রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন

চলতি পথের গপ্পো ৫-সাব্বির হোসেন

চলতি পথের গপ্পো ৫-সাব্বির হোসেন

চলতি পথের গপ্পো ৫
সাব্বির হোসেন

আজ চার দিন হল জাকিরের মা কাজে আসেনি। গত দুদিন মোবাইল করেছিলাম বলে আজ ফোন বন্ধ করে রেখেছে সকাল থেকে। অনেকেই কাজের লোককে ছাঁটিয়ে দিয়েছেন ভাইরাসের কারণে। যদি ধরা যায় পুরো দেশ লক ডাউন বলে ঘর থেকে বের হতে পাচ্ছেন না জাকিরের মা তবে তা মস্ত ভুল হবে। কারণ, তার বাড়ি আর আমার বাড়ি পাড়ার এ মোড় আর ও মোড়। শুধু তাই নয়, পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাকে রাখা হয়েছে। পোষাক দুটো। ঘরে বাহিরে পরনের দুই সেট ড্রেস। যথারীতি আবশ্যক ব্যবহার্য মাস্ক তো আছেই সাথে সাবানের সম্পূর্ণ ব্যবহারবিধিতে তাকে বাধ্য করা হয়েছে। সচেতনতা বলে কথা। নিজেকে তো সুস্থ রাখতেই হবে সাথে তাকেও। আজ অতিষ্ঠ হয়ে খোঁজ নিয়ে গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি, এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে যে ত্রাণ বিতরণ হয়েছে এতে জাকিরের মায়ের ঘরে কেজি বিশেক চাল, আলু, ডাল, এক কেজি ভজ্য তৈল সম্ভাব্য সাথে আটা মজুদ হয়েছে। শুধু তাই নয় বাড়ি গিয়ে জানতে পারলাম এখন সে অন্য পাড়ায় ঢু মেরেছে জাকির সমেত আরও কিছু ফাও আদায়ের লক্ষে। প্রচন্ড রেগেমেগে আমার আপাদমস্তক আগুনের মত গমগম করছে। রাস্তায় ফিরতি ঘাটে সূর্যের প্রকাণ্ডকায় উত্তাপ আমাকে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে। এত লোভ নিয়ে মানুষ সামনে এগুবে কি করে? আবার কিছুদিন পর এসে হাতেপায়ে পড়ে নানান অজুহাতে টাকা হাতানোর পায়তারা করবে। তারপর বলবে, সপ্তাহের কিস্তি বাকি। কামাইয়ের টাকা যায় কোথায়? কাজের লোকের সমস্যা আমাদের দেশে জাতীয় সমস্যা হিসেবে গণ্য হবে ক’দিন পর।
বাসায় ঢুকে চিৎকার করে বললাম – “ঘরের শত্রু বিভীষণ।
ও না না থুক্কু, ঘরের শত্রু জাকিরের মা।”

শেয়ার করুন ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge