জীবনের মায়া
রোজী নাথ
সামান্য এই আটপৌরে জীবন কত কি শেখায় –
কখনও মোহনায় অনাবিল খুশির বন্যা বয়ে যায়;
আবার কখনও মরিচিকাময় ধূ ধূ মরুভূমি।
জীবনের প্রতিটি চেনা মোড়ে কতই না আলোছায়ার
মায়াজাল।
কখনও জীবন আটকে পড়ে চিলেকোঠায় একচিলতে আকাশের নীচে
নির্বিকার তারা আর একফালি চাঁদের আলো মেখে।
বারান্দার মরচে ধরা গ্রীলের ফাঁকে আজ আমার জীবন,
এ যেন আমার নিঃস্বঙ্গের একা পৃথিবী।
কৈশোর বেলার ভীষন দুরন্ত সেই ডানপিটে জীবন আর যৌবনের দোলনায়
দোল খাওয়া রঙিন ভূবন এসব আজ ধূসর রঙের নীচে ছাইচাপা
চশমার ঘষা কাঁচে সবই ঘোলাটে অতীত ।
ফেলে আসা সেই চনমনে রামধনু দিনগুলো এখন নেহাতই জলছবি অ্যলবাম।
এই নির্জনবেলার আঁচলের গাঁটে বাঁধা কবিতাই এখন পরম সুখের সহায়।
সকালের বিরহী বারান্দায় দু-একটি চড়ুই শালিকের দলছুট আনাগোনা
নীরব বুকের আনাচেকানাচে প্রাণের স্পন্দন দিয়ে যায়।
যে বিশাল ভরষার কাঁধে মাথা রেখে বেমালুম তন্রাসুখের দূরপাল্লার যাত্রী হতে পারতাম
সেও তো আজ অতীতের হারিয়ে যাওয়া আকাশ।
কোলবালিশের পাশ ঘেঁষে জীবনটা যেন আজ হুইলচেয়ারের জাদুঘর।
হাড়ভাঙ্গা পুরোনো সেই বটগাছের কোনো এক সংগ্রামী ডাল বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছে জোগায়।
সযত্নে পোষা প্রিয় কুকুরটাও আদর আর খাবারের নামমাত্র বিনিময়ে
আমাকে জড়িয়ে জীবনের মায়া বাড়ায়।