চলো যোগ দিই মৃত্যুর মিছিলে
সাজ্জাদ মোহাম্মদ
অতসী, বাদ দাও…
সব বাদ দাও এবার!
চলো লকডাউম ভেঙে যোগ দিই মৃত্যুর মিছিলে।
মৃত্যুর পর পিশাচ হয়ে ভর করবো
অধিপতিদের ঘারে ; চাইবো অসম্পূর্ণ প্রেমের শুদ্ধ পরিনতি।
স্যোশাল ডিসট্যান্স সিস্টেম ভেঙে পড়েছে।
গা ঘেঁষাঘেঁষি করে কিলবিল করছে মানুষ,
মতির চায়ের দোকানে। নড়বড়ে বেঞ্জে পা তুলে টানছে সিগারেট; সরু ঠোঁটে ছুড়ছে বিষাক্ত ধোঁয়া।
মজিদের মাছ বাজার, সবজির দোকানগুলোয়
মানুষের উৎসব – অন্তরঙ্গ কোলাকুলি…
কলকারখানার দরজায় দরজায় অবহেলিত অভুক্ত শ্রমিকের ঢেউ,
ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় সম্মানের মহাসমুদ্রে অনাকাঙ্ক্ষিত জোয়ার; এখন বিভৎস ভাটার অপেক্ষায়।
মাটির বিছানায় ঘুমানো মানুষগুলো রাস্তায়
নেমেছে।
ওদের অধিকার চুরি হয়ে গেছে।
চুরি হয়ে গেছে ওদের চাল,
চুরি হয়ে গেছে ওদের ডাল,
চুরি হয়ে গেছে ওদের ভোজ্য তেল।
ওদের চাল চুরি করেছে শীতল পুকুর,
ওদের ডাল চুরি করেছে মাকড়শার জালে জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত ঘর,
ওদের ভোজ্য তেল চুরি করেছে তুল তুলে খাটের তলা।
ওরা ব্যানার হাতে মিছিল করছে খাবারের জন্য-
শ্লোগান দিচ্ছে -“মা হাসিনা খাবার দে, নইলে ক’ফোটা বিষ দে।”
মা হয়তো আবার ঘোষণা দেবেন…!
অতসী, বেলা শেষে সবাই ঘরে ফিরবে।
সমস্ত শরীরে অনেকগুলো মৃত্যু নিয়ে।
ওরা মৃত্যু নিয়ে আসবে প্রিয়তমা স্ত্রীর জন্য,
ওরা মৃত্যু নিয়ে আসবে প্রিয়তম স্বামীর জন্য,
ওরা মৃত্যু নিয়ে আসবে সদ্যজাত কোমল শিশুটির জন্য,
ওরা মৃত্যু নিয়ে আসবে বার্ধক্যপীড়িত মা বাপের জন্য,
ওরা মৃত্যু নিয়ে আসবে একটি বাড়ি, পাড়া, মহল্লা, গ্রাম, শহর…
ওরা একটি সভ্যতার জন্য মৃত্যু নিয়ে আসবে।
সব বাদ দাও অতসী।
হোম কোয়ারান্টাইন, লকডাউন – সব…
চলো যোগ দিই মৃত্যুর মিছিলে।
অতঃপর, মৃত্যুর পর মৃত্যুই এসে থামিয়ে দিক মৃতুর মিছিল।
কেউ এসে গড়ুক আবার একটি পাড়া, মহল্লা, গ্রাম, শহর, দেশ…
এবং একটি সবুজ পৃথিবী।