বেছে নেয়। কোনো কোনো স্থানে শিকাগোর হে মার্কেটের আত্মত্যাগী শ্রমিকদের স্মরণে আগুনও জ্বালানো হয়ে থাকে। পূর্বতন সোভিয়েত রাষ্ট্র, চিন, কিউবাসহ বিশ্বের অনেক দেশেই মে দিবস একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন হোয়ে উঠে। সেসব দেশে ১মে সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ এবং ভারতেও এই দিনটি যথাযথভাবে পালিত হয়ে আসছে। ভারতে প্রথম মে দিবস পালিত হয় ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে। আমেরিকা ও কানাডাতে অবশ্য সেপ্টেম্বর মাসে শ্রম দিবস পালিত হয়।
বাংলাদেশের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র মরার আগেই মরে যায়। একাত্তরে বাংলাদেশর স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের লক্ষে জাতিয় সমাজতান্ত্রিক দল নামে একটি তারুন্য নির্ভর রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটে। মার্কস-লেলিনের নামও শোনেনি, ছুয়ে দিলে জাত যায় অথবা ওয়াজ-নছিহত শুনে বেহেস্তে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর এমন একটি ধর্মান্ধ জনগোষ্ঠীকে শ্রেনীবৈষম্য ও এর কারণ, পটভূমি ব্যাখ্যা না করে শ্রেনি সংগ্রামের স্বপ্ন দেখাতে চায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ফেরত কতিপয় তরুন ছাত্রনেতার হাতে প্রতিষ্ঠা পাওয়া রাজনৈতিক দল জাতিয় সমাজতান্ত্রিক দল সংক্ষেপে জাসদ। দাস ক্যাপিটালের অতি উৎসাহী পাঠক এ ছাত্রনেতারা নিমিষেই গঠন করে ফেলেন গণবাহিনী, যার কাজ ছিলো শ্রেনিশত্রু ক্ষতম করা। বাহাত্তরের যুদ্ধ বিদ্ধস্হ বাংলাদেশে শ্রেনিশত্রু হিসেবে আক্রান্ত হলো আমদের গ্রামগঞ্জের কিছু টাউট-বাটপার এবং কিছু রিলিফ মেম্বার চেয়ারম্যান। শ্রেনি সংগ্রামের নামে ১৯৭৩ খ্রিঃ জুলাই-আগষ্ট মাসে এরা আক্রমন করলো ১৩টি পুলিশ ফাড়ি, লুট করলো ১৪০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৭ হাজার গোলা বারুদ যা দিয়ে লুট হয়ে গেলো ১৮টি হাটবাজার আর নিহত হলো ২৬ জন নিরিহ মানুষ। এদেরই নেতা তৎকালিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাপটেন মনসুর আলীর বাসভবন ঘেড়াও করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলেন জেলে এবং চিকিৎসার নামে জার্মানীতে দ্বীপান্তর। আর এক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শেষ পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে মুসলিম বাংলা আন্দোলনের নামে ঘোষনা দিলেন ইসলামী জাতিয়তাবাদের। বাকিরা সুবিধা বুঝে তিনটি সরকারের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মন্ত্রীত্ব জোগার করে নিলেন। এ দলটির একাধিক টুকরা সরকারি দল বিরোধী দল যখন যেখানে সুবিধা জোটভুক্ত হয়ে যায়। এদের কেউ কেউ আঙ্গুর গাছের নিচে ঘোড়াঘুড়ি করেও সুবিধা করতে না পেরে হায়! গণতন্ত্র, হায়! গণতন্ত্র করতে করতে রাজনীতিটাই বাদ দিয়ে দেন। এদেরই উৎপাতে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ খ্রিঃ ২০ সেপ্টেম্বর তার নিজের হাতে তৈরী করা সংবিধান সংশোধন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এদেরই এক মহান নেতা সেদিন বলেছিলেন জাতীয় সংসদ শুয়োরের খোয়াড়। পরে তারা সংসদের সদস্য হওয়ার জন্যে অন্দোলনও করেন।
১৯১৭ খ্রিঃ ট্রটস্কির নেতৃত্বে বলসেভিক বাহিনী জারদের ক্ষমতা কেড়ে নেয় এবং ভ,ই,লেনিনের নেতৃত্বে কার্ল মার্কসের কমিউনিজমের আদর্শে প্রথম প্রতিষ্ঠা পায় কমিউনিষ্ট রাষ্ট্র ইউএসএসআর। লেনিনের মৃত্যুর পরে ১৯২৪ খ্রিঃ জোসেপ ষ্টালিন , ১৯৫৬ খ্রিঃ নিকিতা ক্রুসচেভ , ১৯৬৪ খ্রিঃ ক্রুসচেভকে সরিয়ে লিওনিড ব্রেজনেভ এবং ১৯৮৫ খ্রিঃ মিখাইল গর্বাচেভ কমিউনিজমের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন। ক্ষমতায় এসেই তিনি পেরেস্ত্রইকা বা পূণঃগঠনের জন্য গ্লাসনষ্ট বা খোলা জানালা নীতির ঘোষনা দেন যার ফলশ্রুতিতে ১৯৯১ খ্রিঃ একটি পরিকল্পিত অভ্যুত্থানে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন আর সেই সাথে রাশিয়ার সোভিয়েতগুলো প্রত্যেকেই স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে রাশিয়া একটি আনবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিনত হয় এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে অপর শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকার সাথে ঠান্ডা যুদ্ধে লিপ্ত ছিলো। ১৯৯১ খ্রিঃ পরে রাশিয়ার ভাঙ্গনের মধ্যদিয়ে সে অবস্হার পরিবর্তন হয়েছে। সেই সাথে সমাজতন্ত্র কিংবা সাম্যবাদ কর্পূর হয়ে বাতাসেই মিশে গেছে এবং যুগে যুগে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বদলে গেছে আমাদের শ্রমিক সমাজ, শ্রমের মূল্য এবং শ্রমিক শ্রেণির রাজত্বের সংগাও।
Leave a Reply