বুধবার, ০৭ Jun ২০২৩, ১০:১০ অপরাহ্ন

নারী দিবসে চাওয়া-মিম্ মি

নারী দিবসে চাওয়া-মিম্ মি

নারী দিবসে চাওয়া
মিম্ মি

একজন সাধারণ নারী হিসেবে আমার কতগুলো চাওয়া পাওয়া আছে নারী দিবসের প্রাক্কালে-
পরিবারের কাছে চাই-
বাবার বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি, জামাইর বাড়ি, ছেলের বাড়ি সবগুলোই যেন শুধু মুখে মুখে আমার বাসা নাহয়ে কার্যতঃই আমার বাসা হয়ে ওঠে। কেউই যেন থ্রেট করতে না পারে — ‘যা বের হয়ে যা আমার বাসা থেকে’/ ‘বিয়ের পরে বাপের বাড়ি আবার কি’ /
‘ যাই ঘটুক স্বামীর বাড়িতেই এডজাষ্ট করে নে’ / ‘ মেয়েদেরকে একটু মানিয়ে নিতে হয়’…
ইত্যাদি টাইপ ভয়ংকর কথাগুলো ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের পরিস্থিতিতে যেন শুনতে নাহয় পৃথিবীর কোন মেয়েকে।
বাসাতে ঘর সংসারের কাজে আমার পরিবারের সদস্যরা সহায়তা করুক আমাকে। কারন সংসারটা তো আমার একার না। আমি রান্না করলে অন্য সদস্যরা যেন ক্লিনিং, ডাস্টিং করে।
রোজ তিনবেলা গরম খাবার যেন আমাকেই রান্না করতে না হয়। কখনো কখনো ওভেনে গরম খাবারটাও সবাই যেন হাসি মুখে খায়। সংসারে রান্না করাটাই যেন আমার একমাত্র কাজ না হয়।
আমি যদি হোম মেকার হই তাহলে আমার কাজটাকে যেন বলা না হয় “সারাদিন তো বাসাতেই থাক। তুমি কি বুঝবা দুনিয়াদারি?” সপ্তাহের একটা দিন বিশ্রামের সুযোগ যেন আমাকেও দেয়া হয়। কারন আমি অফিসের মতো আট ঘন্টার না, চব্বিশ ঘন্টার সার্ভিস প্রোভাইড করি আমার পরিবারের জন্য।
কর্মস্থলের কাছে চাই
মেয়ে বলেই নারীরা বাড়তি সুবিধা পায়- এই ধরনের বাকওয়াশ কথা বলা বন্ধ হোক। কাজ করেই আমরা নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।
কর্মস্হলে আমার সন্তানকে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত রাখার জন্য ডে কেয়ার চাই আমি। যাতে আমি আরো মনোযোগ দিয়ে আমার কাজটা করতে পারি।
কর্মস্হলে নিরাপদ পরিবেশ চাই আমি।
সমাজের কাছে চাই
নারী বলে আমার পোশাকের দোষ না ধরুক। পোশাক আমার চয়েজ। বরং সমাজ আমার দিকে তাকানোর চোখটা বদলে ফেলুক।
প্রয়োজন হলে রাতে ঘর থেকে বের হতে যেন আতঙ্কিত না হই আমি। অফিসে আমার নাইট ডিউটি থাকতে পারে। তখন যেন কেউ ফিসফাস না করে আমার কাজ নিয়ে। আমার পরিবারের কেউ অসুস্থ হতে পারে তার জন্য ওষুধ কিনতে মাঝরাতে নিশ্চিন্তে যেন আমি বাইরে পা ফেলতে পারি ।
‘সাথে পুরুষ/ অভিভাবক নাই কেউ?’-এই আজগুবি প্রশ্নটা যেন বাড়ি ভাড়া করাল সময় থেকে শুরু করে হাসপাতালে ভর্তি হবার সময়েও শুনতে না হয় একজন আত্মনির্ভরশীল নারীকে ।
আমার মন চাইলে আমি যেন একা একাই পুরো দেশটা ঘুরে দেখতে পারি। পরিবার যেন আমার নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে। পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যেন আমি ব্যাগে এন্ডিকাটর, পেপার স্প্রে ছাড়াই চলাফেরা করতে পারি।
পৃথিবীর কাছে চাই
“ও তো মেয়ে, পারবে না এই কাজটা করতে”- এই কথাটা কখনোই না শুনতে।

শেয়ার করুন ..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge