হতভাগী মা শুধু কষ্টেই করে যায়, ধরো তুমি যখন গর্ভে
তখন এই তোমার মা তোমাকে না দেখেই তোমার পরিচর্যায় ব্যস্ত
সবেমাত্র বয়সটা তোমার হয়তো মাস দুয়েক হবে
তোমার বাড়তি চাপে মায়ের ক্ষুধার্ত পেট ভক্ষনেও বাঁধা দেয়
অথচ দেখ তুমি যখন নার্ভে ঝুলে আছ মায়ের খাদ্যে ভাগ বসাচ্ছ
এই মা তখন বমি করে করে অনাহারে থেকে যায় দিন-রাত।
দিন যাচ্ছে ছোট্ট মায়ের পেট টায় বেশ আনন্দে বেড়ে উঠছ তুমি
মায়ের হিসাবের খাতায় তোমাকে নিয়ে গুণ ভাগ করে করে
ক্রমাগত পরিপক্ব নবজাতক হতে মাস দুয় তিনের মাঝেই
এই তোমারই কথা ভেবে মাকে খাওয়ানো হলো স্বাদের খাবার
অবশ্য মা যদি হতদরিদ্র হয় তবে তা বিয়োগের খাতায় সমাপ্ত
তবুও তুমি ঠিক আছ খাচ্ছ ঘুমাচ্ছ মায়ের নার্ভে ঝুলে
বাহারি খেলায় মেতে আছ একদম দু চোখ বন্ধ করে।
একটা নির্ভেজাল সময় শেষে কান্নার আওয়াজ তুলে তুমি এলে
তোমাকে নিয়ে আবারও স্বপ্ন শুরু হলো ভাবনা শুরু হলো
তোমার জন্যেই বাড়তি শ্রমে মায়ের খালি পেট অভুক্ত থেকে গেলো
অথচ তুমি আনন্দে মেতে সারাবেলা শেষে মাকেই কথা শোনালে
মাকেই একগাল বকুনি দিয়ে শান্তির নিদ্রায় শায়িত হলে।
ধীরে ধীরে তোমার শিশু থেকে কৈশোর তারপর তারুণ্যে পদচারণ
ছেলে হলে বউ আর মেয়ে হলে সুন্দর একটা বর
সেটাও সামান্য সময়ে তোমার কাছে দেওয়া হলো
পথটা সামান্য মোহেই সীমারেখা টেনে দেয়াল তুলে দিলে তুমি
একদম অপ্রাসঙ্গীক ভাবনার ধূম্রজালে নাস্তা নাবুদ করে।
সোজা মেরুদণ্ডের মানুষটা আজ যেন নুইয়ে পড়েছে
ক্লান্তির বাসা বেধেছে তার শরীরে, দুর্বল মন ভাবনায় কাতর
আহার বেড়েছে তবে অনাহারী থেকেই কাটছে দিন রাত
অতীত জড়িয়ে ধরে স্মৃতির রশিতে বাঁধা বাকরুদ্ধ মা
তবুও হাসছে, তবুও স্বপ্ন বুনছে মমতার তীক্ষ্ণ সুতোয়
শান্তিতে তুমি অথচ পাথর চাপা আর্তনাতে বোবা হয় সে।
কেন, কেন করছি এসব কি ভুল ছিল মমতার, মায়ার
যে তোমাকে কিংবা আমাকে নিজের সবটুকু বিলিয়ে
পরিচিত করালো একটা সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের কাছে
সেই তাকেই পর করার আবিস্কারে নিমজ্জিত হয়ে যাই
তাকেই বারংবার বিয়োজন করে ফেলি আরেকটু সাচ্ছন্দ্যে বাঁচার।