বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন

কমল কুজুর এর ৩টি কবিতা

কমল কুজুর এর ৩টি কবিতা

কমল কুজুর এর ৩টি কবিতা

১. প্রতীক্ষিত অভিশাপ
আমি হয়তো দৃষ্টিহীন হয়ে যাচ্ছি
ইদানীং! চোখ দিয়ে ফুল দেখি,
ফল দেখি, শস্য দানায় ভরা বিস্তৃত
ক্ষেত. নজরে পড়ে বেশ।
পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে চলা ঝর্ণাধারা,
তৃণভূমিতে চরে বেড়ানো ভেড়ার দলও
দেখতে পাই অনায়াসে।
কিন্তু চোখের কি এক সমস্যায় পড়েছি
বলতো! শুধু তোমার দেখা পাইনা!
কেন?
তোমায় দেখব বলে, কতবার
পাড়ি দিলাম লোহিত সাগর, দৌড়ে
পেরিয়েছি সাহারা,
ডেড সিতেও করেছি অবগাহন!
তবুও ভরেনি তোমার মন!
পেলাম না দেখা একবারও!
লুকোলে কোথায় বলতো?
বিশ্বাস ছিলো পর্বতের চূড়ায়
পাব দেখা! আকাশের কাছাকাছি, যেখানে
শুধু মৌমাছিরাই করবে নাচানাচি।
ছিলেনা সেখানেও।
হাজারটা নীলপদ্ম তাই শুকিয়ে
হলো কাঠ!
তাহলে কি দৃষ্টিহীনতাই রয়েছে লেখা
অদৃষ্টে আমার! অপেক্ষায় থাকতে
হবে অজুত বছর,
তারপরে ঘুচবে অভিশাপ!

২. তক্ষক চরিত
সূর্যোস্নানের দিন শেষ!
জমেছে যত ঋণ এতদিনে –
এবারে সব শোধ দেবার পালা!
তাই প্রতিটি দিনই এক নূতন
আবহ নিয়ে আসে যন্ত্রণার,
কুরে কুরে খায় হৃদয়ের
ফল্গুধারা যত,
হ্যাঁ! রাক্ষসের মতো।
দিন পেরুতেই রাতের আঁধার,
প্রতিটি রাত যেন দুঃস্বপ্নের রাত।
বুকের পাঁজরে নিদারুণ যন্ত্রণার
ঢেউ হেঁকে যায় অবিরাম;
হাড়ের প্রত্যেক বিন্দুতে,
প্রতিটি অস্থি মজ্জায় শুধুই কষ্টের
অবিরাম ধারা-
শিরায় শিরায় বেদনার রক্তকণিকা
ছুটে চলে মরণের পানে।
শরীর এপাশ-ওপাশ করাই সার!
আমার সাথে রাত্রি জাগা বুড়ো
তক্ষকটার হয়েছে কিছু লাভ।
দুজনে মিলে ঘড়ির ঘণ্টা শুনি
আর মেলাই-
১২,… ১,.. ২, …৩,…৪…
একসময় আবার সকাল হয়।
আবারো শুরু হয় যন্ত্রণার প্রহর!

৩. অসমাপ্ত
যদি হাওয়ার ভেতর ধূলিকনা
বাঁধে আমার কবর,
তবে ওপারের আকাশ
নিরন্তর বাতাস-
ছুঁয়ে দিয়ো বন্ধুবর!
আমি তো নেমেছি পথেই,
ছেড়েছি প্রাসাদ
বেধেঁছি ছন্নছাড়া, নড়বড়ে
খুঁটিহীন এক ঘর।
যদিও সময় থামেনি
আমাদের মতো,
মিছে অভিমানে ভুল কতশত;
কাঁদিয়েছে অবিরত-
নিরন্তর বেদনায়।
দুটি পথে পৃথিবী এক হয় কোন
এক মানুষীর তরে,
জোনাকির মতন খেলা করে
স্মৃতি দেবদারু ছায়ায়,
নিমের শাখায়।
সময়ের কোলে অসময়ে
ঘুমিযে পড়ে গিয়েছ চলে
কালের গহ্বরে;
পৃথিবীর দেয়াল ঘেঁষে আরেক পৃথিবী
চুয়েঁ পড়া বেদনার
আরেক সাগর।

শেয়ার করুন ..

Comments are closed.




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge