বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪১ পূর্বাহ্ন

অনিরুদ্ধ সরকার প্রথম এর কবিতা আমি একদিন জাদুকর হবো

অনিরুদ্ধ সরকার প্রথম এর কবিতা আমি একদিন জাদুকর হবো

অনিরুদ্ধ সরকার প্রথম এর কবিতা আমি একদিন জাদুকর হবো

আমি একদিন জাদুকর হবো!
বাচ্চা থেকে বুড়ো,
কিশোরী থেকে বৃদ্ধা,
ভবঘুরে থেকে বেশ্যা
সবাই আমার জাদু দেখবে!
দেখতেই হবে!
আমার জাদু দেখে যদি বাহবা না পাই
মাইরি বলছি,আকাশ পানে থু থু দিবো!
প্রতিদিন নিজের থু থু-র বৃষ্টিতে গা ভেজাবো আমি!

কি জাদু দেখবে ওরা?
কার্ড,ফু দিয়ে ভ্যানিশ অথবা চোখে কালো কাপড় বেঁধে ডার্ট বোর্ডে লক্ষ্যভেদ?
এ জাদু এখনো বাজারে চলে?
না কক্ষনো না,
আমি কোনো সস্তা জাদুকর না।
আমি মজমা করতে আসিনি!
আমি এর চেয়েও বড় জাদু দেখাবো।
আমি একদিন জাদুকর হবো।

আমি দেখাবো,
ঠান্ডা মাথায় কোমল হৃদয়
খুন করে গ্যাছে যে খুনী!
স্পর্শ,গন্ধ,নাম,অনুভূতি এই চারটা শব্দ কে জবাই করে তার মাংস বাজারে চড়া দামে বিক্রি করেছে যে কসাই-
তার জাদু!
যে নিজেকে
প্রেমিকা বলে দাবি করতো একসময়।

আমি দেখাবো,
রৌরব নরকের অনলে জ্বলতে থাকা
এক সস্তা শব্দ!
বাজারে হেব্বি ডিমান্ড ভাই।
কি নাম যেন!ওহ হ্যা,বিশ্বাস।
এই শব্দের কারিগররা নিজেকে বন্ধু বলে পরিচয় দিতো একসময় আমার কাছে।
আমি ওই জাদুটাই দেখাবো তোমাদের।

আমি দেখাবো,
সতেরো বছরের এক কিশোর।
কি পোষালো না তো?
দুই একটা ডিটেকটিভ গল্পের বই পড়া,
স্কুলের বেঞ্চে পিনপয়েন্ট কলমে আঁকা প্রথম প্রেম,পরিক্ষায় ফেল!
এতো চেনা গল্প!নতুন কি?
আমিও জানি।
আমি আমার জাদুতে চেনা মুদ্রার অন্যপিঠ দেখাবো!আমি জাদুকর।
আমি যা খুশি দেখাবো।
তোমরা গোগ্রাসে তা গিলবে,গিলতেই হবে!
তালিতে তালিতে
হাত লাল করে ফেলবে।
তোমাদের অনর্গল চিৎকারে প্রকৃতি
বোবা হয়ে যাবে!
তোমরা দেখবে,
কিশোর মনে সদ্য ফোটা বৃষ্টিভেজা প্রেমের টগর ফুলের ধর্ষণ!
এ দৃশ্যে চোখ বন্ধ করতে পারবেনা কিন্তু!
আমি সেন্সর বোর্ড মানিনা!
আমি যা দেখাবো তাই দেখবে তোমরা!
ফিনকি দিয়ে সতীচ্ছেদের রক্ত পরবে তার মন বেয়ে বেয়ে!
চাপা গোঙানির আওয়াজ শুনে ধর্ষক প্রেমিকা এখানে অট্টহাসি হাসবে।
বিরহ এখানে ডাক্তার।সে ধর্ষিত প্রেমিক মনের রেপকিট দিয়ে টেস্ট করাবে!
রিপোর্ট আসবে!
ডাক্তার ওষুধ লিখবে।
তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দুইবেলা
অগ্নিশলাকা ফুঁকতে হবে।
এতে নাকি ব্যাথা কমে!

আমি দেখাবো,
মানুষের মতো দেখতে চার হাত পা ওয়ালা পশুদের।মনুষ্যত্ত্বের দীক্ষা এরা নেয়নি।
এরা ভারী মজার ক্যারেক্টার।
এরা না মানুষ না পশু।অথচ সবার মতো তারাও মানুষ বলে পরিচয় দেয়।
মুখে মানবতার বুলি আওড়ায়।
মনুষ্যত্ত্বের নামাবলি
গায়ে জড়িয়ে থাকে সর্বদা
অনেকটা ওইযে,ভুয়া ছাত্রের মতো।
সকাল বেলা বইয়ের পৃষ্ঠা কেটে,
টুকে পাস করতো যে ছাত্র।
এরা কতকটা তাদেরই দলে।
এক্ষেত্রে এদের পরিক্ষার নাম মনুষ্যত্ত্ব!
আদতে এরা ইবলিশের জারজ সন্তান!

আমি পরপর
এই চারটা জাদু তোমাদের দেখাবো।
পয়সা লাগবেনা!
তোমরা আমাকে বাহবা দেও।
আমাকে নিয়ে উল্লাস করো।
আমাকে সেলাম ঠুকো।
আমি তোমাদের জাদু দেখাবো।
আমি প্রার্থনা করা ভুলে গেছি,
প্রেম যখন আত্মাহুতি দিলো
ঠিক তখন থেকে।
আমার আর হাটু মুড়োতে ভাল্লাগেনা।
নত হওয়া,হাটু মুড়ে বসা শব্দটায় বড্ড অ্যালার্জি আমার!

শেয়ার করুন ..

Comments are closed.




© All rights reserved © পাতা প্রকাশ
Developed by : IT incharge