জগলুল হায়দার এর একগুচ্ছ ছড়া
ধন্য ধন্য
দশ মুসল্লীর জামাত তুলে
বিশ ক্যামারা এসে,
ধন্য আমি ধন্য খোদা
জন্মেছি এই দেশে!
পারলে লাশের সাক্ষাতও নেয়
দাফন করার আগে-
‘আচ্ছা মরার অনুভূতি
কন তো কেমন লাগে?’
বদ্ধ কবর দেশের খবর
করবে বোধয় র্যালি
ঠাট্টা না এ হতেও পারে
সামনে বেসিক্যালি।
জামাত ছড়ায় করোনা আর
এরা ছড়ায় পথ্যি
জানতে হবে মানতে হবে
এটাই এখন সত্যি!
দশ মুসল্লীর নামাজ তুলে
বিশ ক্যামেরা গেলো,
ধন্য ধন্য বলে তাদের
নোবেল দিয়ে ফেলো!
করোনাকাল
এখন আমার একলা লাগে
একলা লাগে খুব
তোমার মাসুম মুখ ভাসে আর
স্মৃতিতে দেই ডুব।
আটকে গেছি করোনাতে
বিষন্ন খুব মন
এই ব্যবধান ঘুচায় কি আর
কেবল টেলিফোন।
ছেলে-মেয়ের জন্য পরান
ডুকরে উঠে রোজ
আমার এখন অপেক্ষাতে
ভরসা স্মৃতির ভোজ।
স্মৃতি আহা এত্ত স্মৃতি
দুুইটা মাসেই আজ
কোয়ারেন্টিনে খুলতে থাকি
পুণ্য স্মৃতির ভাঁজ।
আত্মজ আর আত্মজাকে
নিত্য করি ফিল
করোনাকাল ভাবলে পরে
যায় ভেঙে যায় দিল।
এই জীবনে হয়নি এমন
কাটছে না তাই দিন
এই বিরহে তাই বাজে আজ
ব্যথার ভায়োলিন।
স্মৃতির ভাঁজে তোমার প্রীতি
দিচ্ছে খালি টান
বাংলা এবং আমেরিকার
পথের ব্যবধান।
আল্লাহ যদি সহায় থাকেন
দেখা হবে ফের
তোমরা থাকো সালামতে
রইল দোয়া ঢের।
মেড ইন চায়না
চীনের কতো বুদ্ধি দ্যখেন
কেউ সেটা টের পায় না যে
উইঘুরেরা কিন্তু জনে
হ্যান চীনারা হায়না যে।
চীনের কতো কেরামতি
প্যালাস্টিকের চাল বানায়
আজ যদি দেয় প্লেনে চালান
আবার দিবে কাল বা নায়।
কেমিকেলের ডিম বানায়াও
ভড়কে দিলো চীনারা
পায় না তাদের বুদ্ধিবাজির
কেউ বুঝি কূল কিনারা।
বিশ্বজুড়ে বাজার দখল
করছে তাদের রপ্তানি
সস্তা জিনিস দারুণ ফিনিস
জানে রাজু রব তানি।
তানি জানে সানি জানে
জানে বুড়া বাচ্চারা
চায়না মালের গ্যারান্টি নাই
এইটা সবার সাচ্চা রা।
ভয় পেয়েছে সবাই যখন
ছোট্ট খোকা ডরায় না
মামায় বলে ভয় পাবি তুই
করোনাতে ধর আায়না।
মামা তুমি ভয় করো না
কয় ভাগিনা আয়নাজে
এই করোনা টিকবে না তো
এটাও মেড ইন চায়না যে!
মানুষ বাঁচাও
বিশ্ব এখন বিপন্ন তাই
সবাই এখন তব্দ
কার বিপদে কে যাবে আজ
করবে কে বা শব্দ।
মানবজাতি ধুঁকছে পুরা
করোনাতে পিষ্ট
গ্লোবের বুকে খুব বেশি দেশ
নেই তো অবশিষ্ট।
বিশ্ব এখন কাঁদছে গোটা
হোক না বা দেশ মস্ত
আশার রবি সব দিকে আজ
যাচ্ছে বুঝি অস্ত?
মালিক তোমার দয়া সবাই
হাত তুলে তাই চাচ্ছে
মুখ তলে চাও মানুষ যে আজ
যাচ্ছে ডুবে যাচ্ছে।
ঘরে থাকেন
অনেকখানি সাবধানে আর
একটু না হয় ডরে থাকেন
এইকটা দিন কষ্ট হলেও
ও মিয়াভাই ঘরে থাকেন।
গ্রামের মানুষ গ্রামে এবং
চরের মানুষ চরে থাকেন
এইকটা দিন কষ্ট হলেও
ও দাদাভাই ঘরে থাকেন।
যে পাড়াতে হয় করোনা
কোয়ারেন্টিনে গড়ে থাকেন
এইকটা দিন কষ্ট হলেও
ও বাবুসাব ঘরে থাকেন।
খুব দরকারে বাইরে গেলেও
সবাই আগে পরে থাকেন
এইকটা দিন কষ্ট হলেও
ও সোনাভাই ঘরে থাকেন।