সাম্প্রতিক সময়ের কবিতা
মজনুর রহমান
আমরা.
আমরা চাই তোমাদের অসুখ না করুক
যদিও করে, চাই ডাক্তার তোমাদের সেবা করুক
সেবা করতে না পারলে ওরা মরে যাক-
যদি ডাক্তার অথবা তোমাদের কেউ মরে যায়
তাহলে পুলিশ তোমাদের দাফন করুক,
দাফন করতে না চাইলে তারাও মরুক-
আমরা চাই মানুষ ডাক্তার আর পুলিশ
এদের কারও মরে যাওয়া ঠিক হবে না;
যদিওবা মরেই যায়, কী আর করা,
লাশগুলো হেঁটে হেঁটে কবরে চলে যাক;
কবরে গেলেও আমরা যথাসাথ্য বাধা দিব
কেননা আমরা আগেই মরতে নিষেধ করেছি,
তবু যেহেতু মরেই গেছো, এখন অন্য কবরে যাও।
সঙ্গরোধ.
একটা জানালার গ্রিল ধরে ঝুলে আছি বহুকাল
কেউ ইশারা করলেই লাফিয়ে পড়বো নিখিলের বুকে;
শুধু ঝিরিঝিরি বাতাসের তোড়ে
ভেসে আসা পুবালি নীরবতায়-
টিকে থাকা যাচ্ছে না এই গ্রিল টেনে ধরে।
আমাকে আরও কিছু শক্তি দাও
আমাকে আরও কিছু স্থৈর্য দাও
যেন ইশারা আসার দিনতক ধরে রাখা যায় এই লোহা,
এরপর হাত ছেড়ে দেয়া
এরপর পা ছেড়ে দেয়া-
টুপ করে ডুবে যাওয়া, আর ভেসে না ওঠা নিখিলের বুকে।
গোল গ্রহের ভেতরে.
আমরা যে কাঁদছি
হাতে গ্লোভস থাকায় মুছতে পারছি না
আমাদের মুখে মাস্ক থাকায় সেগুলোও ভিজে যাচ্ছে।
আমরা যে হাসছি মুখ ঢেকে রাখায় বোঝা যাচ্ছে না
আমরা যে চিৎকার করছি শাট ডাউন থাকায় শোনা যাচ্ছে না।
আমরা যে কাঁদি তা কে কবে বুঝেছে?
আমরা যে হাসি তা কে কবে খেয়াল করেছে?
আমরা যে হাসতে হাসতে কাঁদি
আর কাঁদতে কাঁদতে হাসি
তার নমুনা কোথাও পাওয়া যাবে না।
একটা গোলাকার গ্রহের ভেতরে আমরা সবাই চিৎকার করে কাঁদছি,
কেউ আমাদের শুনছে না।
Leave a Reply