কথাবিশ্ব :৩
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন
চৈতন্য ফকির
কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের জন্ম ১৪জুন ১৯৪৭।রাজশাহী শহরে।পৈতৃক নিবাস বর্তমান লক্ষীপুর জেলার গাজীরপাড়া গ্রাম।পিতা এ কে মোশাররফ হোসেন রাজশাহী রেশমশিল্প কর্পোরেশন -এর পরুচালক ছিলেন।
সেলিনা হোসেনের লেখার জগৎ বাংলাদেশের মানুষ, তার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। বেশ কয়েকটি উপন্যাসে বাংলার লোক-পূরাণের উজ্জ্বল চরিত্রসমুহকে নতুনভাবে তুলে আনেন।তাঁর উপন্যাসে প্রতিফলিত হয় সমকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব -সংকটের সামগ্রিকতা।বাঙালির অহঙ্কার ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযোদ্ধের প্রসঙ্গ তাঁর লেখায় নতুন মাত্রা অর্জন করে।জীবনের গভীর উপলব্ধির প্রকাশকে তিনি শুধু কঢথাসাহিত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেন না, শানিত ও শক্তিশালী গদ্যের নির্মানে প্রবন্ধের আকারেও উপস্থাপন করেন।নির্ভীক তাঁর কন্ঠ-কথাসাহিত্য,প্রবন্ধ এবং ছোট গল্পও।
১৯৬৪ সালে রাজশাহীতে উচ্চামাধ্যমিক পড়ার সময় বিভাগীয় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নশিপ স্বর্গপদক পান।১৯৬৯ সালে প্রবন্ধের জন্য পান ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক।১৯৮০ সালে উপন্যাসের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার,১৯৮১সালে “মগ্নচৈতন্যে শিস”উপন্যাসের জন্য আলাওল পুরস্কার, ১৯৮২ সালে অগ্রনী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে “পোকামাকড়ের ঘরবসতি”উপন্যাসের জন্য কমর মশতরী পুরস্কার, ১৯৯৪ সালে “অনন্য ” ও “অলক্ত”পুরস্কার, ১৯৯৮ সালে জেবুড্রেসা ও মহবুবুল্লাহ ইন্সটিটিউট প্রদত্ত সাহিত্য পুরস্কার ও স্বর্ণ পদক সাহিত্য সাধনায় স্বীকৃতি।এছাড়া ১৯৯৪-৯৫ সালে তিনি ত্রয়ী উপন্যাস “গায়ত্রী সন্ধ্যা “রচনার জন্য ফোর্ড ফাউন্ডেশন ফেলোশিপ পেয়েছিলেন।২০০৬ সালে লাভ করেন দক্ষিণ এশিয়ার সাহিত্যে রামকৃষ্ণ জয়দয়াল হারমোনি অ্যাওয়ার্ডস, দিল্লি।
২০০৯ সালে পেয়েছেন একুশে পদক এবং ২০১০ সালে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা থেকে ডক্টর অব্ লিটারেচার (Honoris Causa)ডিগ্রি লাভ করেন।একই বছর গায়ত্রী সন্ধ্যা উপন্যাসের জন্য ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানিং এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রবর্তিত রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন।সাহিত্য অকাদেমী, দিল্লি থেকে ২০১১সালে প্রেমচাঁদ ফেলোশিপ লাভ করেন।
ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি, কন্নড়, রুশ,ফরাসি, ফিনিস,পানিেরিয়ান,উর্দু,মালায়লাম,আরবি প্রভৃতি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর গল্প,উপন্যাস।
পশ্চিম বঙ্গের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর “যাপিত জীবন”এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে “নিরুত্তর ঘন্টাধ্বনি”উপন্যাসব পাঠ্যসূচীভুক্ত।
২০১৭সালে স্রোত উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় কথাসাহিত্যি উৎসবে তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি। তাঁকে স্রোত সাহিত্য সম্মানে সম্মানিত করা হয়।
তিনি ২০১৮ ডি লিট উপাধিতে ভূষিত হোন।
স্রোত প্রকাশনা তাই সেলিনা হোসেন মহোদয়াকে শ্রদ্ধা জানাই।