বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন

মালিপাখির একগুচ্ছ কবিতা

মালিপাখির একগুচ্ছ কবিতা

মালিপাখির একগুচ্ছ কবিতা

আকুম বাকুম পাখি

সুরের ভেলায় মেঘ ভেসে যায় — মেঘের ফাঁকে-ফাঁকে,
ভর দুপুরের রোদের আতর ছড়িয়ে কেবল ু থাকে !
ছড়িয়ে থাকে পালক মাটির গভীর ভালোবাসা ।
দেবদারু গাছ দুলতে থাকে টাপুর টুপুর আশায় — !
সেই আশাতে অলীক ভূবন পরায় প্রীতির রাখী ।
বুকের ভিতর মোহর ছড়ায় আকুম বাকুম পাখি !
এখনও সেই কিশোরী গ্রাম গান শোনাতে আসে ।
এখনও সেই পাহাড়ী পথ চাঁদকে ভালোবাসে।
তারারা সব সদলবলে রাতকে ডেকে তুলে,
ভূবন টাকে দেয় সাজিয়ে রঙীন ফুলে ফুলে ।
বইতে থাকে খুশির বাতাস, ঝুর ঝুরে দিন আঁকি ।
বুকের ভিতর মোহর ছড়ায় আকুম বাকুম পাখি !

ভূত মানে ফুল

মন উড়ে যায় চরকি ফুলে
একটা কোলাজ ইচ্ছে !
বাঁশ বাগানের হাওয়ায় দুলে
চাঁদকে চিঠি দিচ্ছে !
পুব কোণে খুব মেঘ জমেছে,
তার মানে তিন সত্যি !
হুতুম পুরের ভুতুম নেচে
বানায় ভুতের পথ্যি !
কুটুম বলে, কাটুম ভায়া
ভূত চেনা খুব শক্ত !
দাও দেখি ডুব,এইতো ছায়া
হও ভূতেদের ভক্ত !
ভূত মানে ভয় ? ঘুরছে মাথা ?
ভূত – না, নাচের ছন্দ !
ভূত মানে ফুল, শিউলি পাতা,
বাবলা গাছের গন্ধ!

মা

যাদুর মায়া পূবের কোণে
সোনার থালায় হাসি!
উদাস আমি, আপন মনে
মেঘের ভেলায় ভাসি!
সবুজ পাতা বাঁশের বনে
কেবল বাজায় বাঁশি!
গাছের ডালে ফুলের কুঁড়ি
পাগল পাগল করা!
নোলক, বালা, কাঁচের চুড়ি,
সিঁথেয় সিঁদুর পরা!
আমার মা যে শিমুল বুড়ি
মুঠোয় আকাশ ধরা!

তুলিতে ভুবন আঁকি

ও আমার হলুদ বিকেল
ও আমার কলুদ নদী
দুটি পা ধুইয়ে দেবে
ছুটিতে বেরই যদি
ও আমার তালুক হাওয়া
ও আমার শালুক মাসি
এখনও রাজার মতো
জানোনা বাজাই বাঁশি
ও আমার প্রানের আকাশ
ও আমার গানের বাড়ি
আঁচলে কি বেঁধেছো
নদী না তাল সুপারি
ও আমার শিউলি সকাল
ও আমার রাখাল পাখি
বোসোনা চুপটি করে
তুলিতে ভুবন আঁকি

আমোদে তুমুল ভাসি

ও আমার মাছরাঙা ভোর
ও আমার আতর পাড়া !
দ্যাখোনা দোলাই বুকে
আতুসি জবার চারা !!

ও আমার টুনটুনি গান
ও আমার বাবুই ঘুড়ি !
নাচোনা দু – হাত তুলে
আলোতে ভূবন মুড়ি !!

ও আমার বুলবুলি ঢেউ
ও আমার আতসবাজি !
সাজোনা আবার সুখে
জোনাকি বাউল মাঝি !!

ও আমার জলপিপি দেশ
ও আমার ঝিনুক বাঁশি !
ওড়োনা বাঁধন খুলে —
আমোদে তুমুল ভাসি !!

বাঁচা

সুলেখা তুই বন্ধু খুঁজিস?
সুলেখা তুই ফুল,
রাখবি কোথায়? কবিতো সেই
লেখাতে মশগুল-!
ভাষা খুঁজছে পাগল কবি ,
আয় ও ভাষা আয়!
লবণ জলে ভাসছে দু – চোখ,
শব্দ শোনা যায়!
সুলেখা তুই বন্ধু খুঁজিস?
সুলেখা দ্যাখ তুই,
রুগ্ন কবি । শীর্ণ দ-ু হাত!
আকাশটা ছুঁই ছুঁই-!
কবিকে তুই সুস্থ করার
নিবিনা আজ ভার?
তুইতো মায়া, তোর দু – চোখেই
অরণ্য সম্ভার-
ছড়িয়ে আছে ইতস্তত!
অচেনা সব ঘাস,
বলছে সবাই কবির সাথে
খেলবো বারোমাস!
উড়ে যাচ্ছে বলাকা দল,
কবির মাথা ভার!
সুলেখা আজ কবিকে তোর
বাঁচানো দরকার!

হীরের কুচি ভোর

বলতে পারিস নাম?
এইতো সবে পেরিয়ে এলাম পারুলবতী গ্রাম!
তাইকি বাজে আলো?
হতেও পারে,পথ হারিয়ে যা দেখি সব ভালো!
ফুল বুঝি তোর হাতে?
তা জানিনা, সারা শরীর ভিজেছে জোছনা তে!
দিসনে কেন ধরা?
মনযে আমার পাহাড় চূড়োর পালক দিয়ে গড়া!
তুইকি পলাশ বাড়ি?
ঠিক বলেছ, সারা আকাশ ঢেউ ছড়াতে পারি!
লিখিস চিঠি কাকে?
যে আমাকে বাতাস বলে বিভোর হয়ে ডাকে!
মাথায় কিরে তোর?
ও কিছু নয়, একটু খানি হীরের কুচি ভোর!

শেয়ার করুন ..

Comments are closed.




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge