রুদ্র সাহাদাৎ এর একগুচ্ছ কবিতা
বেঁচে আছি অবাক লাগে
গভীর অন্ধকারে হাঁটছি অন্তহীন গন্তব্যহীন
মাস্কের অন্তরালে মুখগুলো ক্ষণে ক্ষণে মুখ পাল্টায়
দেখতে দেখতে অভ্যস্ত, অবাক লাগে না আর,
মানিয়েই চলি প্রায়
বৃষ্টি হলেই ডেঙ্গু মশার আক্রমণ
শীত ও গ্রীষ্মে করোনাভাইরাস হাসে।
বেঁচে আছি তাসবি জপে জপে
বেঁচে আছি অবাক লাগে।
গভীর অন্ধকারে হাটঁছি অন্তহীন গন্তব্যহীন
কোনো কোনো দিন পথ হারিয়ে উল্টো পথেই হাঁটি।
উড়নচন্ডি মানুষ পথই আমার ঘর পথই ঠিকানা
বুঝি না ভালোবাসা মানে কী
বুঝি না জীবন কাকে বলে …
বোবাদর্শক
নাট্যমঞ্চে আমরা শুধুই বোবাদর্শক
যা দেখায়, দেখি
যা শুনায়, শুনি
দেখতে দেখতে হাসি
শুনতে শুনতে কাঁদি।
আজব মানবজনম,কে কখন কোন চরিত্রে অভিনয়, ঈশ্বর জানেন
অন্যচরিত্রে অভিনয় করতে করতে মানুষ
কখনো সখনো নিজেকেই চিনতে পারে না
ভুলে যায় অতীত, ভুলে যায় ভবিষ্যৎ।
আজব মানবজনম,শ্রদ্ধেয় ভান্তে ঘুমায়, ধর্মগুরু, মৌলানা সাহেবও
মোয়াজ্জিন নিয়ম করে আযান দেয় পাঁচওয়াক্ত
মানুষ ভালোবাসায় বাঁচে
এককথায় একসুরে জেগে ওঠার আহবানে
মানুষে মানুষে ভালবাসায় কেটে যায় আঁধার….
মধ্যবিত্ত
আমাদের হাঁটার পথটি হাসপাতালের দিকেই গেছে
নির্দয় আচরণ বিত্তবানদের, বেঁচে থাকার ভরসা কী
বাড়ছে মৃত্যু বাড়ছে উদ্বেগ স্বজনের বোবাকান্না
বিপর্যস্ত জীবন বিপর্যস্ত আদমমন।
ঊর্ধ্বমুখি ঢেউ ভাঙ্গছে একের পর এক সংসার
মধ্যবিত্ত মানুষ প্রকাশ করা যায় না কিছু
দুচোখে মরুভূমি ধূ ধূ…
চোখজোড়া হাসে না আর
চোখজোড়া হাসে না আর কোনোখানে
চোখজোড়া নদী ও সমুদ্রের ভিতর হেঁটে চলে যায় গন্তব্যহীন
চোখে নেই কোনো আশা ভালোবাসা,দেখছি স্বার্থ নিয়ে সবাই দৌঁড়াচ্ছে
চোখ মনের কথা বলে না আর কোনোক্ষণে
পেয়ে হারানোর যন্ত্রণার গল্প শোনায়
অথচ একদিন চোখের ভিতর স্বপ্ন ছিলো
স্বপ্নের ভিতর রাজা ছিলো,রাণী ছিলো,রাজপুত্র ছিলো
আকস্মিক কি যে হলো ভাঙ্গা মনের মানুষ
অন্ধ চোখে দ্বন্দ্ব দেখি উলটফালট শুনছি সবই
বেসুরে গান যত্রতত্র অষ্টপ্রহর
চোখজোড়া হাসে না আর কোনোখানে।
হোম কোয়ারেন্টাইন ইন গোরকঘাটা
স্তব্ধ চেনা শহর নগর বন্দর
স্তব্ধ চেনা পার্ক রেস্তোরাঁ,পরিচিত পথ মাঠ ঘাট
স্তব্ধতা বুকে জড়িয়ে প্রকৃতি ঘুমিয়ে হাসে
সমুদ্র শহরে গোলাপী ডলপিন নাচে ঢেউয়ে তালে তালে
তা থৈ থৈ তা থৈ থৈ
ঝাউবন বাজায় বাঁশি নব সুরে নব মিউজিক।
মানুষ আশায় বাঁচে তাই এখনো আছি বেঁচে
আবারো পূর্ব দিগন্তে উঠবে সূর্য্য ঝলমলে আলোয়।
স্তব্ধ চেনা শহর নগর বন্দর
স্তব্ধ চেনা পার্ক রেস্তোরাঁ পরিচিত পথ মাঠ ঘাট।
শত ইচ্ছে করলেও হাটেঁ না পা,
কিছুই দেখতে চায় না মুখ
হোম কোয়ারেন্টাইন ইন গোরকঘাটা,মহেশখালী
স্তব্ধতা বুকে জড়িয়ে আমিও ঘুমিয়ে থাকি
সহস্র স্বপ্ন দেখে তবুও জোড়া চোখ…..
শুনছি গান প্রকৃতির
হতাশার রাজ্যে ডুবে যাচ্ছি চৌদিক নিঃশ্চুপ
মাঝেমাঝে বাউণ্ডুলে বাতাস বয়ে যায়
পেয়ে হারানোর যন্ত্রণা সইতে পারবে না জেনে
সবাই গেছে চলে হোম কোয়ারেন্টাইনে।
আমিও সাময়িক সামাজিক দূরত্বে আছি
কারো সাথেই তেমন হয় না দেখা
মানুষ নিজে নিজে সবাই একা।
সবুজ অরণ্যে মৈনাকপর্বতে শুয়ে শুয়ে
শুনছি গান প্রকৃতির।
Leave a Reply