মঙ্গলবার, ০৬ Jun ২০২৩, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন

কবি তীর্থঙ্কর মৈত্রের দুটি কবিতা

কবি তীর্থঙ্কর মৈত্রের দুটি কবিতা

কবি তীর্থঙ্কর মৈত্রের দুটি কবিতা

পৃথিবীর আরোগ্য ওষুধ

তোমার কাছেতে যাই-মনে মনে কল্প-পথে;
স্পর্শ করিনা তো, শুধু, নীরবে দাঁড়িয়ে দেখি!
ভাঙা চাঁদ দূরে জাগে,তাকিয়ে থাকোতো তুমি-
কি ভাবো জানিনা তো তা!-শোন সান্তরিনা দ্বীপ,
সৌন্দর্য একা যদি, কিছু হয়? দর্শকও যে চাই-
আমি তাই,নানা রঙে গড়ে ওঠা নিসঙ্গ সুন্দর,
তোমার কাছে তো যাই… আহ্বান নেই, তবু নিজ টানে!
নিস্তব্ধতা নিয়ে শুধু একাকী দাঁড়িয়ে থাকো তুমি-
জানোনা এসেছে এক পর্যটক সৌন্দর্যের টানে!
হৃদয়ে তোমার প্রেম, স্নিগ্ধ রূপ,মুগ্ধকারী গুন,
পবিত্রতা, এই সব-পৃথিবীর আরোগ্য ওষুধ।

তালাবন্ধ ঘর,২০২০

যে বাড়িটি একদিন মানুষের জন্য খুলে দিয়ে
বলেছিলাম,-‘এ বাড়ি তোমাদেরও!’ কটাদিন আগে
তাদেরকে জানিয়েছি-‘দয়া করে কেউ এবাড়িতে
আসবে না! ‘ আজ সন্ধ্যে, তালা খোলা পেয়ে, হাসি মুখে
সোজা ঘরে এলো সোমা—আমি ভীত,উত্তেজিত! বলি-
‘ঘরে ঢুকে এলি কেন!’-কালো মুখ করে চলে গেল
বাড়ি বাড়ি কাজ করা রোগা শরীরের সে মেয়েটি!
হয়তো কাজের খোঁজে, এসেছিল! পেটের তাড়না!

সকাল।জানলা খুলি। বসি তার পাশে।বন্ধ ঘরে
আলো এলো, হাওয়া এলো, আহ্! আলো,হাওয়া,আমি
তোমাদেরও কি বলবো-‘কেন, কেন এলে এই ঘরে!
শুভ-স্থলপদ্ম গাছে ঝাপানো সবুজ শিমের লতা,
ছোটো ছোটো মিষ্টি পাখি, শিশু-চঞ্চলতা,ডাক,সব
চোখে,ঘরে, ঢুকে তারা,আমাকে যে আনন্দ দিচ্ছে!
একটি শিমের লতা,অবুঝ শিশুর মতো ঘরে
ঢুকতে চাইছে! মায়া,বড় মায়াময়- কি সবুজ
শরীরটি তার! মন চায় না যে তাকে ফিরিয়ে দিই!
তবু অতি সাবধানে জানলাটিকে আমি
বন্ধ করে দিই, যেন, তার শিশু মনে কোনক্রমে
আঁচড় না লাগে! পাড়ার শিশুরা প্রতিদিন
আমাদের উঠোনেতে আদুল শরীরে খেলা ক’রে যেতো,
ধুলো-কাদা নিয়ে ঘরে ঢুকেই বোলতো-‘জল দাও,
বিস্কুট দাও ‘-তাদেরকে বলেদিয়েছি তো,-‘বাড়ি যাও!
ঘরে থাকো-একদম!’… তীব্র, মায়াহীন, কটু ভাষা!

মনের দরজা-জানালা, আমার এখনো খোলা-
দেখছি, সুন্দর-সুস্থ-পৃথিবীতে আনন্দে খেলছে শিশুরা…

শেয়ার করুন ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge