একদিন ছুটি শেষ হবে, আবার অফিসে যাব
ব্রত রায়
অফিস বিল্ডিংটাকে লাগছে পুরাকীর্তির মতো। অবশ্য লাগারই কথা। আবুল নিজে কি আর তরুণ আছে? মাথার সেই ঢেউ খেলানো বাবরি চুল কই? এখন শত চেষ্টা করেও টাক ঢাকতে পারে না সে। মুখের সুন্নাতি দাড়িও অফিসের কেউ দেখেনি।
মিস শিউলি এমডি সাহেবের পিএস। রূপ আর পদের গর্বে তার মাটিতে পা পড়ত না। সেই দিন আর নেই। রূপতো অস্তমান সূর্যের মতো যায় যায়। পদও আর থাকে কিনা কে জানে! বুড়িরা কি আর এমডি সাহেবের পিএস হয়? তা এমডি যতই বুড়ো হোক না কেন!
নুরুন্নাহার বেগম এই অফিসের একাউন্ট্যান্ট। পেছনের দিকে একটা ঘরে বসে। অনেকদিন অফিস বন্ধ ছিল বলে রুমগুলোতে একটা ভ্যাপসা গন্ধ। নাহারের গন্ধে এলার্জি আছে। সে দ্রুতই জানালা খুলে দিল। ওমা, জানালার পাশে এই তেঁতুলগাছটা এলো কোথা থেকে? এই রে! মনে পড়ে গেছে! অফিস ছুটি হওয়ার আগে মেজ মেয়ে পেটে এসেছিল তার। খুব টক খেতে ইচ্ছে করত। সেদিন তেঁতুলের আচার খেয়ে বিচি ফেলেছিল নিচে!
অফিসে ঢুকতে না ঢুকতেই কমার্শিয়ালের হাশেম সাহেব এলেন। হাতে বিয়ের কার্ড। তাঁর একমাত্র মেয়ে জান্নাতের বিয়ে আগামী সপ্তাহে। অফিস ছুটি হওয়ার আগের সপ্তাহে মিষ্টি এনেছিলেন হাশেম সাহেব – জান্নাত ভিকারুননিসায় চান্স পেয়েছে! দিন কত দ্রুত চলে যায়!
সুবল বাবুকে দেখে সবাই অবাক। মাথায় বিরাট টিকি। রামকৃষ্ণ মিশনের সদস্য হয়েছেন। অথচ লোকটি ছিলেন পাঁড় নাস্তিক।
একটু পরেই সবাইকে এইচআর থেকে ফোন করে বলা হলো মিটিং রুমে জড়ো হতে। সিইও রুশদী সাহেবের ফেয়ারওয়েল। ইনি ছুটির আগের দিনই জয়েন করেছিলেন, সেদিনও মিটিং হয়েছিল! রিটায়ারমেন্ট এসে গেছে ছুটিতে বাড়ি বসে বসেই!
Leave a Reply