তুমি যেন প্রাচীন ইয়ামে
মূল : সাইমন আর্মিতেজ
ভূমিকা ও অনুবাদ : রেজাউল ইসলাম হাসু
সাইমন আর্মিতেজ-ইংল্যান্ড
সাইমন আর্মিতেজ ১৯৬৩ সালের ২৬ মে ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের ওয়েস্ট রাইডিং হাডার্সফিল্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাত্র ১০ বছর বয়সে প্রথম কবিতা লিখেন। ২০১১ সালে তিনি শেফল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিতার অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ হন। ২০১৯ সালে পয়েট ১০ বছরের জন্য ক্যারল অন ডফিতে পয়েট লরিয়েট হিসেবে নিযুক্ত হন। আর্মিটেজের কাব্য সংকলনে বুক অফ ম্যাচেস (১৯৯৩) এবং মৃত সমুদ্রের কবিতা (১৯৯৫) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তিনি দুটি উপন্যাস লিখেছেন। এক. লিটল গ্রিন ম্যান (২০০১) এবং দুই. দ্য হোয়াইট স্টাফ (২০০৪)। তার উল্লেখ্যযোগ্য পুরস্কারসমূহ হলো : পিটার সিমন্স পুরষ্কার (১৯৮২), এরিক গ্রেগরি পুরষ্কার (১৯৮৮), সানডে টাইমস অফ দ্য ইয়ার লেখক (১৯৯৩) ইত্যাদি। করোনা ভাইরাসে পুরো পৃথিবী যেন লকডাউন হয়ে গেছে। মানুষ যেন আজ গৃহবন্দি। জীবন ও স্বপ্ন যেন আজ ছন্দপতন। ভবিষ্যৎ যেন এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী। তবু কবি স্বপ্ন দেখছেন, দেখাচ্ছেন। তার বিশ্বাস, এই মহামারি আর ইয়ামের মতো অভিশম্পাত একদিন থেমে যাবে। সুদীঘ বৃষ্টির পরে হেসে উঠবে উজ্জ্বল পদ্ম।
এবং জাগ্রত স্বপ্ন
আমি পালাতে পারছি না,
নীল মাছির সংক্রমণ থেকে
পালাতে পারছি না;
দর্জির কান্নায় সিক্ত কাপড়ের
কুঁচকানো সেলাইয়ের ভেতর
তুমি যেন প্রাচীন ইয়ামে!
এরপর
হতে পারবো না আড়ালে
আবডাল
তোমার নিষ্ঠরতা থেকে,
অন্ধকার গর্তে
যেন শেয়ালের চোখ জ্বলছে!
সন্ত্রস্ত হও মদ,
অভিশপ্ত সম্পদ;
ইমোট সিডল
আর রোলান্ড টরের মতো
হৃদয়কে ছেয়ে যাচ্ছে
বিষাদের বিতৃষ্ণা!
দুপাশে
কোয়ারেন্টাইন দেয়াল,
নিঃশব্দ ভালোবাসার নদী
ততক্ষণ প্রবাহিত থাক
যতক্ষণ না মিলিত হয়
মন-মোহনার বাঁক।
এ যেন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে
স্বপ্ন দেখার মতো!
তবুও স্বপ্ন দেখছি,
দেখছি
ক্ষণস্থায়ী মেঘের ভেতর
হারানো প্রিয়তমাকে।
দেখছি
নির্বাসিত দেবদূতকে।
পার্থিবতার বুকে
প্রবাহিত বাতাসকে দেখছি।
দীর্ঘ উটের সারি এবং
গবাদি পশুর বাহন দেখছি।
দেখছি তরঙ্গমালা।
পেখম গুটিয়ে পলাতক ময়ূর,
পরিশোভিত হাতিশালা।
দেখছি
নকশাদার শয়নকক্ষ।
মাঠ-ঘাট।
বাঁশবন,
হিমায়লয়চূড়া,
জলপ্রপাত,
লতাগুল্ম।
দেখছি
সারসের ক্ষিপ্ত ডানা,
সুদীর্ঘ বৃষ্টির পরে উজ্জ্বল পদ্ম।
অস্বাভাবিক
অভিশপ্ত বাতাসকে দেখছি।
তবু অবশেষে
কোনো এক সময়
এই ক্লেদাক্ত যাত্রা
থেমে যাবে
থেমে যাবে
থেমে যাবে…
Leave a Reply