বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন

আদিল ফকিরের ২টি কবিতা

আদিল ফকিরের ২টি কবিতা

আদিল ফকিরের ২টি কবিতা
১. হোম কোয়ারান্টাইন- ২০২০
জীবন ব্যস্ততার পর, হাজার বছর শুয়ে থাকা – আমি একজন মানুষ
চেয়ে থাকা- দু হাত! কোনো সময়- ছিলো, শুধুই হাততালি।
ছোট্ট-তে খেলতাম, পাঁচ আঙ্গুলে- পাঁচ আঙ্গুলের ক্রোসিং-
সেটি ছিলো হাতি ঘোড়ার খেলা!
বলতাম, হাতি নিবি, না ঘোড়া নিবি?
সামনের বাবুটা বলতো- ঘোড়া নিবো!
আমি বলতাম- তোর ঘোড়া চলে না!
আমার হাতি চলে!
এবার বাবুটা বলে- হাতি নিবো।
আমি তখন বলতাম-
তোর হাতি চলে না, আমার ঘোড়া চলে!
ইট’স পাওয়ার!
আজকে শুয়ে থাকা এই মানুষটার –
হাতিও চলে না, ঘোড়াও চলে না।
আজকে তোর কথা বাদ-ই দিলাম।
আমার দু হাতের আজ বিশ্বাস নেই!
সে-দিন ডান হাতটা, বাম হাতকে কত্-তো বকাবকি…
তুই একটা স্টুপিড-
এ কথা শুনে, বাম হাতের – হা হা হা হাসি-তে বললো-
ওরে ডান-হাত, রাজনীতি তুই বুঝবি না!
দুজনের কথোপকথনে- আমি চুপ!
হাজার বছরের শুয়ে থাকা- আমি সেই জানোয়ার-
আমার দুইটি হাত-
নিজে নিজেকে বিশ্বাস করে না- আর,
আমি সেই জানোয়ার!
২. আমার দুঃখের দুই কাল
আমার গ্রাম- আমার প্রভাতে- আবার পাখি ডাকে-
কোকিল ডাকে,ময়না ডাকে,ঘুঘু-ফিঙে ওরাও ডাকে।
বেশিদিনের নয়- এই গ্রামে একসময় ডাক্ ছিলোনা
সবুজ পাতার হাসি ছিলোনা, দীঘিতে চাঁদ ছিলোনা
মোনা-মনির সুখ ছিলোনা,পান-সুপারির বাঁটা ছিলোনা ।
আমার গ্রামে,আমার বেলাতে, ধান ঋতুতে আবার হাসে
দূর্বাঘাসে শিশির পড়ে, খোলাকাশে পাখি উড়ে
বিল পানিতে পদ্ম ফোঁটে,জোনাক পোকার আলো জ্বলে
আমার গ্রাম, আমার বেলাতে – আবার আসে- যায়
সকাল আসে, বিকেল যায়- পান সুপারি খায়।
এই দেয়ালেতে লেখা ছিলো-ছেলেবেলার কেচ্ছা ছিলো
ঐ মানুষটা, সেই মানুষটা- আবার আসে-যায়।
আমাকে এখন বলতে হয়- সেই মানুষটা নিরুপায়!
যে মানুষটার ঝুটি ছিলো- দুই বেণিতে ফিতে ছিলো-
মাথায় একটা ছাতি ছিলো, তাল গাছটা দাঁড়িয়ে ছিলো
পাকা পেঁপেতে পাখি ছিলো, আমার মানুষ কেঁদেছিলো!
আমার গ্রাম, আমার বেলাতে – আবার হেসেছিলো
দীঘির ধারের কলমি ফুল- সবই ফুটেছিলো
খেজুরগুড়ের ভাপা পিঠে- ধোঁয়া উড়েছিলো।
ঐ মানুষটা- সেই মানুষটা- আবার কাঁদায় ছিলো!
আমার মানুষ- আমার বেলাতে- আবার দুঃখ দিলো!

শেয়ার করুন ..

Comments are closed.




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge